এস্যাট। ছবি- পিটিআই
ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে কক্ষপথে উপগ্রহ ধ্বংসের যে পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত, তার জেরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে নাসা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার হিসেবে, ভারতের পরীক্ষানিরীক্ষার পর আগামী ১০ দিনে মহাকাশ স্টেশনের বিপদ বেড়েছে অন্তত ৪৪ শতাংশ।
‘মিশন শক্তি’র ‘এস্যাট’ ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর ৩০০ কিলোমিটার উপরে থাকা উপগ্রহটিকে ধ্বংস করেছে। আর তার মাত্র ৭০ কিলোমিটার উপরের (৩৭০ কিলোমিটার) কক্ষপথেই রয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)।
নাসার প্রধান জিম ব্রিডেনস্টিন বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ ঘটনা। ‘এস্যাট’ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পৃথিবীর ৩০০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে ভারতীয় উপগ্রহের অন্তত ৪০০টি ধবংসাবশেষের সৃষ্টি হয়েছে। যাদের গতিবেগ ওই উপগ্রহটির মতোই। সেগুলি কক্ষপথে প্রদক্ষিণের সময় কোন দিকে ছুটবে বা কার গায়ে গিয়ে ধাক্কা মারবে আর তার ফলে কী হবে, তা কেউই জানেন না। ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই ধবংসাবশেষগুলির মধ্যে ২৪টিকে উপরের দিকে উঠতে দেখা গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন- এ-স্যাট মিসাইলে গোয়েন্দাগিরির জন্যই এসেছিল ‘কোবরা বল’! দাবি ওড়াল আমেরিকা
আরও পড়ুন- বলয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শনির আরও ৫টি চাঁদের হদিশ পেল নাসা
উপরের দিকে ওঠা বলতে বোঝায় পৃথিবীর উপরের কক্ষপথের দিকে এগোনো। নাসার কর্তার আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন যেহেতু রয়েছে পৃথিবীর ৩৭০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে, তাই ক্রমশ উপরের দিকে ওঠা ২৪টি ধবংসাবশেষের কোনও একটি বা দু’টি যদি ধাক্কা মারে মহাকাশ স্টেশনে, তা হলে স্টেশন তো বটেই, সেই স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের পক্ষেও তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।
ভারতের এস্যাট পরীক্ষার পর কক্ষপথে ছোট, বড় ও মাঝারি নানা রকমের ধবংসাবশেষের সৃষ্টি হয়েছে। নাসার কর্তা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে যেগুলি বেশ বড়, সেগুলিকেই আগে খোঁজা হচ্ছে। সেগুলির ব্যাস ১০ সেন্টিমিটারের চেয়েও বড়। এমন ৬০টি খণ্ডের হদিশ মিলেছে ইতিমধ্যেই। ব্রিডেনস্টিনের কথায়, ‘‘এদের মধ্যেই ২৪টিকে উপরের দিকে উঠতে দেখা গিয়েছে। এরাই ভয়াবহ ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারে যে কোনও মুহূর্তে। সেগুলি মহাকাশ স্টেশন ছাড়িয়ে আরও উপরের কক্ষপথের দিকে এগোতে থাকলেও খুব বিপদ। যা আগামী ১০ দিনে মহাকাশ স্টেশনে বিপদের আশঙ্কাকে অন্তত ৪৪ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে।’’
ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন কক্ষপথে ১০ সেন্টিমিটারের চেয়ে বেশি ব্যাসের ধবংসাবশেষ মিলেছে কম করে ২৩ হাজারটি। যার মধ্যে ৩ হাজার ধ্বংসাবশেষের সৃষ্টি হয়েছিল ২০০৭ সালে, চিনের অ্যান্টি-স্যাটেলাইট পরীক্ষানিরীক্ষার পর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy