Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Sri Lanka

Sri Lanka Crisis: বহুমুখী আর্থিক সঙ্কটেই নাভিশ্বাস

অসন্তোষ চরম জায়গায় পৌঁছনোয় শ্রীলঙ্কার অধিবাসীরা চাইছেন প্রেসিডেন্ট এখনই পদত্যাগ করুন। এটিও এক প্রকার নতুন চিন্তা ভাবনা।

শ্রীলঙ্কা বহুমুখী অর্থনৈতিক আক্রমণের শিকার।

শ্রীলঙ্কা বহুমুখী অর্থনৈতিক আক্রমণের শিকার। ফাইল চিত্র।

পিকে বালচন্দ্রন
কলম্বো শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৪
Share: Save:

গত কয়েক দিন ধরেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া অসন্তোষ ও তাঁর পদত্যাগের দাবিতে দেশবাসীর একের পর এক বিক্ষোভ মিছিলের সাক্ষী শ্রীলঙ্কা। এই চূড়ান্ত বিক্ষোভের প্রধান কারণ হিসাবে যা দর্শানো যায় তা হল, এই প্রথম ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে শ্রীলঙ্কার সমস্ত দেশবাসী অর্থনৈতিক ভাবে সমস্ত দিক থেকে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত। সেই বিক্ষোভই চুঁইয়ে পড়ছে গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবির মধ্যে।

এক কথায় বলা যায়, শ্রীলঙ্কা বহুমুখী অর্থনৈতিক আক্রমণের শিকার। খাদ্য, জ্বালানি ও বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কটের এই ত্র্যহস্পর্শ যোগ এ দেশে এই প্রথম। এর আগে, দীর্ঘ যুদ্ধ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব,বিদ্রোহ এমনকি কোনও কোনও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাবের সঙ্গেও যুঝেছে দেশটি। কিন্তু সেই সঙ্কটগুলি কোনওটাই একসঙ্গে এসে পড়েনি। এখন একাধিক সঙ্কটের আক্রমণ সামলাতে নাভিশ্বাস উঠছে দেশবাসীর। রাগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ক্ষমতায় থাকা সরকার, যার প্রতিভূ প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে।

অসন্তোষ চরম জায়গায় পৌঁছনোয় শ্রীলঙ্কার অধিবাসীরা চাইছেন প্রেসিডেন্ট এখনই পদত্যাগ করুন। এটিও এক প্রকার নতুন চিন্তা ভাবনা। সাধারণত, আগে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করা হত। সেই নির্বাচনে ভোট দানের মাধ্যমে অপছন্দের সরকারকে গদি থেকে হঠানো হত। কিন্তু গোতাবায়ার বিরুদ্ধে অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ দেখে মনে হচ্ছে দেশবাসী আর ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য অপেক্ষার ভরসা পাচ্ছেন না।

অবশ্য তা অস্বাভাবিক নয়। দেশের সামগ্রিক জ্বালানির ভান্ডার তলানিতে ঠেকায় দেশে বর্তমানে ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা হয়ে গিয়েছে নিত্যনৈমিত্তিক। পেশায় একটি সংস্থার ফাউন্ড্রি ম্যানেজার রঞ্জিত পেরেরা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের অভাব ভয়ঙ্কর ভাবে তাঁদের কর্মকুশলতা ব্যাহত করছে। কাগজের অভাবে এ বছর স্কুল-কলেজের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কটের কারণেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাগজ আমদানি। নিউজ় প্রিন্টের অভাবে বেশ কিছু সংবাদপত্র সপ্তাহে এক দিন করে কাগজ প্রকাশনা বন্ধ রাখছে।

এ দিকে, অন্য দেশ থেকে অত্যাবশ্যক সামগ্রী নিয়ে আসা জাহাজগুলিও আটকে রয়েছে কলম্বো বন্দরে। এর কারণ, সেই সামগ্রীর দাম দেওয়ার মতো ডলার শ্রীলঙ্কার কাছে আর অবশিষ্ট নেই। অভিযোগ উঠেছে, দেশের এই দুরবস্থাতেও ‘দেশের সম্মান’ রক্ষার জন্য যেটুকু বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় রয়েছে, প্রশাসন তা দিয়ে বৈদেশিক বাণিজ্যের পাওনা মেটাতে ব্যস্ত। যেখানে অর্থনীতিবিদরা বার বার বলেছেন, বাকি সমস্ত লেনদেন স্থগিত রেখে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানির জন্যই বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করুক শ্রীলঙ্কার সরকার।

জ্বালানির সঙ্গে সঙ্গে অভাব দেখা দিয়েছে রান্নার গ্যাসেরও। অতিমারিতে চাকরি হারানো মানুষদের মধ্যে বেশির ভাগ এখনও কর্মহীন। সরকারি সংস্থার ক্যান্টিনগুলো এখনও চালু হয়নি বলেই জানালেন সেখানকার প্রাক্তন কর্মী শিরোমি উইরাসেকারা। তিনি জানিয়েছেন, “রান্নার গ্যাসের দাম ছিল দুই হাজার ৫০০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, এখন তা বেড়ে হয়েছে চার হাজার ৩০০। গাছের ডাল না কেটে আনলে রান্না করাই সম্ভব নয়।” ৬৯ লক্ষ দেশবাসী ২০১৯ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় এনেছিলেন গোতাবায়াকে। তেমনই এক জন চারু হাসান। তিনি দাবি করেছেন, গোতাবায়া যদি ফের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রার্থী হন তবে খুব বেশি হলে নয়টি ভোট পাবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Sri Lanka Crisis Economic Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy