Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সরার নাম নেই, টিভি বিবৃতি দিলেন মুগাবে

অনেকেই ভেবেছিলেন, ওই টেলিভিশন বিবৃতিতে হয়তো পদত্যাগ ঘোষণা করবেন মুগাবে। কিন্তু কোথায় কী! অপ্রত্যাশিত ভাবে শেষ হয়ে যাওয়া ওই বিবৃতিতে পদত্যাগ নিয়ে মুগাবে একটিও শব্দ খরচ করেননি। বরং বলেছেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
হারারে শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

সরেছেন, না সরেননি! পেরিয়েছে সময়সীমা। কিন্তু জিম্বাবোয়ের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রর্বাট মুগাবেকে নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়। কেউ বলছে পদত্যাগে তিনি রাজি। কার্যক্ষেত্রে তাঁর মুখ থেকে একটি শব্দ শোনা যাচ্ছে না। মুগাবের দল জ্যানু-পিএফ পদত্যাগের জন্য মুগাবেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট তার পরেও যদি চুপ থাকেন, তা হলে কূটনীতিকরা মনে করছেন, পার্লামেন্টে তাঁকে ইমপিচ করাই শেষ রাস্তা।

মুগাবেকে নিয়ে কী হতে চলেছে, সে ব্যাপারে যাঁরা আলোচনা করছেন, তাঁদের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগে রাজি হয়েছেন। এ ব্যাপারে চিঠিও তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোনওটাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। উল্টে ৯৩ বছরের শাসক রবিবার রাতে এক লম্বা টিভি বিবৃতি দিয়ে চমকে দিয়েছেন সবাইকে। অনেকেই ভেবেছিলেন, ওই টেলিভিশন বিবৃতিতে হয়তো পদত্যাগ ঘোষণা করবেন মুগাবে। কিন্তু কোথায় কী! অপ্রত্যাশিত ভাবে শেষ হয়ে যাওয়া ওই বিবৃতিতে পদত্যাগ নিয়ে মুগাবে একটিও শব্দ খরচ করেননি। বরং বলেছেন, সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। মুগাবের কথায়, ‘‘সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার পরে ঠিক হয়েছে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে আমাদের দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারেন।’’ এর সঙ্গেই দেশের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে দ্রুত চাঙ্গা করতে হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। অথচ গোটা দেশ যে তাঁর বিরুদ্ধে সরব, সেটা নিয়ে মুগাবের কোনও মাথাব্যথা রয়েছে বলে মনে হয়নি।

পাশাপাশি সবাইকে অবাক করে মুগাবে বলেছেন, ডিসেম্বরে জ্যানু-পিএফ-এর কংগ্রেসেও যোগ দেবেন তিনি। অথচ সদ্য গত কালই দলের প্রধানের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে। টিভিতে দেখা গিয়েছে, বিবৃতি দিতে গিয়ে মাঝেমধ্যে কাগজ ওলটপালট করে কথা বলছিলেন মুগাবে। তাঁকে ঘিরে ছিলেন সশস্ত্র উর্দিধারীরা। দীর্ঘ বিবৃতি দেওয়ার জন্য শেষে ক্ষমাও চেয়েছেন প্রবীণ এই নেতা। তার পরে উঠে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে করমর্দনও করেছেন তিনি। কিন্তু তাঁকে সরানোর সব ক্ষেত্রই যখন প্রস্তু, তখন শেষ বেলায় মুগাবে এই বিবৃতি কেন দিলেন, সে ব্যাপারে অস্পষ্টতা রয়েছে।

একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, সেনার সব কাজ সাংবিধানিক— এমনটা বলিয়ে নিতে ফের টেলিভিশনের পর্দায় হাজির করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু মুগাবেকে দিয়ে পুরোটা হ্যাঁ-তে হ্যাঁ বলিয়ে নেওয়া যায়নি। তাই গোটা বিবৃতিটাই অদ্ভুত ঠেকেছে অনেকের কাছে। হারারের বহু বাসিন্দা এই বিবৃতি সম্প্রচারের পরে রাস্তায় নেমে দাঁড়ান। অনেকেই স্তম্ভিত। টিনা মাডজিমুরে যেমন বললেন, ‘‘অস্বস্তিকর একটা ব্যাপার হল। জেনারেলদের যেন উনিই বোকা বানালেন। এই লোকটা জিম্বাবোয়ে হাতে তুলে নিয়ে কবরে যেতে চায়!’’

মুগাবের নট নড়নচড়ন দেখে জ্যানু-পিএফ সোমবার বিকেলে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পার্লামেন্টে দলের যে সব সদস্য আছেন, মূলত তাঁরাই এই আলোচনায় থাকবেন। মুগাবেকে ইমপিচ করতে তাঁদের খুব একটা বেগ পেতে হবে না। কারণ পার্লামেন্টে তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE