জঙ্গি-বুলেট এড়াতে ঘরদোর ছেড়ে পাহাড়ের দিকে দৌড়েছিলেন তাঁরা। তবে শেষরক্ষা হয়নি। শিনজার পাহাড়ে পৌঁছনোর আগেই জঙ্গি-গুলি ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল শিশু ও মহিলা-সহ ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০০ মানুষকে। তার পর সংলগ্ন চত্বরেই গণকবর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। তবে রবিবার ইরাকি প্রশাসন জানতে পেরেছে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও বেশ ক’জন বেঁচে ছিলেন। তাঁদেরও রেয়াত করেনি জঙ্গিরা। জীবন্তই কবর দেওয়া হয়েছিল তাঁদের।
তার পর বেশ কিছু দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও শিনজার পাহাড়ে আটকে রয়েছেন ইয়াজিদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তাঁদের জন্য আকাশপথে ত্রাণ পাঠিয়েছে আমেরিকা। শনিবার গভীর রাত ও রবিবার সকালে ত্রাণ পাঠিয়েছে ব্রিটেনও। কিন্তু এ ভাবে ত্রাণ দিয়ে কত দিন? গত কাল থেকে তাই বিপদ মাথায় নিয়েই কুর্দ বাহিনী আটকদের উদ্ধারকাজ শুরু করেছে।
এ সবের মাঝেই রবিবার ইরাকের মানবাধিকার মন্ত্রী মহম্মদ শিয়া অল-সুদানি জানালেন, কী ভাবে ৫০০ ইয়াজিদিকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তাঁর মতে, সে দিন জঙ্গি-কবল থেকে যাঁরা পালিয়ে আসতে পেরেছিলেন তাঁরাই জানিয়েছেন ওই নৃশংস ঘটনার কথা। অল-সুদানি আরও জানান, এ মুহূর্তে প্রায় ৩০০ ইয়াজিদি মহিলা জঙ্গিদের দাস হিসেবে কাজ করছেন।
এর শেষ কবে কেউ জানে না। ওবামার ঘোষণার পর গত দু’দিনে জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে অন্তত চার দফা হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। কিন্তু মার্কিন-প্রশিক্ষিত ইরাকি সেনা ও কুর্দিস্তানের পেশমেরগা বাহিনী কিছুতেই এঁটে উঠতে পারছে না জঙ্গিদের সঙ্গে। আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলির প্রত্যেকেরই অবশ্য ধারণা, যত দিন না পর্যন্ত ইরাকের সর্বস্তরের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন সরকার ক্ষমতায় না আসছে, তত দিন যুদ্ধ করে লাভ হবে না। কিন্তু তদারকি প্রধানমন্ত্রী নুরি-অল-মালিকির কোনও হেলদোল নেই।
অথচ অনেকেরই দাবি, তিনি সরলে হয়তো বা মধ্যস্থতায় রাজি হতে পারে জঙ্গিরা। উপস্থিত অবশ্য সে ইঙ্গিত নেই। আশার কথা এটুকুই যে ইরাক পেরিয়ে যাঁরা সিরিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে ইরাকি সেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy