পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ছবি: রয়টার্স।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতপন্থী আন্দোলন কাঁপিয়ে দিল ইসলামাবাদকে। মুজফ্ফরাবাদ, গিলগিট, কোটলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে পথে নামল জনতা। পুলিশ দিয়ে আন্দোলন সামলাতে না পেরে সেনা নামাল নওয়াজ শরিফের প্রশাসন। কাশ্মীরের নিরস্ত্র জনতার উপর পাকিস্তানের নির্মম বলপ্রয়োগের তীব্র নিন্দা করেছে ভারত।
একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে দেখা গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মর্মান্তিক ছবি। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ। ক্যামেরার সামনেই পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান তুলে অনেক আন্দোলনকারী বলেছেন, তাঁদের উপর বলপ্রয়োগের কোনও অধিকার পাকিস্তানের নেই। অনেকে আবার বলেছেন, ভারতে সঙ্গে থাকার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভাল।
এই আন্দোলন স্বাভাবিকভাবেই ঘুম কেড়েছে নওয়াজ শরিফদের। তাই ব্যাপক বলপ্রয়োগ করে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করেছে ইসলামাবাদ। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় শহর মুজফ্ফরাবাদে তো বটেই, গিলগিট এবং কোটলি এলাকাতেও আছড়ে পড়েছে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ। সর্বত্র সেনা পাঠিয়ে দমন নীতি প্রয়োগ করতে চেয়েছে পাকিস্তান।
বুধবার ভারতীয় সংসদে পাকিস্তানের নিষ্ঠুরতার তীব্র নিন্দা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ তথা সংসদ বিষয় মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ লোকসভায় বলেন, “১৯৪৭ সাল থেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষের উপর পাকিস্তান অত্যাচার চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ দিন ধরেই সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। পাক সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির কারণেই এই অসন্তোষ। শুধু উন্নয়ন নয়, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো বুনিয়াদি পরিষেবার প্রশ্নেও কাশ্মীরকে বঞ্চিত রেখেছে পাকিস্তান।” কংগ্রেসও সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করে পাকিস্তানের নিন্দা করেছে। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি এ দিন বলেন, “বিষয়টি রাষ্ট্রপুঞ্জে তুলে ধরার জন্য এটাই সেরা সময়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মানুষের ক্রোধ রাস্তায় চলে এসেছে।”
আন্দোলনের যে চেহারা সামনে এসেছে, তা হঠাৎ জন্ম নেওয়া আন্দোলন নয়। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, দীর্ঘ দিন ধরেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অসন্তোষ রয়েছে। কিন্তু, ইসলামাবাদ তা জোর করে দমিয়ে রাখত। অসন্তোষ তীব্র হওয়ায় সেনা নামিয়েও পাকিস্তান অবস্থা আয়ত্তে আনতে পারছে না।
পাকিস্তানের তরফে অবশ্য যথারীতি অসন্তোষের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। পাক সরকারের দাবি, ভুয়ো ভিডিয়ো ফুটেজ সম্প্রচার করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy