Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্ট্যাচু অব লিবার্টি খোলা, এটাই রক্ষে! 

কোথায় যেন খবরটা পড়লাম। মার্কিন ভদ্রলোক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে কাজ করেন। ‘শাটডাউনের’ জন্য এ মাসে মাইনে হয়নি তাঁর। কিন্তু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বন্ধ করা তো অসম্ভব! ভদ্রলোক তাই কাজ করে চলেছেন বিনা মাইনেতে। 

শ্বেতশুভ্র: শাটডাউনে সরকার। হোয়াইট হাউসে চলছে বরফ পরিষ্কারের কাজ। এএফপি ( ইনসেটে লেখক)

শ্বেতশুভ্র: শাটডাউনে সরকার। হোয়াইট হাউসে চলছে বরফ পরিষ্কারের কাজ। এএফপি ( ইনসেটে লেখক)

গৌরব বসু
সানফ্রান্সিসকো বে (ক্যালিফর্নিয়া), শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

কোথায় যেন খবরটা পড়লাম। মার্কিন ভদ্রলোক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে কাজ করেন। ‘শাটডাউনের’ জন্য এ মাসে মাইনে হয়নি তাঁর। কিন্তু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বন্ধ করা তো অসম্ভব! ভদ্রলোক তাই কাজ করে চলেছেন বিনা মাইনেতে।

এমন অনেক সরকারি কর্মীই আপাতত বিনা মাইনেতে অফিস করছেন আমেরিকায়। কারও কারও বেতনের অঙ্কটা হয়তো তেমন বেশিও নয়। তবু কাজে আসছেন। হয়তো বাড়িতে আছে অসুস্থ সন্তান। মাইনেটা পেলে চিকিৎসায় সুবিধে হত নিঃসন্দেহে। বিমানবন্দরে যাঁরা ব্যাগপত্র চেক করেন, তাঁরাও অনেকে বিনা বেতনে কাজ করছেন। আবার কর্মীর অভাবে দু’একটা বিমানবন্দরে অসুবিধেও হচ্ছে বলে শুনলাম।

এক বন্ধু বড়দিনের ছুটিতে গিয়েছিল ক্যালিফর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে। গিয়ে দেখে, সব বন্ধ! গেটের টিকিটবাবু নেই, বন দফতরের রেঞ্জারও নেই। সবাই ছুটিতে। উল্টো ছবি স্ট্যাচু অব লিবার্টিতে। নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো নিজের প্রাদেশিক সরকারের কাঁধেই খরচের বোঝা নিয়ে ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ খোলা রেখেছেন। তাঁরা বলছেন, স্বাধীনতার স্মারকের এ ভাবে বন্ধ পড়ে থাকার কোনও মানে হয় না।

আসলে যত চাপ এখন সরকারি কর্মীদেরই। বেসরকারি ক্ষেত্র ঠিকই আছে। আমেরিকায় দীর্ঘদিন থাকলেও আমি এ দেশের নাগরিকত্ব নিইনি। কাজেই আমিও অভিবাসী। আমার বাবা দেশভাগের পরে চলে এসেছিলেন ভারতে। তাই হয়তো এখন চারপাশে যা দেখছি, তার সঙ্গে মেলাতে পারছি নিজেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার সঙ্গে বর্তমান ভারতের অদ্ভুত মিল। রাষ্ট্রনেতারা জাতীয়তাবাদী আবেগ উস্কে হাওয়া গরম করছেন। আমি অন্তত দু’জনকে চিনি, যাঁরা এইচ১বি ভিসার কড়াকড়িতে এ দেশে কাজের অধিকার হারিয়েছেন। মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তোলার কথা বরাবর বলে এসেছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় দফায় জিততে হলে তাঁকে সেই কথা রাখতে হবে। অথচ দেওয়াল তুললেই তো অনুপ্রবেশের সমস্যা মেটার নয়। ভিসার মেয়াদ পার করে যাঁরা আমেরিকায় রয়ে যান, তাঁদের কি দেওয়াল তুলে আটকানো যাবে?

মজার কথা, যুযুধান দুই পক্ষই সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার প্রশ্নে একমত। কিন্তু ট্রাম্প বলছেন, দেওয়াল তোলাটা একমাত্র পথ। তাতেই আপত্তি ডেমোক্র্যাটদের। তাঁরা ভাবছেন, এ নিয়ে এখনই রাশ আলগা করাটা ঠিক হবে না। শাটডাউনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই স্নায়ুযুদ্ধের উপরেই। কে আগে পলক ফেলে, দেখা যাক!

(অর্থনৈতিক প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী)

(অর্থনৈতিক প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী)

অন্য বিষয়গুলি:

USA Shutdown Donald Trump Mexico Wall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE