হিরোশিমায় এসে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমা চাইতে হবে, এমনটা মনে করেন না জাপানের অনেকেই। তবু জাপানবাসী চান, তিনি আসুন। বিশেষ করে বারাক ওবামা নিজেই যখন জানিয়েছেন, হিরোশিমায় আসার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি সম্ভবত আজ তারই পথ প্রশস্ত করতে চাইলেন হিরোশিমায় এসে। ফুলের তোড়ায় শ্রদ্ধা জানালেন তাঁদের উদ্দেশে, ১৯৪৫ সালে মার্কিন পরমাণু বোমায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছিলেন এখানে। জানালেন, দেখেশুনে হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে তাঁর। বললেন, ‘‘প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করছি পরমাণু বোমা কতটা ভয়ঙ্কর। পৃথিবীকে পরমাণু অস্ত্র-মুক্ত করে তোলার তাগিদটা আরও বেশি করে অনুভব করছি এখানে এসে।’’
ওবামাও এটাই বলে আসছেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকে। হোয়াইট হাউসে পা রাখার পর থেকে জাপানে এসেছেন তিন বার। কিন্তু হিরোশিমায় যাননি। ক্ষমতায় থাকা কালে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টইপা রাখেননি সেখানে। মে মাসে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে তিনি হিরোশিমায় আসবেন কি না, তা নিয়ে জাপানে এখন জোর জল্পনা। এ দেশে অনেকেই তাঁকে স্বাগত জানাতে তৈরি। সংবাদপত্রের সমীক্ষাতেও দেখা যাচ্ছে, জাপানের অনেকে মনে করেন, ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই ওবামার। অতীতটা অতীতই। এখন তার হিসেব কষা অনর্থক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক বার অন্তত আসুন হিরোশিমায়।
জাপানে অনেকে এ ভাবে ভাবলেও ভুলভ্রান্তি নিয়ে হিসেব কষার অভ্যেস রয়েছে ওবামার। সময়ের দাবি মেনে নতুন পথে চলার আগ্রহও দেখিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সেনা ফেরানো, গোয়ান্তানামো বে-র বন্দিশালা তুলে দেওয়া, কিউবায় গিয়ে দীর্ঘদিনের বন্ধ দরজা খোলার মতো কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিজের ভুল স্বীকারেও অকপট ওবামা। এ দিনই স্বীকার করেছেন, তাঁর আমলের সবচেয়ে খারাপ ভুল হল লিবিয়া-নীতি। ২০১১-তে মুয়াম্মর গদ্দাফিকে উৎখাত করার পরে কী করা উচিত— সে বিষয়ে আমেরিকার নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা ছিল না। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভাতেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘(লিবিয়ায়) শূন্যস্থান তৈরি হয়েছিল। তা পূরণে আমাদের জোটের অবশ্যই আরও সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল।’’
পরমাণু অস্ত্রের প্রশ্নে ভারত-পাকিস্তানকে এক সারিতে রেখে বিঁধতে ছাড়েন না ওবামা। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার ডাক দেওয়া সেই তিনি কি আসবেন হিরোশিমায়? আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে থাকতে? কেরির সফরে তারই বার্তা খুঁজছেন কূটনীতিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy