উত্তর গাজ়ার বিচ্ছিন্ন হয়েছিল আগেই। এ বার ইজ়রায়েলি ফৌজের গ্রাউন্ড অপারেশনে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল দক্ষিণ গাজ়াও! ধারাবাহিক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার মধ্য ও দক্ষিণ গাজ়া সংযোগরক্ষাকারী করিডরের দখল নিয়েছে ইজ়রায়েল সেনা।
তেল আভিভের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গত তিন দিনে গাজ়ায় প্রায় ৪৫০ জন প্যালেস্টাইনি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সংগঠন হামাসের নেতা তথা গাজ়ার প্রশাসনিক প্রধান এসাম আল-দালিস, অভ্যন্তরীণ বিষয়ক দফতরের প্রধান মাহমুদ আবু ওয়াতফা, নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান বাহজ়াত আবু সুলতান। এরই মধ্যে গ্রাউন্ড অপারেশন শুরু হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজ়া থেকে ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছিল হামাস। সেই হানাদারিতে মৃত্যু হয় প্রায় ১২০০ জনের। ২৫০ জনকে পণবন্দি করা হয়। এর পরেই গাজ়ায় হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েল। গত দেড় বছরের যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার প্যালেস্টাইনি নাগরিকের। ২০২৩-এর অক্টোবরের শেষ পর্বে ইজ়রায়েলি সেনার ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ চালিয়ে নেৎজ়ারিম করিডর দখল করায় কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল উত্তর গাজ়া। সামরিক পর্যবেক্ষদের একাংশের ধারণা, এ বার দক্ষিণ গাজ়াও বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ফৌজ।
গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙে রমজানের মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে গাজ়ায় একতরফা হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েল। এ ক্ষেত্রে অবশ্য ‘হামাসের সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা’ রোখার যুক্তি দিয়েছে তেল আভিভ। ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার জানিয়েছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হামলা বাকি পণবন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তার জবাব দিতেই এই হামলা।
আরও পড়ুন:
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার জানিয়েছেন, আমেরিকার সম্মতি নিয়েই নতুন করে গাজ়ার অভিযান শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। অন্য দিকে, হামাসের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে সেনা অভিযান বন্ধ করা না হলে বাকি পণবন্দিদের তারা খুন করবে। নেতানিয়াহু সরকারের দাবি, হামাসের কাছে এখনও ৫৯ জন পণবন্দি রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অন্তত ২৪ জন জীবিত বলে গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য জানাচ্ছে। এঁদের সকলকেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সময় অপহরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জে ইজ়রায়েলের দূত ড্যানি দানন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমরা আর আমাদের শত্রুদের প্রতি কোনও দয়া দেখাব না।’’