Advertisement
E-Paper

ট্রাম্প নীতি না-বদলালে সম্ভব নয় আলোচনায় বসা, পরমাণু চুক্তির চর্চার মাঝে পাল্টা বার্তা ইরানের

নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইরানকে দু’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আমেরিকা। এর মাঝেই রবিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যে নতুন করে জটিলতা তৈরি হল।

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেইনি (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেইনি (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ১৪:৪২
Share
Save

শুধু পরমাণু চুক্তি কেন, কোনও বিষয়েই আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না ইরান। এই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় বদলানো দরকার। রবিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কিছু জিনিস না-বদলালে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমকে উল্লেখ করে এ কথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইরানকে দু’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউস থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার পরেই আমেরিকাকে পাল্টা বার্তা দিল ইরান। রবিবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে আর কথাবার্তা এগোনোই সম্ভব নয়, যদি না বিশেষ কিছু জিনিস ওরা বদল করে। ইরান কোনও একগুঁয়েমি থেকে এটা করছে না। ইরানের এই অবস্থান ইতিহাস এবং অভিজ্ঞতার ফল। ওয়াশিংটনকে ওদের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’’ পরমাণু চুক্তি নিয়েও মন্তব্য করেছেন আরাকচি। বলেছেন, ‘‘আমার মতে, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিকে বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে আর ফেরানো যাবে না। আমাদের পারমাণবিক পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এখান থেকে আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারি না। কিন্তু আগের চুক্তিকে মডেল হিসাবে কাজে লাগানো যায়।’’

পরমাণু চুক্তি নিয়ে বরাবরই কঠোর এবং অনড় অবস্থান নিয়েছে ইরান। ট্রাম্পের কোনও হুমকিতে এ বিষয়ে তারা মাথা নত করবে না বলে চলতি মাসের গোড়ায় জানিয়েছিলেন খামেনেই। তবে ট্রাম্পের দফতর থেকে চিঠি দিয়ে ইরানকে বলা হয়েছে, দু’মাসের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে পদক্ষেপ না করলে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের পথে হাঁটবে আমেরিকা। চিঠি পেয়ে অবশ্য সুর কিছুটা নরম করেছিলেন খামেনেই। তাঁর বিদেশমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকার প্রেসিডেন্টের চিঠি খতিয়ে দেখছি। সম্ভাবনা এবং সঙ্কটের দিকগুলি বিবেচনা করছি।’’ রবিবার তিনি অন্য বার্তা দিলেন।

পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানকে চাপে রাখতে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েল বৈঠকে বসছে। চুক্তি না-মানলে ইরানের বিরুদ্ধে কী কী সামরিক পদক্ষেপ করা যেতে পারে, তা নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে। ইরানের বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে পড়ল।

২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল আমেরিকা-সহ ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি এবং চিন। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানান, এই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ২০১৮ সালে তাঁর নির্দেশে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা। বলা হয়, ‘‘আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি।’’ এর পর জো বাইডেনের জমানায় ইরানের সঙ্গে নতুন করে পরমাণু সমঝোতার পথ খুলেছিল আমেরিকা। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর আবার কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।

Nuclear deal US Iran

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}