বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার হামলায় এ ভাবেই ক্ষতি হয় বলে সংবাদ মাধ্যমের দাবি। ছবি: রয়টার্স
২৬ ফেব্রুয়ারির ভোর রাতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটে ভারতীয় বায়ু সেনার ‘প্রত্যাঘাত’ ঘিরে ফের উঠে আসছে পরস্পর বিরোধী দাবি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এবং সেনা কর্তারা যখন দাবি করছেন যে সুনির্দিষ্ট ভাবেই জইশের ফিদায়েঁ জঙ্গি তৈরির শিবিরে হানা দিয়েছিল ভারতীয় জেট, তখন একাধিক প্রথম সারির বিদেশি সংবাদসংস্থা এবং সংবাদপত্র দাবি করেছিল তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতির হদিশ মেলেনি ঘটনাস্থলে।
তারই মধ্যে একটি ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করে যে তাঁদের কাছে রয়েছে একটি অডিয়ো ক্লিপিং। ওই টেলিভিশন চ্যানেলের দাবি, সেই ক্লিপিংয়ে শোনা যাচ্ছে মৌলানা মাসুদ আজহারের ভাই আম্মারের কণ্ঠস্বর। আম্মার পেশোয়ারে এক সমাবেশে বলছে, ‘‘ভারতের বিমান কোনও গোয়েন্দা সংস্থার সদর দফতর বা তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে বোমা ফেলেনি। যে কেন্দ্রে পড়ুয়াদের জেহাদের প্রকৃত অর্থ শেখানো হয়, সেখানেই আক্রমণ করা হয়েছে।’’ ওই আক্রমণে আইএসআইয়ের প্রাক্তন কর্নেল সেলিম কারি এবং জইশের প্রশিক্ষক মইন নিহত হয়েছে বলেও ‘সূত্র’ উদ্ধৃত করে দাবি করেছে চ্যানেলটি। ওই অডিয়ো ক্লিপে আম্মার উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে ইমরান খানের সমালোচনাও করেছে বলে দাবি চ্যানেলটির।
অন্যদিকে একই রকম একটি অডিয়ো ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় গোয়েন্দা এবং সংবাদ মাধ্যমের একাংশের কাছে এসে পৌঁছেছে। সেই অডিয়ো ক্লিপিং থেকে বোঝা যাচ্ছে কোনও একটি জমায়েতে জইশ নেতৃত্ব বক্তব্য রাখছেন। বক্তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব না হলেও, ওই বক্তার কথাতেই স্পষ্ট ওই জমায়েত বা ‘মজলিশ’-এ প্রধান অতিথি মাসুদ আজহারের ভাই মৌলানা অসগর রউফ। অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, বক্তা জইশ নেতা স্বীকার করছেন ভারতীয় বিমান বালাকোটে তাঁদের ‘মারকাজ’ বা শিক্ষাকেন্দ্রে আঘাত হেনেছে। কিন্তু তাঁর দাবি সেই আঘাতে তাঁদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কয়েকটি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ওই অডিয়ো ক্লিপে বক্তার দাবি, ওই কেন্দ্রে প্রত্যেকেই জিহাদের জন্য মৃত্যু বরণ করে নিতে প্রস্তুত।
জইশের ওই জমায়েতে জইশের সঙ্গে সংযুক্ত পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতা মৌলানা মুজাহিদ আব্বাস, মৌলানা কুতবদ্দিন-সহ এক ঝাঁক ধর্মীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন বলে মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দাদের একাংশ। ওই জমায়েতটি পেশোয়ারের একটি মসজিদে হয়েছে বলেও মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে পরস্পর বিরোধী তথ্যের মধ্যেও জইশ যে স্বীকার করেছে তাদের উপর হামলা হয়েছে তা উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তবে তাঁদের আশঙ্কা ভারতের ‘প্রত্যাঘাত’-কে হাতিয়ার করে জইশ ‘জিহাদ’ সামনে রেখে নতুন করে সদস্য সংগ্রহে নামবে। গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া এবং আফগানিস্থান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জইশের মত সংগঠনগুলি প্রকাশ্যেই সংগঠন চালায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy