হাতে আর মাত্র এক দিন। কিন্তু, চিনের ‘অশ্বমেধ যজ্ঞে’ সম্ভবত যাচ্ছে না ভারত। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এমনটাই খবর। আগামিকাল, রবিবার, বেজিঙে শুরু হচ্ছে দু’দিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রুট’ (ওবোর) সম্মেলন।
৬৭টি দেশকে সঙ্গে নিয়ে চিনের এই উদ্যোগ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপকে একটি বাণিজ্যপথে জুড়ে ফেলার জন্য। এখন পর্যন্ত যা খবর, তাতে ৬৫টি দেশ এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। যদিও এর মধ্যে ৪৪টি দেশ তাদের রাষ্ট্রপ্রধানকে বেজিঙ পাঠাচ্ছে না। আসব না আসব না করেও, শেষ মুহূর্তে ওবোর সামিটে অংশ নিতে আসছে আমন্ত্রিত আমেরিকা। আমন্ত্রিত হয়ে আসছে ইতালি-ও। ভারত ওবোর-এর অংশ হলেও, বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নয়াদিল্লি ওই সামিটে অংশ না নেওয়ার দিকেই যাচ্ছে।
কিন্তু, এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?
আরও পড়ুন: অন্য দেশের উন্নয়নে ৫০ লক্ষ কোটি ডলার দিতে চায় চিন
ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, ইদানীং যে ভাবে উপমহাদেশের উন্নয়নে সহায়তার নামে বন্দর, রেল, সড়ক তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে চিন, তা ভারতের পক্ষে বেশ অস্বস্তিদায়ক। কারণ চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অংশ হিসাবে ওই উদ্যোগের বেশ কাজ পাক অধিকৃত কাশ্মীরেও করতে চায় তারা। ভারত এ নিয়ে তার কড়া আপত্তি জানিয়েছে। স্পষ্ট ভাবে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ওই অংশটি কোনও ভাবেই পাকিস্তানের নয়, ভারতের। চিনের এই ভূমিকা যে ভারতের না-পসন্দ, তা চোখে আঙুল দিয়ে বোঝাতেই ভারত এই সামিটে অংশ নেবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও এ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের কোনও আধিকারিক মন্তব্য করতে চাননি।
রাশিয়া, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, কাজাখস্তান, শ্রীলঙ্কা তো বটেই ভারতের অস্বস্তি বাড়িয়ে নেপালও যোগ দিচ্ছে সম্মেলনে। তবে চিনের পক্ষে সব থেকে স্বস্তির বিষয়, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রুট’ সামিটে আমেরিকা বিশেষ এক প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে জানিয়েছে। এর আগে তারা জানিয়েছিল, এই ধরনের কোনও সামিটে তারা অংশ নেবে না। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে গোটা ব্যাপারটায় ইউ-টার্ন নিয়েছে তারা। হোটাইট হাউস এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে চিনে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, গোটা বিশ্বে চিন তার নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে চাইছে। সেই উদ্দেশ্যে এশিয়া মহাদেশ তো বটেই আফ্রিকারও বিভিন্ন দেশে পরিকাঠামো-সহ নানা ক্ষেত্রে উন্নয়নে উপুড়হস্ত প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। এ বছরের শুরুতে পাঁচ ইউরোপীয় দেশ— ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সুইত্জারল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ইতালি চিনা প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে, এ বার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে অন্য দেশগুলির উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৫ লক্ষ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে চিন। চিনা প্রশাসনিক সূত্রে এমনটাই খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy