Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Israel-Palestine Conflict

ফের যুদ্ধ শুরু গাজ়া ভূখণ্ডে, শতাধিক নিহত

কাতার, মিশর, আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপের প্রায় সব দেশ, রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, তারা চায় যুদ্ধ-বিরতি আরও দীর্ঘায়িত হোক। কিন্তু শেষমেশ তা আর হল না।

An image of Israel-Palestine Conflict

ইজ়রায়েলি হানায় ঘরছাড়া। খান ইউনিসের এক হাসপাতালের বাইরে মিলছে আশ্রয়। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৮
Share: Save:

সাত দিনের যুদ্ধ-বিরতির পরে আজ ফের গাজ়া স্ট্রিপে হামলা শুরু করল ইজ়রায়েল। শোনা যাচ্ছে, এলাকা ফাঁকা করে দেওয়ার জন্য লিফলেট ছড়ানো শুরু করেছে ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সতর্ক করা হচ্ছে, যুদ্ধের ভয়াবহতা এ বার আরও বাড়বে। তার আঁচ অবশ্য আজই মিলেছে। বিকেলের মধ্যেই অন্তত ১০০ জনের মৃত্যুর হয়েছে। মন্তাসের আল-সাওয়াফ নামে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এই নিয়ে গাজ়ার যুদ্ধে ৭২ জন সংবাদকর্মীর মৃত্যু হল।

কাতার, মিশর, আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপের প্রায় সব দেশ, রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, তারা চায় যুদ্ধ-বিরতি আরও দীর্ঘায়িত হোক। কিন্তু শেষমেশ তা আর হল না। আইডিএফ এর দায় হামাসের কাঁধে চাপিয়েছে। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাস চুক্তি ভেঙে রকেট হামলা চালিয়েছে। আজ সকাল ৭টার মধ্যে বন্দি-মুক্তির তালিকাও দিতে পারেনি। তা ছাড়া, গত কাল পশ্চিম জেরুসালেমে হামাসের দুই বন্দুকবাজের হামলায় তিন ইজ়রায়েলি প্রাণ হারান। ১৬ জন জখম হন।

গত ৭ দিনের যুদ্ধবিরতিতে হামাস ১০৫ জন সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিয়েছে। এর মধ্যে ৮১ জন ইজ়রায়েলি। ২৩ জন তাইল্যান্ডের নাগরিক। ১ জন ফিলিপিনো। পরিবর্তে ইজ়রায়েলি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২১০ জন প্যালেস্টাইনি। সকলেই মহিলা, না হলে কিশোর-কিশোরী। বিরতি-পর্বে গাজ়ায় ত্রাণ ঢুকতে দিয়েছিল ইজ়রায়েল। যদিও অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণের পরিমাণ খুব কম। আজ থেকে তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাফা সীমান্ত থেকে প্যালেস্টাইনি প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ইজ়রায়েল বোমা ফেলা শুরু করতেই মিশর থেকে ত্রাণ, জ্বালানি, রান্নার গ্যাস নিয়ে ট্রাক ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র আশরাফ আল-কোদরা বলেন, ‘‘যুদ্ধবিরতি চলাকালীন গাজ়ায় যে পরিমাণ চিকিৎসা-সামগ্রী ত্রাণ হিসেবে ঢুকেছে, তা শুধু এক দিনের কাজ চলার মতো। পরিস্থিতি ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। গাজ়ায় আর চিকিৎসা পরিষেবা বলে কিছু বেঁচে নেই!’’ তিনি আর্জি জানিয়েছেন, যেন ওষুধ, চিকিৎসার সরঞ্জামটুকু ঢুকতে দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে তিনটি মাত্র হাসপাতাল কাজ করছে গাজ়ায়। সে নিয়ে আক্ষেপ করে আশরাফ যখন বিবৃতি দিচ্ছেন, সে সময়ে যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৭০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

কূটনীতিকেরা জানাচ্ছেন, আজ রাতটা গুরুত্বপূর্ণ। ফের আলোচনায় বসতে চলেছেন মধ্যস্থতাকারীরা। কোনও সদর্থক পথ মিলতে পারে। তাঁদের বক্তব্য, গাজ়া এমনিতেই ধ্বংসস্তূপ। তার মধ্যে দ্বিতীয় দিনও যদি যুদ্ধ চলে, তার পরিণতি কল্পনাও করা যাচ্ছে না।

গাজ়ায় এখনও হামাসের হাতে বন্দি রয়েছেন ১৩৭ জন। ইজ়রায়েল সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ১১৫ জন পুরুষ, ২০ জন মহিলা, দু’টি শিশু। এর মধ্যে ১২৬ জন ইজ়রায়েলি, বাকি ১১ জন বিদেশি। তাইল্যান্ডেরই ৮ জন রয়েছেন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘হামাস চুক্তি মানেনি। মহিলা বন্দিদের সকলকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছিল। ওরা তা করেনি। রকেট হামলাও চালিয়েছে। যুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার মুহূর্তে জোর দিয়ে জানাচ্ছি, আমরা লক্ষ্যপূরণ করবই। বন্দিদের মুক্ত করা হবে, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা হবে এবং গাজ়া স্ট্রিপ যাতে আর কোনও ভাবেই ইজ়রায়েলের মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE