বাশার আল আসাদ। —ফাইল চিত্র।
কেউ সাবধানি, কেউ বা উল্লসিত। সিরিয়ার বাশার আল আসাদের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে এমনই মিশ্র সাড়া পাওয়া গেল। রাশিয়া এবং ইরান আসাদের ‘মিত্র’ বলেই পরিচিত। রুশ সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, ক্ষমতাচ্যুত এবং দেশচ্যুত হয়ে পরিবারকে নিয়ে রাশিয়াতেই আশ্রয় নিয়েছেন সিরিয়াবাসীর কাছে সংস্কারক থেকে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা বাশার। অন্য দিকে, সরকারি ভাবে স্বীকার না-করলেও বরাবরই সিরিয়ায় বাশার-শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থন জুগিয়েছে তুরস্ক। এই জটিল কূটনৈতিক অঙ্কের নিরিখেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে আমেরিকা থেকে চিন, রাশিয়া থেকে ইজ়রায়েল, বিভিন্ন দেশ।
আমেরিকা: সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আসাদকেই দায়ী করেছে আমেরিকা। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “বাশারকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা উচিত।” একই সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ওয়াশিংটনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ক্ষমতা হস্তান্তর, সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীনতার জন্য সিরিয়ার সব গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবে।
রাশিয়া: বাশার-পতনে নিজেদের হতাশা লুকোয়নি ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। শনিবারই রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সতর্কতার সুরে জানান, সিরিয়া যেন সন্ত্রাসবাদীদের হাতে না যায়। মনে করা হচ্ছে সিরিয়ার বিদ্রোহী দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন তিনি। আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে মস্কোয়।
চিন: বেজিং জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। সিরিয়ায় ফের স্থিতাবস্থা ফিরে আসার বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেছে শি জিনপিং প্রশাসন।
ইরান: অভ্যুত্থানে বন্ধু বাশারের পরাজয়ের পরেও ইরান জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার সঙ্গে ‘বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক’ বজায় রাখবে।
তুরস্ক: বিদ্রোহীদের সমর্থন জোগানো তুরস্ক জানিয়েছে, তারা সে দেশের ক্ষত নিরাময় এবং ঐক্য, সংহতি এবং নিরাপত্তা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ফ্রান্স: ফ্রান্স বাশারের শাসনকে ‘বর্বরোচিত’ বলে দাবি করেছে। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আমি সিরিয়ার মানুষদের সাহস, ধৈর্যকে কুর্নিশ জানাই। আমি তাঁদের জন্য শান্তি, স্বাধীনতা এবং ঐক্য কামনা করছি।
ব্রিটেন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার জানান, তাঁরা আঞ্চলিক সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলছেন। তাঁর মতে বাশারের পতন ‘বড় সম্ভাবনা’ তৈরি করেছে। তবে সে দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে সতর্ক করেছেন স্টার্মার।
ইজ়রায়েল: আসাদ-পতনে ইরান এবং তেহরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লার বিরুদ্ধে তাদের জয় দেখছে ইজ়রায়েল।
তালিবান: আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের আশা, সিরিয়ায় একটি ‘স্বাধীন এবং কর্মমুখর ইসলামিক সরকার’ তৈরি হবে। সেই সরকার ‘বাইরের প্রভাব থেকেও মুক্ত’ হবে বলে আশা তালিবানের।
রাষ্ট্রপুঞ্জ: সিরিয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের দূতের মত, ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের পর একটি ‘জলবিভাজিকা মুহূর্ত’ তৈরি হয়েছে সে দেশে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের মতে, স্থায়ী এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ পেয়েছে সিরিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy