Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
village

সাড়ে তিনশো বছর আগে লকডাউন! বিশ্বকে প্রথম কোয়রান্টিনের অর্থ শিখিয়েছিল এই গ্রাম

সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হলে কী ভাবে নিজেকে বন্দি রেখে কিংবা অন্যদের থেকে দূরত্ব গড়ে তুলে সুস্থ থাকা যায় এবং অন্যদের সুস্থ রাখা যায় তা শিখিয়েছে এই অতিমারি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:২২
Share: Save:
০১ ১৭
করোনাভাইরাসের জেরে সারা বিশ্ব ঘরবন্দি থাকার অর্থ বুঝেছে। এমন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হলে কী ভাবে নিজেকে বন্দি রেখে কিংবা অন্যদের থেকে দূরত্ব গড়ে তুলে সুস্থ থাকা যায় এবং অন্যদের সুস্থ রাখা যায় তা শিখিয়েছে এই অতিমারি।

করোনাভাইরাসের জেরে সারা বিশ্ব ঘরবন্দি থাকার অর্থ বুঝেছে। এমন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হলে কী ভাবে নিজেকে বন্দি রেখে কিংবা অন্যদের থেকে দূরত্ব গড়ে তুলে সুস্থ থাকা যায় এবং অন্যদের সুস্থ রাখা যায় তা শিখিয়েছে এই অতিমারি।

০২ ১৭
কিন্তু জানেন কি আজ থেকে সাড়ে তিনশো বছর আগে ইংল্যান্ডের একটি ছোট্ট গ্রাম সারা বিশ্বের কাছে লকডাউনের অর্থ শিখিয়ে গিয়েছিল!

কিন্তু জানেন কি আজ থেকে সাড়ে তিনশো বছর আগে ইংল্যান্ডের একটি ছোট্ট গ্রাম সারা বিশ্বের কাছে লকডাউনের অর্থ শিখিয়ে গিয়েছিল!

০৩ ১৭
মহামারি প্লেগের সংক্রমণ রুখতে নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেছিল গোটা গ্রাম। বাইরের জগতের সঙ্গে রাতারাতিই যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল তারা!

মহামারি প্লেগের সংক্রমণ রুখতে নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেছিল গোটা গ্রাম। বাইরের জগতের সঙ্গে রাতারাতিই যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল তারা!

০৪ ১৭
ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারের গ্রাম ইয়াম। তবে ৩৫৬ বছর আগের ওই ঘটনার পর থেকে এই গ্রাম বিশ্বের দরবারে হয়ে উঠেছে ‘প্লেগ গ্রাম’।

ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারের গ্রাম ইয়াম। তবে ৩৫৬ বছর আগের ওই ঘটনার পর থেকে এই গ্রাম বিশ্বের দরবারে হয়ে উঠেছে ‘প্লেগ গ্রাম’।

০৫ ১৭
মহামারিকে হারিয়ে এই গ্রাম এখন পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু ৩৫৬ বছর আগের সে সময়ের কাহিনি যেন আজও তুলে ধরে গ্রামটি। তাই পর্যটকদেরও বিশেষ আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে এই গ্রাম।

মহামারিকে হারিয়ে এই গ্রাম এখন পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু ৩৫৬ বছর আগের সে সময়ের কাহিনি যেন আজও তুলে ধরে গ্রামটি। তাই পর্যটকদেরও বিশেষ আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে এই গ্রাম।

০৬ ১৭
১৬৬৫ সালে মহামারির কবলে পড়েছিল ইয়াম। পিক জেলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই রয়েছে গ্রামটি। অরণ্যের মধ্যে গ্রাম হওয়ায় এর জনসংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কমই। ২০১১ আদমসুমারি অনুযায়ী সেখানে জনসংখ্যা মাত্র ৯৬৯ জন।

১৬৬৫ সালে মহামারির কবলে পড়েছিল ইয়াম। পিক জেলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই রয়েছে গ্রামটি। অরণ্যের মধ্যে গ্রাম হওয়ায় এর জনসংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কমই। ২০১১ আদমসুমারি অনুযায়ী সেখানে জনসংখ্যা মাত্র ৯৬৯ জন।

০৭ ১৭
সে সময় গ্রামের এক দর্জি জর্জ ভিকারস লন্ডন থেকে অনেক কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। সেই কাপড়ের সঙ্গেই গ্রামে ঢুকে পড়েছিল প্লেগের জীবাণু।

সে সময় গ্রামের এক দর্জি জর্জ ভিকারস লন্ডন থেকে অনেক কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। সেই কাপড়ের সঙ্গেই গ্রামে ঢুকে পড়েছিল প্লেগের জীবাণু।

০৮ ১৭
এক সপ্তাহের মধ্যেই মৃত্যু মিছিল শুরু হয় গ্রামে। প্রথম মারা যান ওই দর্জিই। তার পর তাঁর পরিবারের অনেকে এবং গ্রামে তাঁর গ্রাহকদের অনেকেই।

এক সপ্তাহের মধ্যেই মৃত্যু মিছিল শুরু হয় গ্রামে। প্রথম মারা যান ওই দর্জিই। তার পর তাঁর পরিবারের অনেকে এবং গ্রামে তাঁর গ্রাহকদের অনেকেই।

০৯ ১৭
গ্রামপ্রধানের বুঝতে অসুবিধা হয়নি বিষয়টি। প্লেগ যে বিশ্বব্যাপী ভয়ানক রূপ ধারণ করছে সে খবর তাঁর জানা ছিল। তাই তিনি অযথা দেরি করেননি। রাতারাতি কড়া লকডাউন ঘোষণা করেন।

গ্রামপ্রধানের বুঝতে অসুবিধা হয়নি বিষয়টি। প্লেগ যে বিশ্বব্যাপী ভয়ানক রূপ ধারণ করছে সে খবর তাঁর জানা ছিল। তাই তিনি অযথা দেরি করেননি। রাতারাতি কড়া লকডাউন ঘোষণা করেন।

১০ ১৭
গোটা ইয়াম গ্রাম নিজেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলেছিল। গ্রামের কোনও লোকজনই নিজের বাড়ি থেকে বিশেষ বার হতেন না। পাশের গ্রামেগুলির সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল ইয়াম।

গোটা ইয়াম গ্রাম নিজেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলেছিল। গ্রামের কোনও লোকজনই নিজের বাড়ি থেকে বিশেষ বার হতেন না। পাশের গ্রামেগুলির সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন করে ফেলেছিল ইয়াম।

১১ ১৭
ইয়াম থেকে যেমন কেউই অন্য গ্রামে যেতেন না তেমনই আশেপাশের গ্রাম থেকে কাউকেই ইয়ামে ঢুকতেও দেওয়া হত না। গ্রামের বাসিন্দারা অবশ্য প্রধানের এই সিদ্ধান্ত সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। অক্ষরে অক্ষরে প্রধানের নির্দেশ পালন করতেন তাঁরা।

ইয়াম থেকে যেমন কেউই অন্য গ্রামে যেতেন না তেমনই আশেপাশের গ্রাম থেকে কাউকেই ইয়ামে ঢুকতেও দেওয়া হত না। গ্রামের বাসিন্দারা অবশ্য প্রধানের এই সিদ্ধান্ত সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। অক্ষরে অক্ষরে প্রধানের নির্দেশ পালন করতেন তাঁরা।

১২ ১৭
২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই গ্রামে। পরিস্থিতি এতটাই করুণ ছিল যে পরিবারের লোকদের জন্য নিজেকেই কবর খুঁড়তে হত। সাহায্যের জন্য কাউকেই পাওয়া যেত না। তেমনই এক করুণ কাহিনির সাক্ষী রিলে কবর।

২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই গ্রামে। পরিস্থিতি এতটাই করুণ ছিল যে পরিবারের লোকদের জন্য নিজেকেই কবর খুঁড়তে হত। সাহায্যের জন্য কাউকেই পাওয়া যেত না। তেমনই এক করুণ কাহিনির সাক্ষী রিলে কবর।

১৩ ১৭
গ্রামের হ্যানকক পরিবারের কবরখানা এটি। নামমাত্র যে কয়েক জন এই মহামারি থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তাঁদেরই এক জন হলেন এলিজাবেথ হ্যানকক। কিন্তু তাঁর পরিবারের কেউই বাঁচেননি। প্রথমে স্বামী এবং পরে তাঁর ৬ সন্তানকে নিজে হাতে ওইখানেই কবর দিয়েছিলেন তিনি।

গ্রামের হ্যানকক পরিবারের কবরখানা এটি। নামমাত্র যে কয়েক জন এই মহামারি থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তাঁদেরই এক জন হলেন এলিজাবেথ হ্যানকক। কিন্তু তাঁর পরিবারের কেউই বাঁচেননি। প্রথমে স্বামী এবং পরে তাঁর ৬ সন্তানকে নিজে হাতে ওইখানেই কবর দিয়েছিলেন তিনি।

১৪ ১৭
পর্যটকদের আরও একটি দর্শনীয় স্থান হল মমপেসনস দেওয়াল। গ্রামের প্রধান ছিলেন উইলিয়াম মমপেসনস। তাঁর নামেই গড়ে উঠেছিল এই দেওয়াল। অর্থের বিনিময়ে এই পাঁচিলের উপরে গ্রামবাসীদের জন্য খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি রেখে যেতেন আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা।

পর্যটকদের আরও একটি দর্শনীয় স্থান হল মমপেসনস দেওয়াল। গ্রামের প্রধান ছিলেন উইলিয়াম মমপেসনস। তাঁর নামেই গড়ে উঠেছিল এই দেওয়াল। অর্থের বিনিময়ে এই পাঁচিলের উপরে গ্রামবাসীদের জন্য খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি রেখে যেতেন আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা।

১৫ ১৭
পাঁচিলের একপাশে রাখা ভিনিগার মেশানোর জলের মধ্যে টাকা দিয়ে সে সব জিনিসপত্র সংগ্রহ করতেন গ্রামবাসীরা। টাকা জীবানুমুক্ত করার জন্য জলের সঙ্গে ভিনিগার মেশানো হত।

পাঁচিলের একপাশে রাখা ভিনিগার মেশানোর জলের মধ্যে টাকা দিয়ে সে সব জিনিসপত্র সংগ্রহ করতেন গ্রামবাসীরা। টাকা জীবানুমুক্ত করার জন্য জলের সঙ্গে ভিনিগার মেশানো হত।

১৬ ১৭
এই গ্রামের প্রথম প্লেগ রোগী জর্জ ভিকারস-এর বাড়ি এখনও রয়েছে গ্রামের মাঝ বরাবর। সেটিও এখন পর্যটকদের দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

এই গ্রামের প্রথম প্লেগ রোগী জর্জ ভিকারস-এর বাড়ি এখনও রয়েছে গ্রামের মাঝ বরাবর। সেটিও এখন পর্যটকদের দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

১৭ ১৭
প্রায় ১ বছর এ ভাবেই কোয়রান্টিনে ছিল গোটা গ্রাম। আজও প্রতি বছরের অগস্ট মাসের শেষ রবিবার প্লেগ রবিবার হিসাবে পালন করা হয় গ্রামে। উইলিয়াম মমপেসনস-এর সেই পাঁচিলের কাছে জড়ো হন গ্রামবাসীরা।

প্রায় ১ বছর এ ভাবেই কোয়রান্টিনে ছিল গোটা গ্রাম। আজও প্রতি বছরের অগস্ট মাসের শেষ রবিবার প্লেগ রবিবার হিসাবে পালন করা হয় গ্রামে। উইলিয়াম মমপেসনস-এর সেই পাঁচিলের কাছে জড়ো হন গ্রামবাসীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy