দ্বিতীয় পর্বে যুদ্ধ শুরুর পরে ইজ়রায়েলি বাহিনীর মূল নিশানা দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ড। —ফাইল চিত্র।
আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে লিফলেট। তাতে লেখা, অবিলম্বে এলাকা ফাঁকা করে দিতে হবে। কিংবা হঠাৎ করে অচেনা নম্বর থেকে ফোন। নির্দেশ, ‘বোমা-বিস্ফোরণ শুরু হবে। পালান।’ কিন্তু কোথায় পালাবেন গাজ়াবাসী, কোন জায়গা নিরাপদ, সে উত্তর জানা নেই কারও। দ্বিতীয় পর্বে যুদ্ধ শুরুর পরে ইজ়রায়েলি বাহিনীর মূল নিশানা দক্ষিণ গাজ়া ভূখণ্ড। অথচ তাদেরই নির্দেশে এক সময়ে দলে দলে মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে এসেছেন। ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে এখন তাঁরা কোথায় যাবেন, কেউ জানে না।
‘‘ওরা বলেছিল দক্ষিণ গাজ়া নিরাপদ। মিথ্যা বলেছিল। গাজ়া স্ট্রিপের কোনও জায়গাই আর নিরাপদ নেই,’’ বলছিলেন গাজ়ার একেবারে দক্ষিণে, মিশর সীমান্ত ঘেঁষা রাফার এক বাসিন্দা সালা আল-আরিয়া। তাঁর বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। এলাকার প্রায় সব বাড়িই ধ্বংসস্তূপ। ইজ়রায়েলি বাহিনী (আইডিএফ) অনলাইন মানচিত্র তৈরি করেছে। তাতে গাজ়া স্ট্রিপকে কয়েকশো ব্লকে ভাঙা হয়েছে। আইডিএফের বক্তব্য, গাজ়ার মানুষের কাছে তারা ওই মানচিত্রে নজর রাখতে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছে। সেখানে জানানো হবে, কোন এলাকা নিরাপদ আর কোথায় হামলা শুরু হবে! আজ সকালে আইডিএফ সোশ্যাল মিডিয়ায় দক্ষিণ গাজ়ার ২০টি এলাকা নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করে। মানচিত্রে দেখানো হয়, সাধারণ মানুষ পালিয়ে কোথায় যাবেন। একটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্ত্রী সারি বাশি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ নেই। ইন্টারনেট নেই। আর ওরা বলছে বার কোড স্ক্যান করে নাকি মানচিত্র খুলে দেখতে হবে, কোথায় যেতে হবে!’’ তাঁর কথায়, ‘‘ইজ়রায়েল পালাতে বলছে। কিন্তু কোথায় পালাবে, কোনও নিরাপদ জায়গা আছে নাকি।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থাটির দাবি, গাজ়ার প্রতি পাঁচ জন বাসিন্দার মধ্যে চার জনই ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে।
হামাস-ইজ়রায়েল যুদ্ধে গাজ়ায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৫,৮৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিন তিন সেনার মৃত্যুর পরে সংঘর্ষে মৃত ইজ়রায়েলি সেনার সংখ্যা দাঁড়াল ৭৫। ইজ়রায়েল-বিদ্বেষ বাড়ছে বিশ্ব জুড়ে। ইজ়রায়েলের জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলের পরামর্শ, খুব দরকার না হলে এই মুহূর্তে ইজ়রায়েলিদের বিদেশ ভ্রমণ না করাই ভাল। যেতে হলে ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, আর্জেন্টিনা, ব্রাজ়িল, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ায় বাড়তি সতর্কতা নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ আফ্রিকার দেশগুলিতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মধ্য এশিয়ার কাজ়াখস্তান, কিরঘিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানও নিরাপদ নয় বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy