গ্রিক রাষ্ট্রদূত কাইরিয়াকোস আমিরিদিস । ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে বর্ষশেষের ছুটি কাটাতে এসে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ব্রাজিলের গ্রিক রাষ্ট্রদূত কাইরিয়াকোস আমিরিদিস। ব্রাসিলিয়া থেকে রিও ডি জেনেইরোর নোভা ইগুয়াচু-তে শ্বশুরবাড়িতে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন তিনি। দু’দিন পরেই রিও-র বাইরে একটি ফ্লাইওভারের নীচ থেকে গাড়ির ভিতরে দগ্ধ ও ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় গ্রিক রাষ্ট্রদূতের। এক জন রাষ্ট্রদূতের নিখোঁজ হওয়া এবং তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে শোরগোল পরে যায় রিও-তে। তড়িঘড়ি তদন্তে নামার পরেই পুলিশের হাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।
কাইরিয়াকোস এ বছরেই ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজে যোগ দেন। তবে ২০০১-০৪ পর্যন্ত রিও-তে এক জন গ্রিক কনসাল হিসাবেও কাজ করেছেন। সেই সময়ই তাঁর আলাপ হয় রিও-র বাসিন্দা ফ্যাঙ্কোয়েস নামে এক তরুণীর সঙ্গে। আলাপ থেকে প্রেম, তার পর তাঁদের বিয়েও হয়ে যায় দু’জনের। তাঁদের ১০ বছরের একটি কন্যাসন্তানও আছে। এর পর কাইরিয়াকোস ব্রাসিলিয়াতে ট্রান্সফার হয়ে যান। বর্ষশেষে শ্বশুরবাড়িতে আসতেন স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে ছুটি কাটাতে। এর মাঝেই নাকি ফ্র্যাঙ্কোয়েসের সঙ্গে সের্গিও মোরেইরা নামে স্থানীয় এক পুলিশ অফিসারের প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই পুলিশ অফিসার বয়সে তার থেকে ১১ বছরের ছোট। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে ক্রমশ। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর প্রণয়ের কথা জানতে পারার পরই গোলমাল শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে।
ফ্যাঙ্কোয়েস।
কাইরিয়াকোস শ্বশুরবাড়িতে আসাও কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে, ছুটি কাটাতে আসতেন মাঝে মধ্যে। এ বারও বর্ষশেষে এসেছিলেন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতেই। কিন্তু প্রেমিক ও তার মাঝে স্বামীর উপস্থিতি কোনও ভাবেই নাকি মেনে নিতে পারছিলেন না ফ্যাঙ্কোয়েস। তাই স্বামীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ারও ছক কষে ফেলে। সেই সুযোগও এসে গেল। প্রেমিকের সঙ্গে জোট বেঁধে কাইরিয়াকোসকে সুপারি দিয়ে খুন করায় ফ্যাঙ্কোয়েস। তার পর দেহ লোপাটের চেষ্টা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও খবর: স্বামীকে খুন করে থানায় হাজির স্ত্রী
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সম্পত্তির লোভে স্বামীকে খুন করে প্রেমিকের সঙ্গে জীবন কাটাতে চেয়েছিল ফ্যাঙ্কোয়েস। যে দিন কাইরিয়াকোস নিখোঁজ হয়ে যান, তাঁর দু’দিন পরে পুলিশে রিপোর্ট করে তাঁর স্ত্রী। ঘটনাচক্রে, সে দিনই রিও-তে গাড়ির ভিতর থেকে দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় গ্রিক রাষ্ট্রদূতের। এখানেই পুলিশের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। তদন্তে নেমে প্রথমে আটক করা হয় ফ্যাঙ্কোয়েসের প্রেমিকের এক আত্মীয় মাগালহেজকে। তাকে জেরা করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জেরায় সে স্বীকার করে, কাইরিয়াকোসকে খুন করার জন্য তাঁকে ২৫ হাজার পাউন্ড অর্থের সুপারি দিয়েছিল ফ্র্যাঙ্কোয়েস। মাগালহেজের বয়ানের ভিত্তিতে ফ্যাঙ্কোয়েস ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। তবে খুনের কথা অস্বীকার করে ফ্যাঙ্কোয়েস। উল্টে তার প্রেমিককেই এই খুনের জন্য দায়ী করে। পাশাপাশি দাবি করে, ঘটনার সময় নাকি বাড়িতেই ছিল না সে।
অন্য দিকে মাগালহেজ পাল্টা অভিযোগ আনে ফ্র্যাঙ্কোয়েসের বিরুদ্ধে। বলে, সে-ই স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশকে মাগালহেজ আরও জানায়, ক্রিসমাসের দু’দিন আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মারপিটও হয়। সম্পত্তির লোভেই স্বামীকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে বলে ফ্যাঙ্কোয়েসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মাগালহেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy