গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার কথা যখন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তখন কর বাবদ অনিল অম্বানীর সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ১১৮২ কোটি টাকা পাওনা ছিল ফরাসি সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর রাফাল ঘোষণার ছ’মাস পর অবশ্য দেখা যায়, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অনিলের সেই কর প্রায় পুরোটাই মকুব করে দিয়েছে ফ্রান্স। আজ এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ফরাসি সংবাদপত্র ‘লা মদে’। যদিও এই নিয়ে কোনও রকম বিশেষ সুবিধা পাওয়া বা পক্ষপাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রিলায়েন্স কমিউনিকেশন।
অনিল অম্বানী মালিকানাধীন ফরাসি টেলিকম সংস্থা ‘রিলায়েন্স আটলান্টিক ফ্ল্যাগ ফ্রান্স’-এর কাছে প্রায় ১১৮২ কোটি টাকা পাওনা ছিল ফ্রান্সের। ফরাসি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাফাল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই অনিল অম্বানীর বকেয়া করের প্রায় পুরোটাই, অর্থাৎ, ১১২৫ কোটি টাকা মকুব করে দেয় ফ্রান্স। রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ফরাসি সরকার যে বিপুল পরিমাণ কর বাকি থাকার কথা জানিয়েছিল, তা অযৌক্তিক এবং তাঁদের সঙ্গে ফ্রান্সের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই হয়েছে এই বোঝাপড়া ।
অনিল অম্বানীর সংস্থা এবং ফরাসি সরকারের মধ্যে এই কর মকুবের বোঝাপড়া হয়েছিল ২০১৫ সালের অক্টোবরে, এমনটাই জানাচ্ছে ফরাসি সংবাদপত্রটি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ঠিক এই সময়েই ফরাসি সংস্থা দাসোঁ এভিয়েশন এবং ভারতের মধ্যে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে চলছিল আলাপ-আলোচনা। তার কয়েক মাস আগেই, ২০১৫ সালের এপ্রিলে ফ্রান্স সফরে গিয়ে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার কথা ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এর আগে অনিল অম্বানীর সংস্থার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ তুলেছিল ফ্রান্স। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে এই বকেয়া গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় অর্থমূল্যে প্রায় ৭০ কোটি টাকায়। এই নিয়ে অনিলের সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছিল ফ্রান্স। তদন্তের পর ২০১২ সাল পর্যন্ত অনিলের বকেয়া করের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৭১২ কোটি টাকা। আর ২০১৫ সালে রাফাল চুক্তির সময় বকেয়া কর ছিল প্রায় ১১৮২ কোটি টাকা।
ফরাসি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পর রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই কর মকুব করার পিছনে কোথাও কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। কোনও বিশেষ সুবিধাও পায়নি তাঁদের সংস্থা। ফরাসি সরকারের করের দাবিই ছিল অযৌক্তিক, বিবৃতি দিয়ে এমনটাই বলেছে রিলায়েন্স।
আরও পড়ুন: শিল্প ২০ মাসের তলানিতে, চিন্তা বাড়াল মূল্যবৃদ্ধিও
রাফাল প্রস্তুতকারক দাসোঁ এভিয়েশন ভারতের জন্য এই যুদ্ধবিমান বানানোর সময় সহযোগী নির্মাণ সংস্থা হিসেবে বেছে নেয় অনিলের মালিকানাধীন রিলায়েন্স ডিফেন্সকে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কোনও সরঞ্জাম বানানোর অভিজ্ঞতা না থাকলেও যুদ্ধবিমানের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে রিলায়েন্সকে সহযোগী করায় প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। এর পর তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদের মন্তব্যেও ঝড় উঠেছিল দেশের রাজনীতিতে। ওলাঁদের মন্তব্য ছিল, ‘‘রিলায়েন্স ডিফেন্সকে সহযোগী কোম্পানি হিসেবে নির্বাচিত করার বিষয়ে তাঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না। ভারতের অনুরোধেই ঢোকাতে হয়েছিল অনিল মালিকানাধীন রিলায়েন্স ডিফেন্সকে।’’ তুমুল বিতর্কের পর অবশ্য সেই বক্তব্য থেকে সরে এসেছিল ফরাসি সরকার এবং দাসোঁ এভিয়েশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy