— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চিনের মধ্যস্থতার যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পরেই সশস্ত্র বিদ্রোহী তিন গোষ্ঠীর জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল মায়ানমার সেনা। বুধবার রাখাইন প্রদেশের রামরি দ্বীপে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ডেরায় বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মায়ানমার বায়ুসেনা। পাশাপাশি, ওই দ্বীপে মায়ানমার নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ গোলাবর্ষণ করেছে বলেও সরকারি সূত্রের জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাদাবন এবং কুমির-সহ নানা বন্যপ্রাণীতে ভরা ওই দ্বীপের উপকূলে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ার জন্য চিনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারের। তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখার সিদ্ধান্ত অটল থাকায় চলতি সপ্তাহেই চিনের মধ্যস্থতায় আয়োজিত শান্তি বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল।
নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মায়ানমার সেনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী জোটের শুরু করা অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’। সেই অভিযানের জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের প্রায় অর্ধেক বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছে। উত্তর, পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের শান, চিন আর সাগিয়াং প্রদেশ রয়েছে এই তালিকায়। তিন সংগঠনের জোটের পাশাপাশি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)-ও শামিল হয়েছে জুন্টা বিরোধী যুদ্ধে।
মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গৃহযুদ্ধের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ (যার মধ্যে কয়েক হাজার আশ্রয় নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মিজ়োরামে)। এই পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের গোড়ায় চিনা পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র কয়েক জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক যুদ্ধবিরতির জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন। মায়ানমারের সরকারি টিভি চ্যানেল ‘গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মায়ানমার’-এ সে কথা জানিয়েছিলেন, সামরিক জুন্টা সরকারের মুখপাত্র জ় মিন তুন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেজিংয়ের সেই উদ্যোগ বিফল হয়েছে বলে সোমবার আমেরিকাস্থিত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি) জানায়। তাদের রিপোর্ট বলছে, ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়ান্স’ এবং আরও দু’টি সশস্ত্র গোষ্ঠী মিলে জুন্টা সেনার উপর হামলা চালাতে ‘ব্রিগেড ৬১১’ নামে একটি বাহিনী গঠন করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জনজাতিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ওই বাহিনী। তারাই এই মুহূর্তে রয়েছে লড়াইয়ের প্রথম সারিতে। রাখাইনের রামরি দ্বীপ ‘সামরিক অবস্থানগত দিক’ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সেখানে বন্দর তৈরি করলে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেজিংয়ের ‘প্রভাব’ আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy