Advertisement
E-Paper

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ সরকারের বিরুদ্ধে, বিরোধিতায় অধ্যাপকেরা

ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এইচআরএমএস ব্যবস্থা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর।

অধ্যাপকদের সাংবাদিক বৈঠক।

অধ্যাপকদের সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৩৪
Share
Save

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণের প্রতিবাদে নেমেছে অধ্যাপক সংগঠনগুলি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নয়া ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’(এইচআরএমএস) ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে রাজ্য সরকারি নিয়ন্ত্রণ বাড়তে চলেছে বলে তাদের অভিযোগ। তার বিরোধিতায় শুক্রবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে সরব হয় সংগঠনগুলি।

রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বেতন বণ্টনের দায়িত্ব সরকারি কোষাগার বা ট্রেজ়ারির। অন্য দিকে, সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে আসে। এর পর সেখান থেকে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানের তরফে। তবে এ বার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে বেতন বণ্টনের দায়িত্বও নিজেদের আওতায় আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই মর্মে উচ্চশিক্ষা দফতর একটি নীতি প্রণয়ন করেছে। যেখানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। সরকারি যুক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে কর্মীদের মধ্যে বেতন বণ্টনের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই অনিয়ম দেখা যায়। মাসের প্রথম দিনে অনেকেই হাতে পান না বেতন। এ বার সেই ব্যবস্থাতে পরিবর্তন আনতেই উচ্চশিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগ।

ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এইচআরএমএস ব্যবস্থা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগে ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠনগুলি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে তাঁদের তরফে জানানো হয়, সরকার যা-ই দাবি করুক, এই ব্যবস্থার চালু করার মাধ্যমে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসন এবং সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে চলেছে রাজ্য সরকার।

তাঁদের দাবি, বর্তমানে স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগে যে দুর্নীতির সাক্ষী হচ্ছেন সকলে, এইচআরএমএস চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও একই পরিণতি দেখা যাবে। যে ভাবে স্কুলব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, সে রকমই হাল হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির। কেননা, সরকার কর্মীদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিজস্ব আর্থিক পরিচালন ব্যবস্থা সরাসরি হাতে তুলে নেবে। তাঁদের সমস্ত তথ্যভান্ডার যে হেতু সরকারের হাতেই থাকবে, ফলে এক দিকে যেমন কর্মী এবং শিক্ষকদের যত্রতত্র বদলি করার সম্ভাবনা তৈরি হবে। তেমনি অন্য দিকে, বছরের পর বছর কর্মী নিয়োগ না করে কর্মী সঙ্কোচন করা হবে। আবার কর্মীদের গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সুযোগসুবিধাগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের বদলে সরকারি কোষাগারের নিয়ন্ত্রণাধীন হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার সিদ্ধান্তও নেবে সরকার।

এ ছাড়া, বেতনকাঠামো সুরক্ষার দায়িত্ব বিকাশ ভবনের হাতে থাকলে ভবিষ্যতে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন)-র বদলে রাজ্য সরকারি বেতন কাঠামোর মধ্যে তাঁদের নিয়ে আসা হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত। তাঁদের নিজস্ব স্ট্যাটিউট এবং নিয়মাবলি রয়েছে, এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্ষমতা বিকাশ ভবনের লাল ফিতের ফাঁসে বাঁধা পড়ে যাবে। ফলে সমস্ত বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে সরকারের হাতে।

এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন (জুটা)-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার হরণ করা হচ্ছে এবং দুর্নীতির পথ প্রশস্ত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাত থেকে স্বশাসনের অধিকার এ ভাবেই ছিনিয়ে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার।’ একই অভিযোগ করেছে, কুটা থেকে আরবুটা-সহ অন্য অধ্যাপক সংগঠনগুলি।

Human Resources Management System WB Professors Protest 2025 Professors Protest against WB Govt

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}