ইয়োকোহামা বন্দরে দাড়িয়ে আছে ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’।—ছবি এএফপি।
মেয়েকে ফিরিয়ে আনুন। জাপানের উপকূলে আটকে থাকা প্রমোদতরী ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’-এর ভারতীয় তরুণী সোনালি ঠক্করের বাবা দীনেশ ঠক্কর এই আর্জি জানিয়ে শুক্রবার চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
ঠাণে থেকে এই চিঠিতে দীনেশ বলছেন, ‘‘আমার মেয়ের যত বার রক্ত-পরীক্ষা করা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মেলেনি। তবু তার মতো অনেককে সংক্রমিতদের সঙ্গে এক জাহাজে রাখা হয়েছে। ১৫ দিন ধরে একটা ছোট্ট ঘরে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে তাকে। এই পরিস্থিতিতে তার প্রাণসংশয়ের ঝুঁকিও রয়েছে। এক ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ চার দিন আগে জাহাজ থেকে এক বিবৃতিতে সোনালিও কেন্দ্রের কাছে এই আর্জি জানিয়েছিল।
শুক্রবার জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে নতুন করে ১৩ জন যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই জাহাজের ভারতীয় কর্মী স্বরূপ চম্পাদার জানিয়েছেন, শুক্রবার জাহাজের ক্যাপ্টেন এ কথা জানান। এই নিয়ে ওই জাহাজে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছল ৬৩৭-এ। স্বরূপ এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘ক্রমশ পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। পরিবারের লোকেরা চিন্তায় রয়েছেন। জানি না কবে দেশে ফিরতে পারব।’’ জাহাজের অন্য কর্মী, উত্তর দিনাজপুরের বিনয় সরকার বলেন, ‘‘জাপানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত দেশে ফেরানোর বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। অপেক্ষায় রয়েছি।’’
‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’ থেকে সম্প্রতি ছাড়া পেয়ে ইজ়রায়েল ফিরেছিলেন এক যাত্রী। জাহাজে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরে ক্লিনচিট পেয়েই জাপান থেকে ইজ়রায়েল ফেরেন তিনি। কিন্তু দেশে ফিরেই রক্ত পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়ে। একই ভাবে ওই প্রমোদতরী থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন অস্ট্রেলিয়ার দুই নাগরিক। জাহাজটির যে আট ভারতীয় কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে আজ জানিয়েছে জাপানের ভারতীয় দূতাবাস।
এর মধ্যেই ভারতের একটি বিশেষ বিমানকে উহানে ঢুকতে দিতে চিন গড়িমসি করছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লি জানিয়েছিল, ওষুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে উহানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত বায়ুসেনার একটি বিশেষ বিমান। কিন্তু অনুমতি না-পেয়ে সেটির যাত্রা আটকে ছিল বলে অভিযোগ। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অবশ্য আজ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মৃত আর এক ডাক্তার
মারণ ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করার জন্য পিছিয়ে দিয়েছিলেন নিজের বিয়ে। গত মাসের শেষের দিকে তিনি নিজেও নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন পেং ইনহুয়া। চলতি মাসের গোড়ায় এই উহানেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং। তিনিই প্রথম প্রশাসনকে ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন।
বছর উনত্রিশের পেং চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। করোনাভাইরাস মহামারীর আকার নিলে বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কয়েকশো রোগীকে সুস্থ করার পরে নিজেই কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হন। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা করছিলেন এ রকম মোট আট জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হল চিনে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কালই সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ২,২৩৬ হয়েছিল। আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজার ছাড়িয়েছে। চিন্তা বাড়ছে দক্ষিণ কোরিয়া নিয়েও। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে শতাধিক নাগরিক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন দ্বিতীয় এক রোগীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy