২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পর পর তিন বার ভূমিকম্পের হানা। আর তারই জেরে মাঝখান থেকে দু’ভাগ হয়ে গেল তুরস্কের একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে। ফলে বন্ধ হয়েছে বিমান উড়ান। তুরস্কের হাতাই প্রদেশের বিমানবন্দরে বিপর্যয়ের এই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, ভূমিকম্পের চাপে আড়াআড়ি ভাবে ওই বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল ধরেছে। দু’পাশ থেকে থেকে উঁচু হয়ে ফাটল বরাবর উঠে এসেছে সেই রাস্তা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ওই বিমানবন্দরটি বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য। ভূমিকম্পের কবলে বিধ্বস্ত ওই বিমানবন্দরের একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
সোমবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর ৪টে নাগাদ কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে সেই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। কম্পনের উৎসস্থল ছিল দক্ষিণ তুরস্কে। গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১১ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় বার কেঁপে ওঠে লেবানন, সিরিয়া এবং সাইপ্রাসের বিভিন্ন অংশ। ইউনাইটেড স্টেটস জিয়োলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-র মতে, এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৭। প্রায় দেড় মিনিট পর্যন্ত তার কম্পন অনুভূত হয়। কম্পনের জেরে হুড়মুড়িয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে থাকে একের পর এক বহুতল এবং বাড়ি। সেই ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই আরও দু’বার কেঁপে ওঠে সিরিয়া এবং তুরস্কের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে বিপদ আরও বেড়ে যায়। তার পর থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। সেই সংখ্যা বর্তমানে ৩৮০০ ছাড়িয়েছে।
#Hatay airport runway is out of service due to the strong earthquake. pic.twitter.com/7RvDjBWe3l
— Barzan Sadiq (@BarzanSadiq) February 6, 2023
আরও পড়ুন:
সরকারি হিসাব বলছে, এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’দেশের ভূমিকম্পের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৮৩০ জনের। যার মধ্যে শুধু তুরস্কেই মৃত্যু হয়েছে ২,৩৭৯ জনের। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১৩৬ জন। দু’দেশের আহতের সংখ্যাও কয়েক হাজার। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান জানিয়েছেন, বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সোমবারের ভূমিকম্পই ছিল তুরস্কের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই সঙ্কট মোকাবিলায় সকল দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে। ভারতের তরফেও ত্রাণ এবং চিকিৎসকদের দল তুরস্কে পৌঁছেছে।