আজ জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষন দিয়েছেন। ছবি: বিটিভির সৌজন্যে।
বাংলাদেশে এ বার বর্ষবরণের আয়োজন নেই। মুক্তবুদ্ধি আর মুক্তচিন্তার প্রতীক মঙ্গল শোভাযাত্রারও আয়োজন নেই, এ বারে বছরের প্রথম সূর্য ওঠার লগ্নে দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রধান সংগঠন ছায়ানটও রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও মিলনমেলার আয়োজন স্থগিত করেছে। পাড়ায় পাড়ায় ছোটবড় প্যান্ডেলেও কোনও আয়োজন নেই। গত দুই দশকে বাংলাদেশে যে রীতি গড়ে উঠেছে বাংলা বছরের প্রথম দিনে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে— এ বারে সেই নতুন পোষাকও কেনাকাটা নেই। করোনাভাইরাস থামিয়ে দিয়েছে সব উৎসব-আয়োজন। ঘরবন্দি মানুষের একটাই চাওয়া— নতুন বছরে দ্রুত বিদায় হোক গ্রহ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস।
ঢাকাতে বাংলা নববর্ষে অন্যতম প্রধান আয়োজন— মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের আয়োজনে পয়লা বৈশাখে শাহবাগে এই শোভাযাত্রার আয়োজন হয়ে আসছে। আশির দশকে শান্তির বিজয় প্রত্যাশায় এর শুরু। এই শোভাযাত্রায় চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী-সহ বাংলাদেশের অজস্র মানুষ অংশ নেন। শোভাযাত্রায় থাকে বাঙালি সংস্কৃতির পরিচয়বাহী নানা প্রতীকী উপকরণ, বিভিন্ন রঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। গত ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।
১৯৬৪ সালে, অর্থাৎ বাংলা ১৩৭১ সালের পয়লা বৈশাখ রমনার বটমূলে ছায়ানট প্রথম বাংলা নববর্ষ পালন করে। এই নববর্ষ পালন এখন বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব। অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই আয়োজনে ২০০১ সালে হামলা করে জঙ্গিরা, অনেকে হতাহত হন। কিন্তু তার পরের বছর বর্ষবরণ আয়োজনে মানুষের উপস্থিতি ছিল দ্বিগুণ। সেই আয়োজনও এ বার স্থগিত।
আরও পড়ুন: ‘ছায়ানট’-এর বর্ষবরণ এ বার ডিজিটাল মাধ্যমে
করোনাভাইরাস থামিয়ে দিয়েছে সব উৎসব-আয়োজন। ছবি: সংগৃহীত।
ছায়ানট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস দুর্যোগ এবং জনসমাগম সংক্রান্ত ঝুঁকির কারণে নিয়মিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও মিলনমেলার আয়োজন থেকে সরে এসেছে তারা। তবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সীমিত আকারে নববর্ষকে স্বাগত জানানোর একটি উপস্থাপনার সঙ্গে ছায়ানট যুক্ত হয়েছে। গত কয়েকটি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নির্বাচিত ভিডিয়ো দিয়ে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানটি। তাতে যুক্ত হয়েছে বর্তমান সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে ছায়ানট সভাপতি সনজিদা খাতুনের বক্তব্য।
বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখ মানে ছোটবড় সকলেরই নতুন পোশাক। এই উৎসবে সারা বাংলাদেশে মোট কত টাকার বাণিজ্য হয়, তার অঙ্ক নির্দিষ্ট না হলেও অনুমান, এই উৎসবকে ঘিরে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। শহর ও গ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বছরভর তাকিয়ে থাকেন এর দিকে। কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ঘরবন্দি এ বারের নববর্ষের অর্থনীতি। সব দোকানপাট বন্ধ। অনলাইনেও যাঁরা পোশাকের বাণিজ্যে যুক্ত, তাঁদের ব্যাবসা নেই। নিত্যপণ্য সরবরাহ করতেই হিমশিম ছোটবড় সমস্ত অনলাইন শপ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দিয়েছেন জাতির উদ্দেশে। দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। করোনা-পরিস্থিতির জন্য ঘরে বসেই বাংলা নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy