চিনের সঙ্গে উত্তেজনার পারদ এখন এতটাই চড়ে গিয়েছে যে এ বার তা কমাতে ব্যগ্র মোদী সরকার।— ফাইল ছবি।
ডোকলামে যদি ভারত সেনা পাঠাতে পারে, তা হলে চিনও একই ভাবে কাশ্মীরে সেনা পাঠাতে পারে। ভারতকে এ ভাবেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হল চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং কূটনৈতিক ইস্যুতে চিনের অবস্থান কী, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা গ্লোবাল টাইমসের মাধ্যমে জানিয়ে থাকে চিন। ওই সংবাদপত্রে ভারতকে আগেও বহুবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ডোকলাম সঙ্কট শুরুর পর থেকে প্রায় রোজ ভারতকে তুলোধোনা করছে চিনা খবরের কাগজটি। সোমবার এক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদকে দিয়ে ফের সেই গ্লোবাল টাইমসের মাধ্যমে চিনের হুমকি— পাকিস্তানের হয়ে কাশ্মীরে সেনা ঢোকাতে পারে চিন।
পত্রিকাটি ওয়েস্ট নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান স্টাডিজের অধিকর্তা লং জিংচামকে উদ্ধৃত করে এই মন্তব্য করেছে। এর আগেও একাধিকবার ডোকলামে ভারতের সেনা পাঠানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেজিং। নানাভাবে হুমকিও দিয়েছে।
গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে লং জিংচাম লিখেছেন, ভারত যদি ডোকলামে সেনা পাঠাতে পারে, তা হলে চিনা বাহিনীও যে কোনও দিন ‘ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে’। যে যুক্তিতে চিন ও ভুটানের মধ্যে বিতর্কিত এলাকা ডোকলামে প্রবেশ করেছে ভারতীয় সেনা, সেই একই যুক্তিতে ‘পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিতর্কিত এলাকা’ কাশ্মীরে চিনা সেনা ঢুকতে পারে বলেও মন্তব্য তাঁর। ডোকলাম ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহল চিনের উপর কোনও চাপ তৈরি করতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন জিংচাম। চিনের বিশাল বাজারকে হাতে রাখার জন্য পশ্চিমী দুনিয়া তাদের চটাবে না বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন: ভারতে সাবধান! বলল চিন
ডোকলাম নিয়ে রোজ একটু একটু করে সুর চড়াচ্ছে চিন। সেখান থেকে ভারত সেনা না সরালে চিন সামরিক পদক্ষেপ করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি যাবতীয় হুমকির মুখে অবিচল। ২০১২ সালে চিন এবং ভারতের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, চিন তার শর্ত ভেঙেছে বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির। ভারত, চিন এবং অন্য কোনও দেশের সীমান্ত যেখানে মিলেছে, সেই সব এলাকায় সীমান্ত সংক্রান্ত বিতর্কের মীমাংসা তিনটি দেশের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই করতে হবে, এমনই শর্ত ছিল সেই চুক্তির। কিন্তু ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তবর্তী এলাকা ডোকলামে একতরফা ভাবে বেজিং রাস্তা তৈরি করা শুরু করেছিল বলে অভিযোগ। চিন যে এলাকায় রাস্তা তৈরি করতে চাইছিল, তা ভুটানের এলাকা বলে থিম্পুর দাবি। দিল্লিও সেই দাবিকেই সমর্থন করছে। ভুটানের সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা আদান-প্রদান সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে ভুটানকে রক্ষা করতে ভারত দায়বদ্ধ।আবার সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় চিন যদি রাস্তা এবং সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করে, তা হলে তা ভারতের নিরাপত্তার পক্ষেও উদ্বেগজনক হতে পারে বলে নয়াদিল্লি মনে করছে। তাই ডোকলামে পাঠানো বাহিনী এই মুহূর্তে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা ভারতের নেই বলেও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেজিং এ বার কাশ্মীর নিয়ে হুমকি দিতে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy