মার্কিন প্রশাসনের তরফে এক রকম ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল আগেই। রাশিয়া ও ইরানের পরে এ বার নিষেধাজ্ঞা চাপল উত্তর কোরিয়ার উপরে। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব ভঙ্গ এবং পর পর আন্তর্মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষা করার অভিযোগে নিরাপত্তা পরিষদে গত শনিবার ভোটাভুটির পরে উত্তর কোরিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সই করে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার উপরে আমেরিকার প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞায়। চিন এই নিষেধে সমর্থন জানালেও দেশের বিদেশমন্ত্রী রবিবার বলেছেন, এ ধরনের জটিল ও স্পর্শকাতর বিষয় সমাধানে আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কয়লা, লোহা, আকরিক লোহা, সিসা ও সামুদ্রিক খাবার-সহ আরও যে সব জিনিস মূলত রফতানির বাজার রয়েছে উত্তর কোরিয়ার, সে সবের উপরে নিষেধ চাপানো হচ্ছে। ছাড় মিলছে না ব্যাঙ্ক পরিষেবা এবং বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রেও। রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন দূত নিকি হ্যালির দফতর জানিয়েছে, রফতানির বাজার থেকে উত্তর কোরিয়া যে ৩০০ কোটি ডলার রাজস্ব লাভ করে থাকে, নিষেধ কার্যকর হওয়ার পরে তা এক তৃতীয়াংশেরও বেশি কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ইইউ ছাড়তে চার হাজার কোটি ইউরো দিচ্ছে ব্রিটেন!
মার্কিন নিষেধ ঘোষণা হওয়ার পরে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদপত্রে রবিবার এক নিবন্ধে রীতিমতো হুমকি দিয়ে লেখা হয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে ‘বিরোধী নীতি’-র পথ থেকে সরে না এলে আমেরিকার কাছে এ বার আত্মহনন ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না। নিবন্ধে রয়েছে, ‘‘আমাদের দেশকে ছোঁয়ার চেষ্টা করলে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডকে অকল্পনীয় আগুনের সাগরে ডুবে যেতে হবে।’’
নিউ জার্সিতে ছুটি কাটাতে গিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তে সায় দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে বলেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার উপরে নিষেধ চাপাতে রাষ্ট্রপুঞ্জে ১৫-০ ভোট হয়েছে। চিন ও রাশিয়া আমাদের পাশে। খুব বড় অর্থনৈতিক প্রভাব তৈরি হচ্ছে।’’
চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার তরফে পরপর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা সঠিক পদক্ষেপ। কিন্তু কোরীয় উপদ্বীপে এই সঙ্কটময় মুহূর্তে এমন জটিল ও স্পর্শকাতর বিষয়ে আলোচনা হওয়াটা দরকার। তাঁর মতে, উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আগে কূটনৈতিক এবং শান্তিপূর্ণ পথে বিষয়টিকে দেখা প্রয়োজন। ম্যানিলায় আঞ্চলিক বিদেশমন্ত্রীদের এক সম্মেলনে ওয়াং বলেছেন, ‘‘সব পক্ষকে বলছি, দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করুন। একটা দিক দেখতে গিয়ে অন্য দিকটি যেন অবজ্ঞা করা না হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন ঠিকই, কিন্তু সেটাই একমাত্র পথ নয়।’’ সোমবার থেকে আসিয়ান আঞ্চলিক সম্মেলনেও আলোচনার বড় অংশ জুড়ে থাকতে পারে উত্তর কোরিয়া। এ বার কিম কোন পথে এগোবেন, জানতে আগ্রহী বিশ্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy