সে দিন: ডায়ানার কফিনের পিছনে যুবরাজ চার্লস, রাজকুমার হ্যারি, চার্লস স্পেন্সার, রাজকুমার উইলিয়াম এবং ডিউক অব এডিনবরা। ছবি: রয়টার্স।
প্রায় দু’দশক আগের কথা। প্যারিসের সুড়ঙ্গে গাড়ি দুর্ঘটনায় দিদির মৃত্যুর পরে অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠানের ‘ভয়াবহ স্মৃতি’ এখনও তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে। দুঃস্বপ্ন দেখে বারবার ভেঙে যায় রাতের ঘুম।
চার্লস স্পেন্সার। প্রিন্সেস ডায়ানার ছোট ভাই। দিদির মৃত্যুর কুড়ি বছর পরে বললেন, ‘‘আমি চাইনি, সে দিন দিদির কফিনের পিছনে পিছনে হাঁটুক উইলিয়াম ও হ্যারি। আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু বাকিংহামের অফিসারেরা আমায় বলেন, ডায়ানার দুই ছেলেই তাদের মায়ের কফিনের সঙ্গে হাঁটতে চেয়েছে। পরে বুঝতে পারি, আমায় মিথ্যে কথা বলে চুপ করানো হয়েছিল।’’
কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে ডায়ানার ছোট ছেলে হ্যারিও জানান, তিনি আদপেই সেই কফিনের পিছনে হাঁটতে চাননি। হ্যারির বয়স তখন মাত্র ১২। তাঁর কথায়, ‘‘একটি শিশুর উপরে এ ভাবে ‘কর্তব্যবোধ’ চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।’’ ডায়ানার মৃত্যুর পরে বেশ কয়েক বছর মানসিক চিকিৎসা চলেছে হ্যারির।
আরও পড়ুন: রুশ নিষেধাজ্ঞায় সায় হাউসের, প্যাঁচে ট্রাম্প
একই সুর চার্লস স্পেন্সারের গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘ডায়ানার মৃত্যুতে আমি-ই যদি মানসিক ভাবে এতটা বিপর্যস্ত হয়ে যাই, তা হলে ওই বাচ্চা ছেলে দু’টোর কী ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল, ভেবে দেখুন!’’ স্পেন্সার জানান, যে পাঁচ জন (ডায়ানার প্রাক্তন স্বামী যুবরাজ চার্লস, দুই ছেলে, ভাই স্পেন্সার ও প্রাক্তন শ্বশুর ডিউক অব এডিনবরা) কফিনের পিছনে হাঁটবেন, তাঁদের বিশেষ ‘প্রশিক্ষণ’ দিয়েছিলেন বাকিংহামের অফিসারেরা— ‘সোজা, সামনের দিকে তাকাবেন। ডাইনে-বাঁয়ে, আদপেই নয়। আস্তে আস্তে, একটি বিশেষ ছন্দে এগিয়ে যাবেন সারিবদ্ধ ভাবে। মনের ভিতর যে তোলপাড় চলছে, তার কোনও ছাপ মুখে না-পড়াই ভাল’।
স্পেনসার বলেন, ‘‘সে ভাবেই ৩০ মিনিট হাঁটতে হয়েছিল আমাদের। আমার জীবনের সব থেকে দুঃসহ আধঘণ্টা। উইলিয়াম-হ্যারিরও তাই।
চারপাশে হাজার হাজার মানুষ চিৎকার করে কাঁদছে, হাহাকার করছে। কিন্তু আমাদের ঘাড় ফেরানোর উপায় নেই। বাচ্চাগুলোর চোখ থেকে এক ফোঁটা জল ফেলাও বারণ। কাঠের পুতুলের মতো শুধু কর্তব্য করে যাওয়া!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy