(বাঁ দিকে) ইসকনের চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। মুহম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ক্রমাগত ‘চাপ এবং ক্ষোভ’-এর মুখে পড়ে ইসকনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নিল বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। তার মধ্যেই ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে বুধবার দেশের হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
প্রসঙ্গত, চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে ইসকনের তরফে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন চিন্ময়কৃষ্ণের অনুরাগীরাই। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছে, ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক। জরুরি অবস্থা জারি করা হোক চট্টগ্রাম এবং রংপুরে।
‘দ্য ডেলি স্টার’কে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, যে হেতু সরকার ইতিমধ্যেই ইসকনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে এবং চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবস্থা নিয়েছে, তাই তারা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ইসকনের বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ দেবে না। ফলে ইসকনের বিরুদ্ধে করা মামলা আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে। ইসকনের বর্তমান কার্যকলাপ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার, সে বিষয়েও আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
‘দ্য ডেলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি শুরু হয় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায় চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতের কাছে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন জানায় অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতর। তখনই আদালত জানায়, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তারা কোনও নির্দেশ দেবে না। ইসকন কলকাতা শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট মুখপাত্র রাধারমন দাস বলেন, ‘‘আমাদের জন্য আনন্দের খবর। নিষিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা চিন্তায় পড়ে গেছিলাম। লক্ষ লক্ষ ভক্তেরা কোথায় যাবেন। অনেক মন্দির আছে। সরকার যে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছিল, হাই কোর্ট তা নিষিদ্ধ করেছে।’’
হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তাঁরই ডাকে ঢাকার শহিদ মিনার, চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা এলাকায় সমাবেশে যোগ দেন হাজার হাজার সংখ্যালঘু। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। ওই মামলাতেই সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশে ইসকনের তরফে বিক্ষোভ শুরু হয়, যার নেতৃত্ব দেন চিন্ময়কৃষ্ণের অনুরাগীরাই। চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়, ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক। জরুরি অবস্থা জারি করা হোক চট্টগ্রাম এবং রংপুরে। মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালত থেকে বার করার সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় এক আইনজীবীও নিহত হন।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, দেশের নানা প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতেও। ইউনূস-পরিচালিত অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। তবে ইউনূস সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও ধর্মীয় অধিকার সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন বার বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy