(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পতন নিশ্চিত, আগের রাতেই বুঝে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সরকার কার্ফু জারি করেছিল। কিন্তু সেই কার্ফু প্রয়োগ করার উপায় ছিল না। কারণ, সেনাবাহিনীর সমর্থন হারিয়ে ফেলেছিলেন হাসিনা। যে দিন তিনি দেশ ছাড়লেন, তার আগের রাতেই সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান হাসিনার দফতরে গিয়েছিলেন, জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। সেনাপ্রধান তাঁকে বলে দিয়েছিলেন, আর তাঁরা আন্দোলনকারীদের উপরে গুলি চালাবেন না। কার্ফুর মাঝে কেউ রাস্তায় বেরোলেও তাঁদের দমন করা হবে না। এ ক্ষেত্রে বার্তা ছিল স্পষ্ট, হাসিনার কাছ থেকে সমর্থন তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনা।
রয়টার্স জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্তই হাসিনার পতন নিশ্চিত করে দিয়েছিল। নির্ধারণ করে দিয়েছিল তাঁর ভাগ্যও। গত রবিবার রাতে সেনাপ্রধান ওয়াকার তাঁর জেনারেলদের সঙ্গে নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকেই সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাতেই হাসিনাকে জানানো হয় সেই সিদ্ধান্তের কথা।
মনে করা হচ্ছে, সেনাবাহিনীর সমর্থন হারানোর পরেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন হাসিনা। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, তার পরেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি বলপ্রয়োগ করে আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি হাসিনার হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। সোমবার অবশেষে ইস্তফার কাগজে সই করেন হাসিনা।
সূত্রের খবর, পদত্যাগের জন্য হাসিনাকে ৪৫ মিনিট সময় বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ সেনা। তিনি বিদায়ী ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। তাঁকে সেই সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে দাবি বিভিন্ন সূত্রে। পদত্যাগ করে বোন রেহানার সঙ্গে সোমবার দেশ ছাড়েন হাসিনা। তাঁর ১৫ বছরের শাসনকাল শেষ হয়েছে। বর্তমানে হাসিনা দিল্লিতে রয়েছেন। মঙ্গলবার ভারত সরকার জানিয়েছে, হাসিনা মানসিক ভাবে বিপর্যন্ত। তাই তাঁকে আপাতত কিছু দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন এই সময়ের মধ্যে। তার পর তা ভারত সরকারকে জানানো হলে দিল্লি সেই মতো পদক্ষেপ করবে। হাসিনা লন্ডনে যেতে চেয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। তবে এখনও সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। ভারতে থেকে তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেটাই এখন দেখার।
অন্য দিকে, হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর বাংলাদেশের শাসন এখনও সেনার অধীন। সেনাবাহিনীর অধীনেই গঠিত হবে তদারকি সরকার। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy