বাঁ দিকে সইফ আল আদেল, ডান দিকে নিহত আয়মান আল জওয়াহিরি। — নিজস্ব চিত্র।
আমেরিকার সেনার ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন বিশ্বের ত্রাস হয়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার প্রধান আয়মান আল জওয়াহিরি। এই ‘সমাপ্তি’ জন্ম দিয়েছে নতুন প্রশ্নের। এ বার কে বসতে চলেছেন আল কায়দার মাথায়? জল্পনায় উঠে আসছে বিভিন্ন নাম। সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞরা ‘বাজি’ ধরছেন জওয়াহিরির মতো আরও এক মিশরীয়র উপর। ইনি প্রাক্তন মিশরীয় সেনানায়ক সইফ আল আদেল। মনে করা হচ্ছে তাঁরই কাঁধে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
ওসামা বিন লাদেনের জীবদ্দশায় জওয়াহিরি ছিলেন সংগঠনের দ্বিতীয় মুখ। লাদেনের মৃত্যুর পর মিশরের ওই শল্যচিকিৎসকের কাঁধে দেওয়া হয় সংগঠনের দায়িত্বভার। জওয়াহিরির মৃত্যুর পর আল কায়দার প্রধান হিসাবে উঠে আসছে আদেলের নাম। ঘটনাচক্রে প্রাক্তন ওই মিশরীয় সেনানায়ক এখন আল কায়দার দ্বিতীয় ব্যক্তি। আদেল এফবিআইআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন। ১৯৯৮ সালে দার এস সালাম, তানজানিয়া এবং কেনিয়ায় আমেরিকার দূতাবাসে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে ওই বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞের বিরুদ্ধে। মনে করা হয়, আদেল বর্তমানে ইজিপশিয়ান ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত।
এফবিআইয়ের নথি বলছে, আদেলের গায়ের রং জলপাই। চোখের মণির রং কালো। চুলের রংও কালো। আমেরিকার ওই তদন্তকারী সংস্থাটির কাছে রয়েছে আদেলের একটি পুরনো ছবিও। মনে করা হয়, এই মুহর্তে আদেল রয়েছেন ইরানে। সেখান থেকে সংগঠনের কাজকর্ম সামলাচ্ছেন তিনি। যদিও আমেরিকার সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ রিটা কাটজের মতে, ইরানের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে এখন সিরিয়ায় রয়েছেন আদেল। সংগঠনের কাজে এক সময় মিশর ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া চষে ফেলেছিলেন আদেল। সংগঠনে নবাগতদের প্রশিক্ষণও দিতেন তিনি। অনেকে মনে করেন, লাদেনের ৯/১১ হামলার বিরুদ্ধে ছিলেন আদেল। এমন ‘ঠান্ডা দৈত্য’-এর হাতেই আল কায়দার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
আল কায়দার এই সন্ধিক্ষণে আদেল ছাড়াও আরও অনেকের নাম উঠে আসছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন আবদ আল রহমান আল মাঘরিবি, ইয়াসিন আল সুরি এবং আবু আবদুল করিম আল খোরাসানির মতো নেতা। এঁদের মধ্যে ইতিমধ্যেই আল মাঘরিবির মাথার দাম ৫৫ কোটি টাকা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। তাঁর ঘাড়েও সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আল কায়দার প্রধান হওয়া মানে আসলে ‘কাঁটার মুকুট’ মাথায় তোলা। আমেরিকার কড়া নজর রয়েছে আল কায়দার ছোট থেকে বড় সমস্ত উত্থানপতনের দিকে। পাশাপাশি আইএসআইএসের মতো সংগঠনের সঙ্গে তীব্র সঙ্ঘাতের আবহও রয়েছে। ফলে এই সময়ে ওই জঙ্গি সংগঠনে নেতৃত্বের সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তাঁদের মতে, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকায় বহু জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। সেই সংগঠনগুলি আল কায়দার মতো সন্ত্রাসবাদকে ‘আন্তর্জাতিক’ পর্যায়ে নিয়ে যেতে নারাজ। বরং তারা অর্থ-সময় ‘খরচ’ করে স্থানীয় ইস্যুতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy