বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বৃহস্পতিবার বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা খারিজ করে দিলেন আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবরা। তাঁদের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতাদের তরফে সমাজমাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে।
মঞ্চের অন্যতম সমন্বয়কারী সারজিস আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এক দিকে গুলি আর লাশ, অন্য দিকে সংলাপ! আমার ভাইয়ের রক্তের উপর দিয়ে কী ভাবে সংলাপ হতে পারে?’’ আর এক সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘রক্ত মাড়িয়ে সংলাপ নয়।’’ মঞ্চের অন্যতম নেতা আসিফ মাহমুদের মন্তব্য, ‘‘গুলির মুখে কোনও সংলাপ হয় না। এই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করার চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়।’’
আরও পড়ুন:
এক ধাপ এগিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ সালেহিন অয়নের হুঁশিয়ারি—‘‘রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে কখনও কাউকে আলোচনায় বসতে দেব না।’’ প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, নীতিগত বিষয়ে আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সমর্থন রয়েছে সরকারের।
সাংবাদিক বৈঠকে আনিসুল বলেন, ‘‘আমরাও বর্তমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে নীতিগত ভাবে সহমত। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাকে এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে বসব। তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) যখনই বসতে চাইবেন, তা যদি আজ হয়, তা হলে আজই বসতে রাজি আছি আমরা।’’ কিন্তু রাতেই প্রস্তাব খারিজের বার্তা আসে আন্দোলনকারীদের তরফে।
আরও পড়ুন:
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবারের ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ (কমপ্লিট শাটডাউন) কর্মসূচির মধ্যে হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি বৃহস্পতিবার ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছ। মঙ্গলবারের ছ’জনের মৃত্যুর সংখ্যা যোগ করলে মোট নিহতের সংখ্যা হচ্ছে ১৯। পিটিআই বৃহস্পতিবার ১৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তাদের হিসাবে মোট মৃতের সংখ্যা ২৫। অন্য দিকে, এএফপি জানাচ্ছে, বাংলাদেশে কোটা-হিংসার বলি ৩২। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর হিসাব বলছে, হিংসায় সারা দেশে ১৯ জন নিহতের খবর মিলেছে।
(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল বাংলাদেশে ‘সংরক্ষণ বিরোধী’ আন্দোলন হচ্ছে। আদতে বাংলাদেশে এই আন্দোলন হচ্ছে কোটা সংস্কারের দাবিতে। আমরা সেই ভ্রম সংশোধন করেছি। অনিচ্ছাকৃত ওই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী)