প্রতীকী ছবি।
সোমবার রাতে ঘড়ির কাঁটা বারোটা পেরোতেই নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। ব্রিটেনের বাকি অংশের আইনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে গর্ভপাতকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হল দেশের এই অংশেও। এত দিন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে প্রায় সব ক্ষেত্রেই গর্ভপাত নিষিদ্ধ ছিল। শুধু মায়ের প্রাণসঙ্কট বা তাঁর ঘোর মানসিক সঙ্কটের (যেমন ধর্ষিতার ক্ষেত্রে) আশঙ্কা থাকলে সম্মতি মিলত।
১৯৬৭ সাল থেকে ব্রিটেনের বাকি তিন অংশ, অর্থাৎ ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডে যে গর্ভপাত আইন চালু রয়েছে তা যথেষ্ট শিথিল। কিন্তু এত দিন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সেই আইনের আওতায় পড়ত না। সোমবার রাত পর্যন্ত এই আইন আনায় বাধা দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান এখানকার এক দল আইনপ্রণেতা। সফল হননি। আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে যাতে এই এলাকার মহিলারা গর্ভপাত সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা পান, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার।
গর্ভপাতকে আইনি বৈধতা দেওয়ায় খুবই খুশি দেশের অধিকাংশ মহিলা। কোনও কারণে গর্ভপাতের প্রয়োজন হলে তাঁদের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বাইরে যেতে হত। যাঁদের যথেষ্ট টাকাপয়সা নেই, তাঁরা বেআইনি ও বিপজ্জনক ওষুধ এবং হাতুড়ের দ্বারস্থ হতেন। যেমন ৩৯ বছর বয়সি কেলি টার্টল। তাঁর কথায়, ‘‘গর্ভপাতের প্রয়োজন হওয়ায় আমি প্রথমে কিছু বেআইনি ওষুধ খাই। তাতে কোনও কাজ না হওয়ায় ক্রেডিট কার্ডে বিমানের টিকিট কেটে ইংল্যান্ডে যাই। সেখানকার হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা খুব ভাল ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু আমার সঙ্গে আত্মীয়-বন্ধু কেউ না থাকায় একা একা খুব ভয় করছিল। খালি মনে হচ্ছিল, এ ভাবে লুকিয়ে-চুরিয়ে না করে যদি বাড়ির কাছে কোনও হাসপাতালে যেতে পারতাম, কত ভাল হত।’’
এ বছরের গোড়া থেকে মায়ের প্রাণসঙ্কটের আশঙ্কার মতো একগুচ্ছ ক্ষেত্রে গর্ভপাতকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের পড়শি স্বাধীন রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ডেও। তা ছাড়া, নতুন আইন মোতাবেক গর্ভধারণের ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত কোনও কারণ না দেখিয়েই গর্ভপাত করা যাবে। এর আগে পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে গর্ভপাত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। ২০১২ সালে গর্ভপাত না করাতে পেরে মারা যান ভারতীয় বংশোদ্ভূত দন্তচিকিৎসক সবিতা হলপ্পানভর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy