— প্রতীকী চিত্র।
অতি উৎপাদনের জেরে এ বার বহু চাষিকে ১-২ টাকায় ফুলকপি বিক্রি করতে হয়েছে। অভাবি বিক্রি ঠেকাতে কালনা, পূর্বস্থলী ১, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে চাষিদের থেকে সরাসরি ন্যূনতম পাঁচ টাকা দরে ফুলকপি কিনছে কৃষি বিপণন দফতর। চাষিদের দাবি, অভাবি বিক্রি তাঁদের কাছে নতুন নয়। অতি ফলনে বাঁধাকপি, টোম্যাটোর মতো অনেক আনাজের দাম তলানিতে ঠেকে। পচে যাওয়ার আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়। হিমঘর থাকলে অভাবি বিক্রি ঠেকানো সম্ভব।
জেলার ‘আনাজ ভান্ডার’ বলা হয় পূর্বস্থলীর দুই ব্লককে। কালনা ১-২ এবং জেলার আরও কয়েকটি ব্লকেও বেড়েছে আনাজ চাষ। চাষিরা আনাজ পাইকারি বাজারে আনেন। আড়তদারদের মাধ্যমে ফড়েরা সে সব কিনে রাজ্য এবং ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যান। শুধু পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাইকারি বাজারগুলি থেকে শীতে কয়েক ট্রাক আনাজ যায় বিভিন্ন বাজারে।
চাষিদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু সময় আনাজ নষ্ট হয়। বিমা না থাকায় ক্ষতিপূরণ মেলে না। আবার আবহাওয়া ভাল হলে উৎপাদন বাড়ে। বাজারে জোগান বেড়ে গেলে দর কমে যায়। তখন অভাবি বিক্রি শুরু হয়।
বদরুদ্দিন শেখ নামে এক চাষি বলেন, ‘‘এক সঙ্গে প্রচুর চাষি আনাজ তুলতে শুরু করলে দাম কমে যায়। লোকসান জেনেও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে ফসল বিক্রি করতে হয়। ফসল বিক্রি করতে সমস্যা হলে গবাদি পশুদের খাইয়ে দেওয়া হয়। হিমঘর থাকলে আনাজ সংরক্ষণ করা যেত। সরকার এই কাজ করলে চাষিরা উপকৃত হবেন।’’
প্রসূন ঘোষ নামে এক চাষির কথায়, ‘‘ফুলকপির পাশাপাশি বাঁধাকপির দামও এ বার তলানিতে ঠেকেছে। কেজি প্রতি বাঁধাকপির দর নেমেছে দু’টাকায়। অন্য আনাজের দরও কম। এ রকম সঙ্কটের সময়ে হিমঘর থাকলে ভাল হত। সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবুক।’’
বাম জমানার শেষের দিকে কালনার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কমপ্লেক্সে একটি হিমঘর তৈরি হয়েছিল। ট্রান্সফর্মার, শীতলীকরণ যন্ত্র বসলেও শেষ পর্যন্ত সেটি চালু হয়নি। এখন বিষয়টি বিচারাধীন। পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ফলেয়ায় একটি সমবায় সমিতির উদ্যোগে আনাজের হিমঘর তৈরির কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল জানিয়েছেন, আনাজের হিমঘর তৈরির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।
সম্প্রতি পূর্বস্থলী ২ ব্লকে কৃষি মেলার উদ্বোধনে এসে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘এই ব্লকে আম, কুল, পেয়ারার পাশাপাশি প্রচুর আনাজের ফলন হয়। এখানে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র হলে উপকৃত হবেন বহু মানুষ। চাষিরা ফসলের দাম পাবেন।’’
তবে আনাজের হিমঘর তৈরি নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। কৃষি বিপণন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সব আনাজ হিমঘরে সংরক্ষণ করা যায় না। ক্রেতারা টাটকা আনাজ পছন্দ করেন। হিমঘর তৈরি হলেও সেটি কতটা কাজে আসবে তা বলা মুশকিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy