শেষ যাত্রাও একসঙ্গে।
‘বরফি’ সিনেমার শেষ দৃশ্যটা মনে আছে? যেখানে অসুস্থ প্রবীণ রণবীরের পাশে এসে শুয়ে পড়েন বৃদ্ধা প্রিয়ঙ্কা, আর পরের দিন ভোরে দেখা যায় আর প্রাণ নেই তাঁদের দেহে। কিংবা নিকোলাস স্পার্কের গল্প থেকে তৈরি ‘দ্য নোটবুক’ সিনেমায় যে ভাবে হাতে হাত ধরা অবস্থায় মারা যান বৃদ্ধ দম্পতি? সিনেমার পর্দা থেকে উঠে আসা সেই ছবিই আবার ধরা দিল বাস্তবের দুনিয়ায়। হাসপাতালের বিছানাতেই হাতে হাত রেখে মারা গেলেন অস্ট্রেলিয়ার এক বৃদ্ধ দম্পতি।
৯২ বছর বয়সী ফ্রান্সিস আর্নেস্ট প্ল্যাটেল এবং তাঁর ৯০ বছর বয়সী স্ত্রী নরমা জুন প্ল্যাটেল দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত নানান অসুবিধায়। অ্যালঝাইমার্স রোগে ভুগছিলেন নরমা। ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। কোমরের হাড় ভেঙে সেই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তাঁর স্বামী ফ্রান্সিস। পাশাপাশি বেডে যেন সাজিয়ে তুলেছিলেন শেষবেলার সংসার। জীবনের সত্তরটা বছর একই সঙ্গে কাটিয়েছেন। প্রত্যেকটা মুহূর্তে একজন ছিলেন আরেকজনের পাশে। ভাগ করে নিয়েছেন জীবনের সমস্ত সুখ-দুঃখ। তাই একসঙ্গে থাকার অভ্যেসটা ছাড়তে পারেন নি বোধহয় তাঁরা। সিনেমার পর্দাকেও হার মানিয়ে, হাসপাতালের বিছানাতেই হাতে হাত রেখে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে গেলেন তাঁরা।
তাঁদের মেয়ে জানিয়েছেন যে, নরমা বড় পরিবারের মেয়ে ছিলেন। পড়াশোনা করেছিলেন কনভেন্ট স্কুলে। অন্য দিকে ফ্রান্সিস ছিলেন ছাপোষা পরিবারের ছেলে। কিন্তু একে অন্যকে চিঠি লিখতেন নিয়মিত। সে ভাবেই প্রেমের শুরু তাঁদের। অসুস্থ অবস্থায় যাতে তাঁরা একই সঙ্গে থাকতে পারেন, তাই তাঁদের হাসপাতালে একই ঘরে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: শীতকাল কবে যাবে, সুপর্ণা
হাসপাতালেই হঠাৎ একদিন নরমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। সেই দেখে চঞ্চল হয়ে ওঠেন ফ্রান্সিসও। দায়িত্বে থাকা নার্স পরিদর্শনে এসে দেখেন যে, আর প্রাণ নেই দু’জনের কারুর দেহেই। শুধু হাতে ধরে থাকা হাত ছেড়ে দেননি তাঁরা শেষ মুহূর্তেও। প্রবীণ এই দম্পতির ভালবাসার কাহিনী এখন চর্চায় সারা পৃথিবীতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy