Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পর্দায় রুশ বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন আইজেনস্টাইনরা

ঋত্বিক ঘটকের ভাষায়, ভাগ্যিস দুর্দান্ত শীতের রাতে এঁরা ঝগড়া করেছিলেন তাই আমরা করে খেতে পারছি। লিখছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ঋত্বিক ঘটকের ভাষায়, ভাগ্যিস দুর্দান্ত শীতের রাতে এঁরা ঝগড়া করেছিলেন তাই আমরা করে খেতে পারছি। লিখছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ১৮:৩৬
Share: Save:

আজ যখন সোভিয়েত ইউনিয়নের ভৌগোলিক অস্তিত্বই লুপ্ত হয়েছে, তখন আজ থেকে একশো বছর আগে হিমের রাতে শীতপ্রাসাদের উপর থেকে ওই গগনের দীপগুলিরে লেনিন ও তাঁর সহকর্মীরা কী ভাবে দেখেছিলেন সে কথা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। এমন কাব্যও করা যেতে পারে যে থর থর করি কাঁপিছে ভূধর/শিলা রাশি রাশি পড়িছে খসে, কিন্তু দেখা যাবে একই সঙ্গে সিনেমার পর্দাতেও অন্য রকম আলো এসেছিল। সেই আলোক বিচ্ছুরণ শুধু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আখ্যান নয়, বরং সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও এক গুণবাচক পরিবর্তন। এমন নয় যে রুশ চলচ্চিত্র নেহাতই দিনবদলের পালা রূপায়িত করেছিল। আরও বড় সত্য হল যে আইজেনস্টাইন, পুদভকিন, জিগা ভেরতভ বা দভচেঙ্কো প্রমুখ চলচ্চিত্রকর্মী সিনেমার জন্য এক নতুন ভাষা আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন। আজ এত দিন পরে মনে হয়, সিনেমাতে আভিজাত্য দেওয়ার এত বড় প্রয়াস বিশ শতকর শুরুতে আর নেওয়া হয়নি।

কী ছিল চলচ্চিত্র? সিনেমা বলতে বোঝাত, গতিশীল এবং আলোকিত চিত্রমালা। নির্বাক যুগে ছোট সুখ, ছোট দুঃখ, ছোট রোমাঞ্চকে জড়িয়ে ধরে আখ্যানমঞ্জরী। লুমিয়ের-মেলিয়ে-পোর্টার-গ্রিফিথ পর্যন্ত ঐতিহ্যটি এ রকমই। একটা গল্পকে বলে যাওয়ার ক্ষমতা বা সেই আখ্যানে আমোদ ও তামাশার সুর ছড়িয়ে দেওয়া। সারা পৃথিবীতে চলমান চিত্রমালার এমন কোনও সম্মান ছিল না। শিল্পের সংসারের বাইরের আঙিনায় সে ছিল বড়জোর বিনোদন পটিয়সী জনপদ-বধূ। না বিদেশের ম্যাক্সিম গোর্কি বা মার্সেল প্রুস্ট, না এ দেশের রবীন্দ্রনাথ, ছায়াছবিকে খুব গুরুত্ব দিতে রাজি ছিলেন। কিন্তু, রুশ চলচ্চিত্রের মহিমা প্রথম আন্তর্জাতিক ভাবে সিনেমাকে আভিজাত্য দেয়। না হলে আর জেমস জয়েস আইজেনস্টাইনকে, ক্ষণিকের সাক্ষাৎকারে, জানাবেন কেন যে তাঁর ‘টিউলিসিস’ উপন্যাসের যদি চিত্ররূপ হয় তবে তা সম্ভব হবে একমাত্র আইজেনস্টাইনের সৌজন্যেই। রবীন্দ্রনাথ বিদেশ ভ্রমণের সময় ছবি বিশেষ দেখতেন না। কিন্তু রাশিয়ায় ‘ব্যাটলশিপ পটেমকিন’ নামের ছবিটি তাঁকে যে আকর্ষণ করেছিল তার নির্দিষ্ট প্রমাণ আছে।

আইজেনস্টাইন

এ কথা বলতেই হবে যে বিপ্লবোত্তর সোভিয়েত রাশিয়ায় চলচ্চিত্র বিকাশের একটি জরুরি তাগিদ ছিল। লেনিনই বিশ শতকের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি ঘোষণা করেন, ‘‘চলচ্চিত্রই আমাদের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পরূপ।’’ রুশ মার্কসবাদীদের উদ্যোগে পৃথিবীর প্রথম চলচ্চিত্র শিক্ষায়তন ‘ভিজিআইকে’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু হয় প্রশিক্ষিত চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রয়াস। সিনেমা যে শুধুই যে ছবির পর ছবি সাজিয়ে গল্প বলার নয়, তাকে দিয়ে আরও বড় কাজ করানো যায়, এ কথা কুলেশভ বা আইজেনস্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন। হয়েছিল কি, অক্টোবর বিপ্লবের পরে পরেই মার্কিন চলচ্চিত্রকার গ্রিফিথের ‘ইনটলারেন্স’ ছবিটি চোরাপথে মস্কোয় ঢোকে। জনশ্রুতি, লেনিন নিজে ছবিটি দেখেন ও মুগ্ধ হন। স্বভাবতই রুশ চলচ্চিত্রকারেরা, বিশেষত আইজেনস্টাইন যখন ছবিটি দেখেন তাঁরা মার্কসবাদী দার্শনিক আনুগত্য থেকেই অন্য একটি সত্য আবিষ্কার করেন যে, মার্কিন সিনেমা ইতিহাসের কথা বলতে বলতে শেষ পর্যন্ত ব্যক্তির কথা বলে। তাই তাদের উচিত হবে ব্যক্তির কথা বলতে গিয়েও ইতিহাসের কথা বলা। অর্থাৎ, গীতিকাব্য লেখার বদলে মহাকাব্য রচনা। আজকের পাঠককে একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। ‘ব্যাটলশিপ পটেমকিন’ ও ‘টাইটানিক’, দু’টি ছবিই জাহাজের কথা বলে। প্রথম ছবিতে আইজেনস্টাইন গল্পের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তাকে নিয়ে যান গণ-শিল্পের মোহনায়। আর দ্বিতীয় ছবিটি দীর্ঘ দিন বাদে হলিউড থেকে তৈরি হয়, সে ইতিহাস থেকে শুরু করে ঠিকই, কিন্তু গল্পটি পরিণতি পায় এক যুবক ও যুবতীর প্রেমগাঁথায়। ব্যক্তি ও সমষ্টিকে দেখার এই যে ভিন্ন ভিন্ন চোখ, দেখার এই রকমফের, রুশ চলচ্চিত্রের অবদান। রুশ পরিচালকরাই প্রথম সিনেমাকে আখ্যানের বদলে সন্দর্ভ করে তোলেন। ১৯৬৯ সালে ফরাসি নবতরঙ্গের প্রধান প্রবক্তা জাঁ লুক গদারের যে সমবায় ভেরতক গোষ্ঠী নামে গড়ে ওঠে তা এক ভাবে দেখলে রুশ চলচ্চিত্রের বক্তব্যধর্মীতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।

কিন্তু আসলে মার্কসবাদের একটি মূল সূত্র অবলম্বন করে আইজেনস্টাইন সিনেমার অর্থ নির্মাণের প্রক্রিয়াটাই পাল্টে দিলেন। মার্কসবাদের প্রাথমিক পাঠ তাঁকে জানিয়েছিল, ডায়ালেক্টিকসের রহস্য। থিসিস ও অ্যান্টি থিসিস, তত্ত্ব ও প্রতি তত্ত্ব মিলিত হলে যা উদ্ভূত হয় তা এক ধরনের সমন্বয় বা সিন্থেসিস হতে পারে, কিন্তু তাতে আদি উপকরণগুলির দেখা মেলে না। রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞানে মার্কসীয় দন্দ্ববাদের এই সূত্র আইজেনস্টাইন চলচ্চিত্রে প্রয়োগ করে দেখালেন যে দু’টি শটকে যোগ না করে যদি সংঘর্ষের অবস্থানে রাখা যায় তা হলে তৃতীয় যে অর্থটি প্রকাশিত হবে তা সামান্য যোগফলের থেকে বেশি। সোজা কথায়, ক+খ=গ হবে না, অন্তত আইজেনস্টাইন তা-ই চান।

 

একটু সাহস করে বলতে চাই, সিনেমা যে সবচেয়ে বাস্তবধর্মী শিল্প, সেই ভাবনায় একটু ফাটল ঝরালেন আইজেনস্টাইন। তিনি প্রথম অ-বাস্তব চলচ্চিত্র বা বাস্তব-অতিরিক্ত শিল্পের কথা ভাবলেন সিনেমার পর্দায়। সিনেমা আধুনিক হয়ে উঠল। যে ভাবে পিকাসো বাস্তব উপকরণ নিয়ে বাস্তবের প্রচলিত ধারণাকে আঘাত করেন, যে ভাবে জয়েস ইংরেজি ভাষার প্রচলিত কাঠামো ভেঙে ফেলে ‘ইউলিসিস’-এর মতো উপন্যাস লেখেন, সে ভাবেই আইজেনস্টাইন দেখাকে চাইলেন যে সিনেমার কাজ আকাশ দেখানো নয়, জীবনান্দের ভাষায়, আকাশের ও পারের আকাশটাকে আবিষ্কার করতে হয়। এই সমস্ত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল নানা রকম গবেষণার ফলে। যেমন জাপানি কাবুকি নাচের পোস্টার দেখে আইজেনস্টাইন লক্ষ্য করেন, জাপানি হরফ কি অসামান্য চিত্রধর্মী। তা কত সংহত ভাবে সৌন্দর্যের মর্মে পৌঁছতে পারে। ভাবলে অবাক হতে হয়, জাপানি ‘হাইকু’ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও আইজেনস্টাইনের বক্তব্য প্রায় এক। সুতরাং, আইজেনস্টাইনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল সংঘর্ষ বা বিরোধিতার মধ্য দিয়ে (যাকে তিনি বলতেন কলিশন বা কনফ্লিক্ট) বিশ্বের ব্যাঞ্জনাকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। সমাজবিকাশে যেমন অগ্রগতি হয়, আইজেনস্টাইন চাইছিলেন চলচ্চিত্র ভাষারও এই ধরনের অগ্রগতি। অবশ্য এখানে বলা উচিত, কুলেশভ বা পুদভকিন প্রমুখ চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনের এই সংঘর্ষের তত্ত্বের সঙ্গে সহমত হননি। তাঁরা তুলনায় শটের সংযোগ বা লিঙ্কেজ-এ বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু নিজেদের মধ্যে তাঁরা যে তর্ক-বিতর্ক করলেন তাতে চলচ্চিত্র ভাষার শিশুটি ক্রমেই রূপবান হয়ে উঠল। আর আমাদের ভুললে চলবে না যে ‘ম্যান উইথ দ্য মুভি ক্যামেরা’ জাতীয় ছবিতে জিগা ভেরতভ চোখে দেখা আর ক্যামেরায় দেখা যে কত পার্থক্যের তা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন। অন্য দিকে, দভচেঙ্কো তর্কের বাইরে কবিতার এক বিরাট চিত্রভূমির সন্ধান দিলেন।

একটু সাহস করে বলতে চাই, সিনেমা যে সবচেয়ে বাস্তবধর্মী শিল্প, সেই ভাবনায় একটু ফাটল ঝরালেন আইজেনস্টাইন। তিনি প্রথম অ-বাস্তব চলচ্চিত্র বা বাস্তব-অতিরিক্ত শিল্পের কথা ভাবলেন সিনেমার পর্দায়। সিনেমা আধুনিক হয়ে উঠল। যে ভাবে পিকাসো বাস্তব উপকরণ নিয়ে বাস্তবের প্রচলিত ধারণাকে আঘাত করেন, যে ভাবে জয়েস ইংরেজি ভাষার প্রচলিত কাঠামো ভেঙে ফেলে ‘ইউলিসিস’-এর মতো উপন্যাস লেখেন, সে ভাবেই আইজেনস্টাইন দেখাকে চাইলেন যে সিনেমার কাজ আকাশ দেখানো নয়, জীবনান্দের ভাষায়, আকাশের ও পারের আকাশটাকে আবিষ্কার করতে হয়। এই সমস্ত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল নানা রকম গবেষণার ফলে। যেমন জাপানি কাবুকি নাচের পোস্টার দেখে আইজেনস্টাইন লক্ষ্য করেন, জাপানি হরফ কি অসামান্য চিত্রধর্মী। তা কত সংহত ভাবে সৌন্দর্যের মর্মে পৌঁছতে পারে। ভাবলে অবাক হতে হয়, জাপানি ‘হাইকু’ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও আইজেনস্টাইনের বক্তব্য প্রায় এক। সুতরাং, আইজেনস্টাইনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল সংঘর্ষ বা বিরোধিতার মধ্য দিয়ে (যাকে তিনি বলতেন কলিশন বা কনফ্লিক্ট) বিশ্বের ব্যাঞ্জনাকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। সমাজবিকাশে যেমন অগ্রগতি হয়, আইজেনস্টাইন চাইছিলেন চলচ্চিত্র ভাষারও এই ধরনের অগ্রগতি। অবশ্য এখানে বলা উচিত, কুলেশভ বা পুদভকিন প্রমুখ চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনের এই সংঘর্ষের তত্ত্বের সঙ্গে সহমত হননি। তাঁরা তুলনায় শটের সংযোগ বা লিঙ্কেজ-এ বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু নিজেদের মধ্যে তাঁরা যে তর্ক-বিতর্ক করলেন তাতে চলচ্চিত্র ভাষার শিশুটি ক্রমেই রূপবান হয়ে উঠল। আর আমাদের ভুললে চলবে না যে ‘ম্যান উইথ দ্য মুভি ক্যামেরা’ জাতীয় ছবিতে জিগা ভেরতভ চোখে দেখা আর ক্যামেরায় দেখা যে কত পার্থক্যের তা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন। অন্য দিকে, দভচেঙ্কো তর্কের বাইরে কবিতার এক বিরাট চিত্রভূমির সন্ধান দিলেন।

একটু সাহস করে বলতে চাই, সিনেমা যে সবচেয়ে বাস্তবধর্মী শিল্প, সেই ভাবনায় একটু ফাটল ঝরালেন আইজেনস্টাইন। তিনি প্রথম অ-বাস্তব চলচ্চিত্র বা বাস্তব-অতিরিক্ত শিল্পের কথা ভাবলেন সিনেমার পর্দায়। সিনেমা আধুনিক হয়ে উঠল। যে ভাবে পিকাসো বাস্তব উপকরণ নিয়ে বাস্তবের প্রচলিত ধারণাকে আঘাত করেন, যে ভাবে জয়েস ইংরেজি ভাষার প্রচলিত কাঠামো ভেঙে ফেলে ‘ইউলিসিস’-এর মতো উপন্যাস লেখেন, সে ভাবেই আইজেনস্টাইন দেখাকে চাইলেন যে সিনেমার কাজ আকাশ দেখানো নয়, জীবনান্দের ভাষায়, আকাশের ও পারের আকাশটাকে আবিষ্কার করতে হয়। এই সমস্ত প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল নানা রকম গবেষণার ফলে। যেমন জাপানি কাবুকি নাচের পোস্টার দেখে আইজেনস্টাইন লক্ষ্য করেন, জাপানি হরফ কি অসামান্য চিত্রধর্মী। তা কত সংহত ভাবে সৌন্দর্যের মর্মে পৌঁছতে পারে। ভাবলে অবাক হতে হয়, জাপানি ‘হাইকু’ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ও আইজেনস্টাইনের বক্তব্য প্রায় এক। সুতরাং, আইজেনস্টাইনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল সংঘর্ষ বা বিরোধিতার মধ্য দিয়ে (যাকে তিনি বলতেন কলিশন বা কনফ্লিক্ট) বিশ্বের ব্যাঞ্জনাকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। সমাজবিকাশে যেমন অগ্রগতি হয়, আইজেনস্টাইন চাইছিলেন চলচ্চিত্র ভাষারও এই ধরনের অগ্রগতি। অবশ্য এখানে বলা উচিত, কুলেশভ বা পুদভকিন প্রমুখ চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনের এই সংঘর্ষের তত্ত্বের সঙ্গে সহমত হননি। তাঁরা তুলনায় শটের সংযোগ বা লিঙ্কেজ-এ বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু নিজেদের মধ্যে তাঁরা যে তর্ক-বিতর্ক করলেন তাতে চলচ্চিত্র ভাষার শিশুটি ক্রমেই রূপবান হয়ে উঠল। আর আমাদের ভুললে চলবে না যে ‘ম্যান উইথ দ্য মুভি ক্যামেরা’ জাতীয় ছবিতে জিগা ভেরতভ চোখে দেখা আর ক্যামেরায় দেখা যে কত পার্থক্যের তা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন। অন্য দিকে, দভচেঙ্কো তর্কের বাইরে কবিতার এক বিরাট চিত্রভূমির সন্ধান দিলেন।

ভাষায় যেমন শব্দ দিয়ে বাক্য, বাক্য থেকে পরিচ্ছেদ, তেমন ভাবেই শট সাজিয়ে কী ভাবে দৃশ্যমালা রচনা করতে হয় তা গ্রিফিথ আমাদের আগেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রিফিথের এই মন্তাজ তত্ত্ব কী ভাবে বহুস্তরীয় ও বহুস্বরীয় হতে পারে তা রুশ চলচ্চিত্র বেত্তারা জানালেন। ঋত্বিক ঘটকের ভাষায়, ভাগ্যিস দুর্দান্ত শীতের রাতে এঁরা ঝগড়া করেছিলেন তাই আমরা করে খেতে পারছি। সত্যি কথাই যে সারা পৃথিবীতে যে প্রান্তেই আজ চলচ্চিত্র তৈরি হোক, তার রন্ধন প্রণালী শেষ পর্যন্ত খুঁজে পায় আইজেনস্টাইনের মন্তাজ-ম্যানুয়াল। এই একশো বছর লেনিন শতাব্দী কি না সে বিষয়ে সংশয় থেকে যেতে পারে, কিন্তু চলচ্চিত্র রচনায় আইজেনস্টাইন ও তাঁর সহকর্মীদের অসামান্য অবদান ইতিহাস কখনওই ভুলে যাবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Russian Revolution Russia Sergei Eisenstein
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE