প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো একটি বই। তা নিয়ে সম্প্রতি চলেছে কাঁটাছেড়া। আর তা করতে গিয়েই শিউরে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ বইটি বাঁধানো হয়েছে মানুষের চামড়া দিয়ে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার থেকে সম্প্রতি এমন একটি বই উদ্ধার করেছেন বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তাঁরা নিশ্চিত যে কোনও মানুষের চামড়া দিয়েই বাঁধানো হয়েছে বইটি। আর তার পরই শুরু হয়েছে শোরগোল। বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউটন পাঠাগারে ১৯৩৪ সাল থেকে রয়েছে ফরাসি লেখক আরসেন হুসেইর লেখা ‘দে দেসতিনে দো লোম’ বইয়ের একটি সংস্করণ। হাউটন পাঠাগারের ব্লগেই জানানো হয়েছে বইটির ইতিহাস।
আর সেই ইতিহাসই বলছে, আঠারোশো আশির মাঝের দিকে বইটি লিখেছিলেন আরসেন। তার পর সেটি উপহার দেন তাঁরই এক ডাক্তার বন্ধুকে। নাম, লুডোভিক বুল্যান্ড। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। গোলমাল বাধে তার পর। নিজেরই কোনও এক মৃত রোগীর চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধিয়ে ফেলেন বুল্যান্ড। ব্লগের তথ্য অনুযায়ী, সম্ভবত সেটি ছিল বুল্যান্ডের এক মহিলা মানসিক রোগীর মৃতদেহ। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মহিলার কোনও আত্মীয় তাঁর দেহ দাবি করতে না-আসায় আরসেনের লেখা বইটি তাঁরই চামড়া দিয়ে বাঁধিয়ে ফেলেন বুল্যান্ড। বইটির কভারে নিজের কাজের ব্যাখ্যাও দেন ওই চিকিৎসক। লেখেন, “মানুষের আত্মার উপর লেখা বইয়ে মানুষের চামড়ার মোড়ক তো থাকাই উচিত।”
আপাতত সেই চামড়ার বই নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে হার্ভার্ডে। তবে ঐতিহাসিকরা বলছেন, মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধানোটা নতুন বিষয় নয়। অ্যানথ্রোপোডারমিক বিবলিওপেগি নামে পরিচিত এই রীতি সতেরো শতক পর্যন্ত প্রচলিত ছিল। পরে ধীরে ধীরে তা লোপ পায়। তবে পুরোপুরি নয়। মানুষের চামড়ার জায়গায় বই বাঁধানো শুরু হয় ভেড়া, ছাগল বা অন্য পশুর চামড়া দিয়ে। আরসেনের বইটি নিয়েও প্রথমে সন্দিহান ছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো কোনও পশুর চামড়া দিয়ে বাঁধানো হয়েছে বইটি। কিন্তু বিস্তর পরীক্ষার পরে তাঁরা মানুষের চামড়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy