ইবোলা ভাইরাসের হানায় পশ্চিম আফ্রিকার চার দেশে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫৫২ জনের। যদিও প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে সেই সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র আশ্বাস, আগামী তিন মাসের মধ্যে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তবে একই সঙ্গে তাদের এটাও আশঙ্কা যে, তত দিনে হয়তো ইবোলা ভাইরাস ডিজিজে আক্রান্তের সংখ্যাটা ছুঁয়ে ফেলবে ২০ হাজারের কোঠা।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বিভিন্ন উড়ান সংস্থা ইবোলা আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে বিমান যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ায়। সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে পড়শি দেশগুলোও। ফলে হু-র স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছতেই পারছেন না আফ্রিকার ওই চার দেশে। লাইবেরিয়া, গিনি, সিয়েরা লিয়ন ও নাইজেরিয়ায় ওষুধ কিংবা চিকিৎসার সরঞ্জাম পাঠাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জকে।
ফরাসি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে আজ এয়ার ফ্রান্স ঘোষণা করেছে, ওই দেশগুলির সঙ্গে বিমান যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রাখবে তারা। এয়ার মরক্কোও পড়শি দেশগুলোতে একটার বেশি উড়ান চালাতে নারাজ। গত কালই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ জানিয়ে দিয়েছে, সিয়েরা লিয়ন ও লাইবেরিয়ায় উড়ান পুরোপুরি বন্ধ করে দিচ্ছে তারা। জানুয়ারির আগে নতুন করে যাত্রা শুরুর কোনও চিন্তাভাবনাই নেই। লাইবেরিয়ার অবস্থাই সব চেয়ে খারাপ। হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত সে দেশে মারা গিয়েছেন ৬২৪ জন। অনেকেরই মতে, আসল সংখ্যাটা আরও ভয়াবহ। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগও জানাচ্ছে, সব মিলিয়ে ১৫৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলা হলেও সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি।
কিন্তু রোগের ভয়ে দেশগুলোকে এ ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে উড়ান সংস্থাগুলোর উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপুঞ্জের ইবোলা বিষয়ক দূত ডেভিড নাবারো। তাঁর কথায়, “বহির্বিশ্বের থেকে ওই চারটি দেশকে এ ভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষে কাজ করাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।” ব্রাসেলস এয়ার লাইন্সের তিন-চারটে উড়ান প্রতিদিন যাতায়াত করত লাইবেরিয়া, গিনিতে। কিন্তু সম্প্রতি পড়শি রাষ্ট্রগুলো সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় পিছু হটেছে তারাও।
এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসার সরঞ্জামই বা কী ভাবে ওই চার দেশে পৌঁছবে? রাষ্ট্রপুঞ্জ সে প্রশ্ন তুললে ব্রাসেলস এয়ার লাইন্স জানিয়েছে, সে জন্য আলাদা বিমানের ব্যবস্থা করবে তারা। কিন্তু নিয়মিত উড়ান সফর চালু রাখতে তারা নারাজ। মরক্কো উড়ানসংস্থাই একমাত্র দিনে একটা করে উড়ান চালু রেখেছে। সংস্থার মুখপাত্রের কথায়, “যাত্রী হয় না বললেই চলে। ৯০ শতাংশ আসনই ভরে না। তবে আর্থিক লাভক্ষতি কথা মাথায় না রেখে শুধুমাত্র দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy