হোলিতে ছুটির প্রশ্নে হাইকোর্টে দু’ভাগ হয়ে গেলেন আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার দোলযাত্রায় কলকাতা হাইকোর্ট ও রাজ্য সরকারের ছুটি। কিন্তু শুক্রবার হোলি উপলক্ষে রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করলেও হাইকোর্ট চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তকে সমর্থনও করছেন আইনজীবীদের একটি অংশ। কিন্তু হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন চিঠি দিয়ে প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে জানিয়ে দিয়েছে, আইনজীবীরা হোলির দিনে আদালতমুখো হবেন না।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, প্রধান বিচারপতি এই ছুটির দাবির সঙ্গে একমত নন। তিনি চান, হাইকোর্ট সে দিন খোলা থাকুক। হাইকোর্টের সূত্রটি এ-ও জানাচ্ছে, আইনজীবীরা কী করবেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার, তবে অন্য কাজের দিনের মতো শুক্রবারও বিচারপতিরা এজলাসে বসবেন। বসবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চও।
তবে ছুটির পক্ষে সওয়াল করে বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রানা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “হাইকোর্টে পাবলিক প্রসিকিউটর, জিপি-র (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অফিস ছাড়াও পূর্ত দফতর-সহ আরও কয়েকটি দফতরে রাজ্য সরকারের কর্মীরা কাজ করেন। রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করায় তাঁরা শুক্রবার কাজে আসবেন না। সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টে স্বাভাবিক কাজ কী ভাবে হবে?”
তবে প্রবীণ আইনজীবীদের একটি অংশ বলছেন, ছুটি নিয়ে অন্য একটি অঙ্কও রয়েছে। হোলিতে আদালত বন্ধ থাকলে বৃহস্পতি-শুক্র-শনি-রবি, টানা চার দিন ছুটি মিলবে। সেটাই চাইছেন আইনজীবীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক লিখিত ভাবে প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন, ৬ মার্চ হাইকোর্ট খোলা থাকা নিয়ে এ দিন সাধারণ সভা ডাকা হয়েছিল। ওই দিন বার অ্যাসোসিয়েশন বন্ধ থাকার ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইনজীবীরা সে দিন কোনও মামলার শুনানিতে অংশ নেবেন না।
মতবিরোধ মেটাতে প্রধান বিচারপতি ও কয়েক জন প্রবীণ আইনজীবী বার অ্যাসোসিয়েশনকে একটি বিকল্প প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তা হল, হোলিতে বন্ধ থাকলে তার বদলে গরমকালে বা পুজোয়, কিংবা শীতের ছুটিতে এক দিন হাইকোর্ট খোলা রাখা হোক। কিন্তু সেই প্রস্তাব মানেনি বার অ্যাসোসিয়েশন।
প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য এর আগে আদালতেই জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকার ছুটি দিলেও, হাইকোর্ট চলে তার নিজস্ব ক্যালেন্ডার মেনে। এর আগে এক আইনজীবীর মৃত্যুতে আইনজীবীদের বড় একটি অংশ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করলেও, প্রধান বিচারপতি-সহ বেশ কয়েক জন বিচারপতি তাঁদের আদালত চালু রেখে নজির গড়েন। তাঁদের আদালতে শুনানিও করেন কয়েক জন আইনজীবী।
শুক্রবারও আইনজীবীদের একটি অংশ আদালতে সওয়াল করবেন বলে জানিয়েছেন। ওই সব আইনজীবীর মতে, হাইকোর্ট কড়া মনোভাব নিলেই এ ভাবে হুটহাট ছুটির রোগ বন্ধ হবে। তাঁরা বলছেন, মামলায় যে কোনও এক পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত থাকলেই শুনানি হোক। তা হলেই দূর থেকে আসা বিচারপ্রার্থীদের অনেককেই খালি হাতে ফিরে যেতে হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy