শীতের প্রার্থনা কতটা কী ছিল, জানা নেই। কিন্তু আগেভাগেই বসন্ত জাগ্রত দ্বারে! ক্যালেন্ডারে এখনও মাঘ মাস। তবু বাঘা শীতের বদলে দক্ষিণবঙ্গে জাঁকিয়ে বসছে বসন্তের আমেজ। এবং আগামী কয়েক দিনে এই আমেজ আরও বেশি করে মিলবে বলেই হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
বাংলার ক্যালেন্ডারে বসন্তের সূচনা ফাল্গুনে। সময়সীমা চৈত্রসংক্রান্তি পর্যন্ত। কিন্তু এ বার মাঘের কয়েক দিন বাকি থাকতে থাকতেই বসন্ত-সমাগম টের পাওয়া যাচ্ছে। বেলা যত বাড়ছে, রোদের মেজাজও চড়ছে। রাতে ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়ার বদলে বইছে দখিনা বাতাস। আর এ-সব দেখেই বসন্তের বার্তা দিচ্ছেন আবহবিদেরা। তাঁরা বলছেন, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দিনের বেলা তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠলেই দখিনা বাতাস ঢুকে পড়ে। আর তাতেই শোনা যায় বসন্তের আগমনী।
রবিবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও দিনের তাপমাত্রা চড়ছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ওই সব এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে। বাঁকুড়ায় এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি ছিল। শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ ডিগ্রি নেমে গেলে আবহবিজ্ঞানের পরিভাষায় সেটাকে বলা হয় শৈত্যপ্রবাহ। “একই ভাবে গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি উপরে উঠলে তাপপ্রবাহ বলা হয়। কিন্তু এখনও খাতায়-কলমে গরম না-পড়ায় তাপপ্রবাহ বলা যাবে না,” বললেন এক আবহবিদ।
আবহবিজ্ঞানে বর্ষা-বিদায়ের নির্ঘণ্ট আছে। শীতের ক্ষেত্রে তেমন কিছু নেই। শীত কি তা হলে গেলই?
দক্ষিণবঙ্গে বসন্তের পরিস্থিতি সেটাই জানিয়ে দিচ্ছে। যদিও উত্তর ভারতে রীতিমতো কাঁপুনি ধরাচ্ছে ঠান্ডা। দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রের খবর, পঞ্জাব, হরিয়ানার অনেক জায়গাতেই তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। এ দিন উত্তর ভারতের সমতল এলাকার মধ্যে সব থেকে কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে অমৃতসরে। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহবিজ্ঞানীরা জানান, কাশ্মীরে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আছড়ে পড়ছে। তার জেরেই উত্তর ভারতে ঠান্ডার এমন দাপট চলছে। আজ, সোমবার আরও একটি ঝঞ্ঝা কাশ্মীরে আছড়ে পড়তে পারে। তার জেরে উত্তর ভারতে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মৌসম ভবনের আবহবিদদের পূর্বাভাস।
কিন্তু উত্তরের শীতের প্রভাব দক্ষিণবঙ্গে পড়বে না বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। কারণ শীতের প্রার্থনা থাকুক না-থাকুক, উত্তর এসে গিয়েছে বসন্তের। আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণবঙ্গে হাওয়ার অভিমুখ ঘুরে গিয়েছে। ফলে উত্তুরে হাওয়া ঢোকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বরং শীত কাটিয়ে দক্ষিণবঙ্গ এ বার গরমের দিকেই এগোবে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “দক্ষিণবঙ্গে এ বার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকবে।” আগামী কয়েক দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে বলেই হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy