লোকসভা ভোটে লড়তে অনিচ্ছুক পশ্চিমবঙ্গের তিন বর্ষীয়ান নেতাকে বাদ রেখেই প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল কংগ্রেস।
দলের একাংশের প্রস্তাব ছিল, প্রাক্তন দুই প্রদেশ সভাপতি মানস ভুঁইয়া এবং আব্দুল মান্নান যথাক্রমে ঘাটাল ও শ্রীরামপুর থেকে প্রার্থী হোন। বর্ধমানের কোনও একটি কেন্দ্র থেকে লড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আর এক প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় ওই তিন নেতার নাম যেমন নেই, তেমনই ঘাটাল, শ্রীরামপুর বা বর্ধমানের আসনগুলিতেও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গের ১৭টি-সহ সারা দেশের মোট ১৯৪টি আসনে আজ প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। এই ১৭ জনের মধ্যে বর্তমান ৬ কংগ্রেস সাংসদ ফের নিজেদের কেন্দ্রেই প্রার্থী হচ্ছেন। এ ছাড়া, পাঁচ জন বিধায়ককেও লোকসভায় প্রার্থী করা হচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী চেয়েছিলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে সমস্ত বর্ষীয়ান নেতা ভোটে দাঁড়ান। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে ডায়মন্ড হারবার থেকে জেতা সোমেন মিত্র রাজি হলেও বিভিন্ন কারণে অনিচ্ছুক ছিলেন মানসবাবু, প্রদীপবাবু এবং মান্নান।
এর পর কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী প্রদেশ নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করা হবে না। কিন্তু নেতাদেরও সাহস করে ভোটে লড়তে হবে। এর পরে ওই তিন নেতা ভোটে লড়েন কি না, রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা ছিল তা নিয়ে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী ১২ তারিখ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাঁদের নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে। তবে দলের একাংশের মতে, রাজ্যসভা সাংসদ হিসেবে প্রদীপবাবুর এখনও তিন বছর মেয়াদ বাকি রয়েছে। তা পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁকে লোকসভায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হবে কি না, তা-ও ভেবে দেখা হচ্ছে।
রাজ্য থেকে যাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে এখন কিছুটা দোলাচল চলছে, সেই প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনের নামও এই তালিকায় নেই। প্রথমে জঙ্গিপুর বা মুর্শিদাবাদ থেকে লড়তে চাইলেও পরে অধীরের প্রস্তাব মেনে বসিরহাট-কৃষ্ণনগরের মতো কেন্দ্র থেকে লড়তে রাজি হয়েছিলেন আজহার। কিন্তু ইতিমধ্যে তিনি তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে বসেন। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, এতে কিছুটা ক্ষু্ণ্ণ হন প্রদেশ নেতৃত্ব। তবে
জয়ের নিশ্চয়তা না পেয়ে আজহারও এখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে লড়ার ব্যাপারে ততটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাঁর ভবিষ্যৎও পরবর্তী তালিকাই বলবে।
১৯৪ জনের প্রার্থী-তালিকায় কংগ্রেসের দুই চমক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ এবং ভারত সরকারের অভিন্ন পরিচয় সংখ্যা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানি। কাইফ দাঁড়াচ্ছেন একদা জওহরলাল নেহরুর নির্বাচনী কেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের ফুলপুর থেকে। নিলেকানির কেন্দ্র বেঙ্গালুরু দক্ষিণ। প্রথম প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী-সহ মোট ২৮ জন মহিলা (তাৎপযপূর্ণ ভাবে, বহু জল্পনা সত্ত্বেও প্রিয়ঙ্কা বঢরার নাম নেই)। তা নিয়ে বিজেপিকে খোঁচাও দিয়েছে কংগ্রেস। দলের তরফে বলা হয়েছে, “বিজেপির প্রথম দুই প্রার্থী তালিকায় মাত্র ১ জন মহিলা ছিলেন। আর আমাদের ২৮ জন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy