Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বদলি কমিশনের আধিকারিকও

পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠায় প্রথম দফায় রাজ্যের আট আইএএস-আইপিএস অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার রাজ্যের আরও এক আইএএস অফিসারকে সরিয়ে দিল কমিশন। তাদের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসে ওএসডি (অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি), ১৯৯২ সালের আইএএস বরুণ রায়কে উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর লোকসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হচ্ছে। নির্দেশ পেয়ে এ দিন রাতেই হামিরপুরের উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০৯
Share: Save:

পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠায় প্রথম দফায় রাজ্যের আট আইএএস-আইপিএস অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার রাজ্যের আরও এক আইএএস অফিসারকে সরিয়ে দিল কমিশন। তাদের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসে ওএসডি (অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি), ১৯৯২ সালের আইএএস বরুণ রায়কে উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর লোকসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হচ্ছে। নির্দেশ পেয়ে এ দিন রাতেই হামিরপুরের উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দেন তিনি।

বরুণবাবুকে কেন সরানো হল, তার কোনও স্পষ্ট কারণ জানে না নবান্ন। তবে বরুণবাবুর বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিযোগ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। কী সেই অভিযোগ? প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অধীর চৌধুরীরা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন বরুণ রায়। পরে, এ রাজ্যে তৃণমূলের সরকার গঠিত হলে প্রথম দিকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও কাজ করেন তিনি। তাঁদের অভিযোগ, এই প্রেক্ষাপটেই সিইও অফিসের যাবতীয় খবরাখবর শাসকদলের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বরুণবাবু। তাই তাঁকে সিইও দফতরে রাখা সমীচীন হবে না।

রাজ্যের সিইও বা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্ত অবশ্য বরুণবাবুর চলে যাওয়াকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বলে মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “কমিশন যে কোনও সময় অফিসারদের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিতে পারে। সিইও দফতরের কর্তাদেরও পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়। কমিশন আপাতত মনে করেছে, উনি পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেই ভাল। তাই তাঁকে উত্তরপ্রদেশে পাঠানো হয়েছে।” কমিশন একটি সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যের ভোট পরিচালনা করা হয় সিইও দফতর থেকে। তাই সেখানকার কোনও অফিসার সম্পর্কে অভিযোগ উঠলে তাঁকে বদলি করে দেওয়াটাই শ্রেয় বলে করা হয়। বরুণবাবুর ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।

নবান্নের একাধিক অফিসারের বক্তব্য, বাম আমলে জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বরুণবাবু কাজ করেছেন। তবে ২০০৯ সালে তৃণমূল কেন্দ্রের যোগ দেওয়ার সময় তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও মুকুল রায়ের নজরে পড়েন। সেই সূত্রেই প্রথমে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুলবাবুর ব্যক্তিগত সচিব। ২০১১-এ রাজ্যে পালাবদলের পরে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের সচিব। কিন্তু তাঁর কাজে মুখ্যমন্ত্রী অসন্তুষ্ট হওয়ায় বরুণবাবুকে বদলি করা হয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরে। সেখান থেকে যান বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজি ডিরেক্টর পদে। সেই সময় বৈঠকে না থেকে বিদেশ সফরে চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠানো হয়। পরে গত মার্চ মাসে তাঁকে সিইও দফতরের ওএসডি করা হয়।

বরুণবাবু নিজে অবশ্য তাঁর সরে যাওয়া নিয়ে কিছু বলতে চাননি। এ দিন সন্ধ্যায় কলকাতা ছাড়ার আগে তিনি বলেন, “কমিশন যা দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করব। এ নিয়ে কিছু বলার নেই।” তবে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, জাহাজ-প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে তিনি যেমন কাজ করেছেন, তেমনই রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী হিসেবে মানসবাবুর অধীনেও কাজ করেছেন। সেই অর্থে তিনি মানসবাবুরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE