অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের তোপের পাল্টা আক্রমণে নামল তৃণমূল।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকলে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতকে জেলে পুরতেন বলে রবিবার নৈহাটির সমাবেশে বলেছিলেন বুদ্ধবাবু। ২৪ ঘণ্টা পরে সোমবার তারই জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি তুলেছেন, বুদ্ধবাবু ব্রিগেডে দাঁড়িয়ে মাথা গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেও কেন জেলের বাইরে রইলেন? বুদ্ধবাবুর জমানায় তাঁর দলের সতীর্থদের অনেকেই বিতর্কিত মন্তব্য করেও গ্রেফতার হননি বলে অভিযোগ তুলে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন পার্থবাবু। নৈহাটিতে বুদ্ধবাবুর বক্তব্যে বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে তৃণমূল।
পার্থবাবু ব্রিগেডের কথা বললেও মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন একাধিক সভায় বুদ্ধবাবু বলতেন, এ রাজ্যে যারা দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করবে, তাদের মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সেই হুঁশিয়ারির সঙ্গে অনুব্রতের হুমকির তুলনা হয় না বলেই সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য।
বিরোধীদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া বা পুলিশকে বোমা মারার কথা বলার পরেও অনুব্রতকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘প্রশ্রয়’ দেওয়ার সমালোচনা করেছিলেন বুদ্ধবাবু। পাড়ুই-কাণ্ডে অনুব্রতকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি, প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্টও। দলনেত্রীর সুরেই পার্থবাবু বলেন, “অনুব্রত ভাল সংগঠক। কিন্তু আইন আইনের পথে চলছে, চলবে।” তাঁদের দল যে বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না, তা বোঝাতে শম্ভুনাথ কাও, আরাবুল ইসলাম বা মুন্নার হাজতবাসের উদাহরণও দেন তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূল সরকারের আমলে সমাজবিরোধীরা দু-একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
পার্থবাবু বিনয় কোঙার, অনিল বসু বা আনিসুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের উদাহরণ টেনে প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁরা কেন জেলে যাননি? প্রশ্ন তুলেছেন তপন-সুকুর বা সুশান্ত ঘোষকে নিয়েও। পার্থবাবুর কটাক্ষ, নিজের সতীর্থদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এখন ‘মুকুটহীন রাজা’র মতো তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করছেন বুদ্ধবাবু! প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নন্দীগ্রাম, খেজুরি, নেতাইয়ের মতো গণহত্যার নায়ক বা ২১ জুলাইয়ের অন্যতম নায়ক বলেও কটাক্ষ করেন পার্থবাবু। যদিও ১৯৯৩-এর ২১ জুলাইয়ের ঘটনার সময় বুদ্ধবাবু পুলিশমন্ত্রী ছিলেন না। ওই ঘটনায় তাঁর নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নও ছিল না বলে ২১ জুলাই কমিশনে জানিয়েছেন বুদ্ধবাবু।
মমতার আমলে মহিলাদের সম্মান বিপন্ন বলে বামেরা অভিযোগ তুলছেন। পার্থবাবু বলেন, “২০১০-এর শেষ দিকে বুদ্ধবাবুকে বিধানসভায় জিজ্ঞাসা করি, নারী নির্যাতনের সংখ্যা কত? বলেছিলেন, ২২ হাজার। নারীর প্রতি সম্মান জানানি বুদ্ধবাবু। এখন নারীর সম্মান নিয়ে বলছেন!” ধর্ষণকে এক ধরনের ব্যাধি বলে উল্লেখ করেই পার্থবাবুর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সক্রিয়তার সঙ্গে এ ধরনের কাজে যুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy