সংঘাত শেষে সন্ধি হয়ে গিয়েছিল মঙ্গলবারেই। আর বুধবার সকালেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আট অফিসারের বদলির নির্দেশ জারি করল রাজ্য সরকার।
বদলির সরকারি নির্দেশ জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এক জন ছাড়া সাত অফিসার নতুন পদে যোগও দিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বা সিইও-র দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই অফিসারদের বদলির ব্যাপারে সরকারি নির্দেশ এ দিনই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আট অফিসারের মধ্যে কাকে কোথায় বদলি করল রাজ্য সরকার?
নবান্ন সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে সিআইডি-র স্পেশ্যাল পুলিশ সুপারের পদে বসানো হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি)-র পদে পাঠানো হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার প্রাক্তন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই প্রাক্তন অতিরিক্ত জেলাশাসক অলোকেশপ্রসাদ রায় ও অরিন্দম দত্তকে। অরিন্দমবাবু নতুন পদে যোগ দিলেও ব্যক্তিগত কারণে অলোকেশবাবু এ দিন ছুটিতে ছিলেন। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁর নতুন পদে যোগ দেওয়ার কথা। বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিশ সুপার সৈয়দ এম এইচ মির্জা এবং মালদহের প্রাক্তন পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব এ দিনই যোগ দিয়েছেন রাজ্যের পুলিশ ডিরেক্টরেটে। বীরভূমের প্রাক্তন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া গেলেন ঝাড়গ্রাম পুলিশ-জেলার এসপি-পদে।
কার্যত মঙ্গলবারেই বদলির নির্দেশ জারির প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল নবান্ন। নতুন পদে কাকে কোথায় বদলি করা হবে, তা-ও এক রকম চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল ওই রাতেই। অপেক্ষা ছিল শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা এ দিন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশনের নির্দেশ মেনে নেওয়ার কথা ঘোষণা করার পরে আট অফিসারকে ফোন করে বুধবারেই নতুন পদে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।” সেই মতো এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নবান্নে পৌঁছে যান উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল। মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র ও স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তিনি সটান চলে যান নবান্নের পাঁচতলায় স্বরাষ্ট্র দফতরে। কিছু পরেই দফতর ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি।
নবান্ন সূত্রের খবর, আট অফিসারের বদলির নির্দেশ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি কমিশনের কাছে পাঠানোর পাশাপাশি এ দিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তকে পৃথক একটি চিঠি দিয়েছেন মুখ্যসচিব সঞ্জয়বাবু। গত রবিবার কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে কয়েক জন অফিসারদের বদলির প্রসঙ্গ উঠলেও নির্দিষ্ট কারও নাম ধরে যে কোনও আলোচনাই হয়নি, চিঠিতে আরও এক বার সেটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন এই চিঠি?
প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, অফিসারদের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য সোমবার নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যসচিব। তাতে তিনি লেখেন, সাধারণত অফিসারদের বদলির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আগাম আলোচনা করে কমিশন। প্রথামাফিক অফিসারদের তালিকা চেয়ে পাঠায় তারা। কিন্তু এ বার তা কেন হল না, সেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যসচিব। জবাবে কমিশন জানিয়ে দেয়, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই অফিসার বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বরাষ্ট্রসচিব ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে এ ব্যাপারে সবিস্তার আলোচনা করেছে কমিশন। মুখ্যসচিবের এ দিনের চিঠি তারই জবাব বলে মনে করছে নবান্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy