অর্পিতা ঘোষ ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সাংস্কৃতিক জগতের ব্যক্তিত্বরা। সোমবার। ছবি: সুদীপ আচার্য।
লোকসভা ভোটের মুখে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে ফের পরিবর্তনের হাওয়া!
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তথা নাট্য-ব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে প্রচারে নামার কথা ঘোষণা করলেন কবি সুবোধ সরকার, অভিনেতা অরিন্দম শীল, নাট্য-কর্মী শেখর দাস প্রমুখ। যাঁরা এ যাবৎ বামপন্থী বিশিষ্ট হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। পাঁচ বছর আগে লোকসভা ভোট বা তিন বছর আগে বিধানসভার ভোটের আগে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের বহু ব্যক্তিত্বই পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেছেন। পরবর্তী কালে তাঁদের অনেকেই সরাসরি তৃণমূলেও যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সুবোধবাবু বা অরিন্দমবাবুদের মতো কিছু ব্যক্তিত্ব তার মধ্যেও তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেই চলেছেন। কিন্তু এ বার লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী অর্পিতা নামক সেতুর মাধ্যমে সেই দূরত্বও ঘুচে গিয়েছে!
কলকাতা প্রেস ক্লাবে সোমবার সুবোধবাবু, অরিন্দমবাবু তো বটেই, নাট্য-ব্যক্তিত্ব স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, মনোজ মিত্র, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, গায়ক মনোময় ভট্টাচার্য প্রমুখ ঘোষণা করেছেন, তাঁরা এ বার অর্পিতার সমর্থনে প্রচার করবেন। এক বিবৃতিতে সুবোধ-অরিন্দমদের সঙ্গেই রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, শাঁওলী মিত্র, গায়িকা স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, ইন্দ্রাণী ও শ্রাবণী সেনেরা আবেদন করেছেন ‘অর্পিতা ঘোষের মতো এক জন লড়াকু, দৃঢ়চেতা, পরিশ্রমী, সংবেদনশীল এবং স্বচ্ছ চিন্তার মানুষ যদি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন, তা হলে বালুরঘাট তথা পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এক জন প্রকৃত জনপ্রতিনিধি পাবেন’। প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী এবং নাট্য-ব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু জানান, যে শিল্পীরা অর্পিতাকে সমর্থন করার আবেদন করছেন, তাঁরা সকলেই বালুরঘাটে প্রচারে যাবেন। ব্রাত্যবাবু বলেন, “আরও বিশিষ্ট মানুষ আছেন, যাঁরা আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরাও বালুরঘাটে যাবেন।” অর্পিতার জন্য এমন সেতুবন্ধনের প্রয়াসে অন্যতম নেপথ্য শিল্পী শিক্ষামন্ত্রীই।
সারদা-কাণ্ডে বয়ান-বদলের অভিযোগ নিয়ে এর আগে অর্পিতাকে ঘিরে এক প্রস্ত নাটক হয়েছে। তিনি প্রার্থী হওয়ার পরে সেই প্রসঙ্গই বিরোধীরা ফের সামনে আনছেন। অর্পিতা অবশ্য এ দিন বলেন, “ওটা পুলিশের বয়ান ছিল। আমার নয়। আমি এফআইআরে যে অভিযোগ করেছিলাম, তার থেকে এক চুলও সরিনি!”
পরিবর্তনপন্থী শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, সাংসদ যোগেন চৌধুরী, নাট্য নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তী, কবি জয় গোস্বামীর উপস্থিতিতে নিজেকে আজন্ম কমিউনিস্ট বলে পরিচয় দিয়ে এ দিন অরিন্দমবাবু বলেন, “আমি যে মতবাদে বিশ্বাস করি, তা মানুষের ভাল করে। গরিব-খেটেখাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু এখন এঁদের (ব্রাত্য, অর্পিতা) ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আর কাউকে তেমন দেখতে পাচ্ছি না। এই মুহূর্তে আমি সিপিএম থাকতে পারছি না!”
একদা বাম-ঘনিষ্ঠ কবি সুবোধবাবুও ব্রাত্য-অর্পিতার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বন্ধুত্বের কথা জানিয়ে বলেছেন, “এই বন্ধুত্ব বিপ্লবের চেয়েও দীর্ঘজীবী হবে!” আর খোদ অর্পিতার আহ্বান, “যাঁরা এখনও আমাদের থেকে দূরে সরে আছেন, শিল্পকলার কথা ভেবে তাঁরা সকলেই সমর্থন করলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy