Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

কেবলের বিল দিতেই হবে গ্রাহককে: ট্রাই

ডিজিটাল-কেবল টিভির পরিষেবার মাসুল মেটালে গ্রাহকদের বিল দিতেই হবে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ‘মাল্টি সিস্টেম অপারেটরদের’ (এমএসও) নির্দেশ দিয়েছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। নির্দেশে ট্রাই আরও বলেছে, ইচ্ছুক কোনও গ্রাহক যাতে অনলাইনেও বিল মেটাতে পারেন, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সেই ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

ডিজিটাল-কেবল টিভির পরিষেবার মাসুল মেটালে গ্রাহকদের বিল দিতেই হবে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ‘মাল্টি সিস্টেম অপারেটরদের’ (এমএসও) নির্দেশ দিয়েছে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। নির্দেশে ট্রাই আরও বলেছে, ইচ্ছুক কোনও গ্রাহক যাতে অনলাইনেও বিল মেটাতে পারেন, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সেই ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

বিল দেওয়ার পরিষেবা চালু হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গ্রাহকেরা বিল হাতে পাচ্ছেন না বলে বিস্তর অভিযোগ উঠছে কলকাতা, হাওড়া-সহ দেশের অন্য মেট্রো শহরগুলিতে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিযোগগুলির সত্যতা যাচাইয়ের পরেই এমন নির্দেশিকা জারি করেছে ট্রাই। গ্রাহক-স্বার্থে পুরো বিষয়টিতে স্বচ্ছতা আনতে ৩০ দিনে আরও একটি ব্যবস্থা চালু করতে বলেছে তারা। তাতে কোনও গ্রাহক মোবাইল নম্বর বা ই-মেল কেবল অপারেটরদের দিয়ে থাকলে বিল মেটানোর পরে তাঁকে এসএমএস বা ই-মেল করে সেই মাসুল মেটানোর কথা জানাতে হবে।

বস্তুত, ডিজিটাল কেবল টিভি পরিষেবা চালু নিয়ে গোড়া থেকেই বারবার সমস্যা তৈরি হয়েছে। দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাইয়ের মতো কলকাতাতেও গত বছর এই পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু প্রথমে বিভিন্ন চ্যানেলের প্যাকেজ ও তার মাসুল হার নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় সমস্যায় পড়েন বহু গ্রাহক। পাশাপাশি সেট-টপ বক্সের সরবরাহে ঘাটতি ও তার জেরে কালোবাজারির অভিযোগও ওঠে। এর পরে গ্রাহকদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি না হওয়ায় শেষে মাঠে নামে ট্রাই। কিন্তু তার পরেও নতুন সমস্যা বাধে মাসুলের বিল দেওয়া নিয়ে।

গ্রাহকদের বক্তব্য, যেহেতু তাঁদের সঙ্গে কেব্ল অপারেটরদেরই সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, তাই মাসুল দেওয়ার পরে বিলের জন্য কেবল অপারেটরদের কাছেই দরবার করেন তাঁরা। অনেকেরই অভিযোগ, অপারেটররা বিল দিতে চাননি। কেউ কেউ দায় চাপিয়েছেন এমএসও-দের উপর। এমএসও-দের আবার পাল্টা দাবি, তাঁরা ঠিকমতো বিল তৈরি করলেও কেব্ল অপারেটরেরাই তা গ্রাহকদের দিচ্ছেন না। পরিষেবা করে ফাঁকি দিতেই অপারেটরদের একাংশ বিল দিতে চান না বলে অভিযোগ।

কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসায় যুক্ত অন্যতম কেবল অপারেটর মৃণাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁদের মতো বহু অপারেটরই গ্রাহকদের নিয়মিত বিল দিচ্ছেন এবং দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা পরিষেবা করও দিচ্ছেন।

ট্রাই-এর উপদেষ্টা জি এস কেশরওয়ানি অবশ্য বুধবার দিল্লি থেকে ফোনে জানান, মুম্বই-দিল্লির মতো কলকাতা ও হাওড়ার বহু গ্রাহক মাসুল মিটিয়েও বিল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “আমরা তদন্তে দেখেছি, গোটা ব্যবস্থাটি আদৌ সন্তোষজনক নয়। অনেক গ্রাহকই অপারেটরদের কাছ থেকে কাঁচা রসিদ পাচ্ছেন। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা ও হাওড়ার পরিস্থিতি ভাল করে খতিয়ে দেখতে আঞ্চলিক দফতরকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।”

এ নিয়ে এমএসও এবং কেবল অপারেটরদের মধ্যে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের বিষয়টি মেনে নিয়ে কেশরওয়ানি জানান, এই কারণেই গোটা বিষয়টি নিশ্চিত করতে এমএসওদের ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উভয়ের মধ্যে এ নিয়ে সুস্পষ্ট চুক্তি থাকবে। গ্রাহকদের বিল না দিলে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেবে ট্রাই।

শহরের অন্যতম দুই এমএসও সিটি কেবল এবং মন্থনের দুই কর্তা সুরেশ শেঠিয়া এবং সুদীপ ঘোষের দাবি, তাঁরা কেবল অপারেটরদের কাছে বিল পাঠাচ্ছেন। এবং যেহেতু তাঁদের চেয়ে কেবল অপারেটরদের সঙ্গেই সরাসরি গ্রাহকদের যোগাযোগ, তাই বিল বণ্টনের জন্য তাঁদের কেবল অপারেটরদের উপরই নির্ভর করতে হয়। তাঁরা অবশ্য বলছেন, কোনও গ্রাহক বিল না পেলে তাঁদের সংস্থায় যোগাযোগ করলে তাঁরা তা বণ্টনের ব্যবস্থা করবেন। তবে গোটা বিষয়টি নিশ্চিত করতে এমএসও-রা কেবল অপারেটরদের সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন সুরেশবাবু। কিন্তু বিল না পেলে কি গ্রাহকদের মাসুল দেওয়া উচিত? জবাবে সুদীপবাবু বলেন, “কোনও গ্রাহক বিল না পেলে মাসুল দেবেন না।” সে ক্ষেত্রে যদি গ্রাহকের কেব্ল সংযোগ কেটে দেওয়া হয়? তাঁরা জানাচ্ছেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি এমএসও-র আওতায় পড়ে।

এর পাশাপাশি অনলাইনে বিল মেটানোর পরিষেবা চালুর পরিকাঠামো প্রায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ওই দুই এমএসও-র কর্তা। তবে তাঁদের বক্তব্য, এর জন্য একটু সময় লাগবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE