—প্রতীকী ছবি।
রাজনৈতিক স্বার্থে দেশের শাসক দলের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আগেও কয়েক বার উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের ৩৫তম অধিবেশনের মঞ্চ থেকে সেই বিকৃতির বিরুদ্ধেই তোপ দাগলেন ইতিহাস গবেষকেরা। বৃহস্পতিবার কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিবেশনের মূল ভাষণে ইতিহাসবিদ রণবীর চক্রবর্তী বললেন, “ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ঘোর দুঃসময়। কিছু বিশেষ অজ্ঞ ব্যক্তি বিশেষজ্ঞের বেশে ভুয়ো ইতিহাস লিখছেন।” ইতিহাস সংসদের এ বারের সভাপতি অধ্যাপক রঞ্জিত সেনও বলেন, ‘‘রাজনীতির মঞ্চ থেকে অনিশ্চিত অনুমানকে প্রত্যয়ের চেহারা দেওয়া হচ্ছে।’’
রণবীরবাবু জানান, প্রাচীন ভারতে ব্রাহ্মণ্যবাদ বারবারই সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তার করেছে। যে ঘটনাবলির সঙ্গে দেশের বর্তমান অবস্থায় দলিত ও অহিন্দুদের উপরে নানা হামলার ঘটনার মিল পাচ্ছেন ইতিহাস গবেষকদের অনেকেই।
সেই সঙ্গেই রণবীরবাবু সতর্ক করে দেন, প্রাচীন ভারত নিয়ে হাস্যকর গল্পও ছড়ানো হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের আখ্যানে, প্রাচীন ভারত মানেই এক শোষণহীন সুবর্ণযুগ এবং মধ্যযুগে সুলতানি শাসন মানেই সামাজিক অধোগতি। কিন্তু প্রাচীন ভারতে কী ভাবে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত অস্পৃশ্যতা ও শোষণ চলত, তা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন এই প্রবীণ ইতিহাসবিদ। তাঁর কথায়, প্রাচীন ভারতের সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদকে অস্বীকার করে পালি, প্রাকৃতের মতো ভাষাকে অস্বীকার করে, শুধু সংস্কৃতের জয়গান ও একমুখী ভ্রান্ত ইতিহাস রচনার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, “পঞ্চদশ শতকে বিজয়নগর রাজ্যে সায়নাচার্য ঋগ্বেদের টীকাভাষ্য লিখেছিলেন। ত্রয়োদশ শতকে সোমনাথ বন্দরে প্রত্নলেখতে সংস্কৃতে মক্কা-মদিনার উল্লেখ ও শূন্যরূপ বা নিরাকার আল্লার বন্দনা মেলে।”
প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের বিভাগীয় সভাপতির ভাষণে অধ্যাপিকা সুচন্দ্রা ঘোষও ভারতের সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের প্রমাণ তুলে ধরেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy