ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেলের বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে বন্দি। কিন্তু জল বিয়োগটুকু সেরে স্বস্তির জো নেই। দেখা দেয় শারীরিক সমস্যা। রেলে মহিলা বা পুরুষ নির্বিশেষে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন বা লোকো চালকদের দুর্দশা অবশেষে মিটতে চলেছে।
ডানকুনির ইলেকট্রিক লোকো অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড অ্যানসিলিয়ারি ইউনিটেই এ বার লোকোমোটিভ প্রস্রাবাগার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ডব্লিউএজি-৯ সিরিজের বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভে তা বসানো হচ্ছে। দু’টি লোকো ইঞ্জিনে তা বসিয়ে হায়দরাবাদ এবং বরোদায় পাঠানো হয়েছে। মডিউলার ওই শৌচাগারে অতি বেগুনি রশ্মি এবং একাধিক স্বয়ংক্রিয় সেন্সরের প্রযুক্তি থাকছে।
বছর কয়েক আগে বারাণসীর লোকো শেডে জল ব্যবহার করা যায় এমন শৌচাগার তৈরির চেষ্টা দেখা যায়। পরে বিমানের ঢঙে জলবিহীন শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা হয়। চিত্তরঞ্জনের কারখানায় টুইন লোকোয় ওই চেষ্টা কার্যকর হয়েছিল। তার পরেই ডানকুনিতে কাজ শুরু হয়। বোতাম টিপে শৌচাগারের দরজা খুললেই স্বয়ংক্রিয় সেন্সর মানুষের উপস্থিতি বুঝতে পারে। ভিতরে পাখা চলতে শুরু করে, আলো জ্বলে ওঠে। এই কক্ষটি শুধু মূত্রত্যাগের জন্য। লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে ব্যবহার করা যাবে। প্রস্রাবাগারটিতে স্যানিটাইজার ডিসপেন্সার থাকছে। এক বার ব্যবহার করে বেরোনো মাত্র ভিতরের আলো ও পাখা বন্ধ হয়ে যাবে। সুগন্ধি স্প্রে তখনই ভিতরের দুর্গন্ধ দূর করবে। তার পরে অতি বেগুনি রশ্মি শৌচাগারের বেসিন ও অন্য অংশ পরিশুদ্ধ করবে।
প্রচণ্ড বর্ষা থেকে প্রায় ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরমে ওই শৌচাগার একই ভাবে কাজ করবে। রক্ষণাবেক্ষণের দরকার বা সমস্যা দেখা দিলে বিশেষ প্রযুক্তি এসএমএসে আপনা থেকেই নির্দিষ্ট জায়গায় বার্তা পৌঁছে দেবে। এক-একটি এমন প্রস্রাবাগারের ক্ষেত্রে প্রায় চার লক্ষ টাকা করে খরচ পড়ে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)