মিহির গোস্বামী। ফাইল ছবি।
‘খোঁড়া বাদশা’-র হাতে আর লাঠি নেই। দিব্যি সোজা হয়ে হাঁটছেন। কোনও সাহায্য ছাড়াই। যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূল পরিষদীয় দলের অন্দরে।
যাঁকে নিয়ে আলোচনা, তিনি আগে তৃণমূলেই ছিলেন। এখন বিজেপি-র বিধায়ক। নাম মিহির গোস্বামী। কিন্তু তাঁর হাঁটার সঙ্গী লাঠিটি কোথায়? গুঞ্জন শুরু হয়েছে মিহিরের প্রাক্তন দল তৃণমূল পরিষদীয় দলের অন্দরে। গত বিধানসভায় মিহির ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। নির্বাচিত হয়েছিলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক হিসেবে। এবার তিনি নাটাবাড়ি থেকে বিজেপি-র বিধায়ক হয়েছেন। দল ও আসন উভয়ই বদলে গিয়েছে মিহিরের। সঙ্গে বদলে গিয়েছে চলার ধরনও।
গত কয়েক বছর পায়ের সমস্যার জেরে মিহিরকে হাঁটতে হত লাঠিতে ভর দিয়ে। বিধানসভায় অধিবেশনে অংশ নিতে এলেও লাঠি হাতে তাঁকে চলাফেরা করতে হত। চিকিৎসকদের পরামর্শেই লাঠি নিয়ে চলতেন তিনি। সোমবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সর্বদল এবং বিএ কমিটির বৈঠকে বিজেপি প্রতিনিধি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন মিহির। সেখানে তাঁকে লাঠি ছাড়া হাঁটতে দেখেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরা। বৈঠক শেষে পরিষদীয় দলের ঘরে আলোচনা শুরু হয়, মিহিরের হাতের লাঠি কোথায় গেল?
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কোচবিহার লোকসভার উপ-নির্বাচনের প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে পড়ে গিয়ে মিহিরের ডান পায়ের হাঁটুর হাড় ভেঙে যায়। শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে হাঁটুর অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। চিকিৎসকদের পরামর্শে ২০১৭ সাল থেকে লাঠি নিয়ে চলাফেরা শুরু করেন মিহির। কিন্তু এখন কোন যাদুবলে লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারছেন তিনি? প্রশ্নের উত্তরে মুচকি হেসে নাটাবাড়ির বিধায়কের জবাব, ‘‘প্রাক্তন এক রাজনৈতিক সতীর্থের জন্যই আমার লাঠি ছাড়া হাঁটা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও চিকিৎসক নন।’’
মিহির বলছেন, ‘‘এবারের নির্বাচনে যখন আমি নাটাবাড়ি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাই, তখন আমার প্রধান প্রতিপক্ষ আমার হাঁটাচলা নিয়ে ব্যঙ্গ করে প্রচার শুরু করেন। তিনি বলেছিলেন, খোঁড়া বাদশাকে যেন কেউ ভোট না দেন। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, আর লাঠি নয়। কষ্ট হলেও নিজের পায়ে হেঁটেই প্রচার করব। সেভাবেই প্রচার করেছিলাম। তার পর আর লাঠির প্রয়োজন হয়নি। এখনও প্রয়োজন হচ্ছে না।’’
উল্লেখ্য, নাটাবাড়ি কেন্দ্রে মিহির হারিয়েছেন করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। দু’জনে একসঙ্গে প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে তৃণমূল করেছেন। কোচবিহারের রাজনীতিতে মিহির-রবির ‘সুসম্পর্কের’ কথা সর্বজনবিদিত। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও কোচবিহার তৃণমূলের অন্দরের খবর, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিবাদের জেরেই তৃণমূল ছেড়েছিলেন মিহির। আর রবীন্দ্রনাথের ‘আক্রমণাত্মক’ প্রচারের কারণেই লাঠি ছেড়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি। এখন লাঠি ছাড়া হাঁটা নিয়ে প্রাক্তন সতীর্থদের আলোচনার কথা জেনেও কোনও মন্তব্য করতে নারাজ মিহির। তবে বিজেপি পরিষদীয় দলের এক সদস্যের কথায়, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে এসে মিহিরদা লাঠি ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। পার্থক্য শুধু এইটুকুই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy