তিন চরিত্র। বাঁ দিক থেকে আরাবুল ইসলাম, নওশাদ সিদ্দিকি এবং শওকত মোল্লা। গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
শান্ত গলায় এক বিধায়ক বলছেন, ‘‘আমি দেখলাম, আমাদের ছেলেরা মনোনয়ন দেওয়ার সময় লাঠি নিয়ে এসেছে। আমি ওদের বললাম, ভাই লাঠি নিয়ে এসেছ কেন! আমরা তো মারধরের রাজনীতি করি না! ওরা বলল, ভাইজান, আমরা কাউকে মারার জন্য লাঠি নিয়ে আসিনি। আমরা এসেছি, যারা আমাদের মারতে আসবে, তারা যেন লাঠি দেখে ভয় পায়, সেই জন্য।’’
উত্তেজিত গলায় ক্যামেরার সামনে আর এক বিধায়ক বলছেন, ‘‘এটা শুরু করেছে আইএসএফ। কিন্তু শেষ করব আমরা। আপনাদের (সংবাদমাধ্যম) মাধ্যমে এটা সকলকে জানিয়ে দিতে চাই।’’
প্রথম জন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। দ্বিতীয় জন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। ভাঙড়ের যুদ্ধক্ষেত্রে আপাতত দুই ‘যুধুধান’। তফাত হল, শওকতের সঙ্গে রয়েছেন ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলামও।
গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ অবশ্য বলছে, ‘তাজা নেতা’র মুখেও এখন শোনা যাচ্ছে ‘‘আমরা মারামারি চাই না’’-র মতো আবেদন। আর দেখা যাচ্ছে, নওশাদের এবং তাঁর দল আইএসএফের বিরুদ্ধে ঘন ঘন অভিযোগ করছেন শওকত-আরাবুলরা। আরাবুলকে দেখা যাচ্ছে উত্তেজিত হয়ে চ্যানেলের ‘বুম’ কেড়ে নিতে! ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুলের বিরুদ্ধে অতীতে কলেজ শিক্ষিকাকে জলের জগ ছুড়ে মারার মতো অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ক্যামেরার সামনে তাঁকে এতটা বিস্রস্ত কখনও দেখায়নি। আর ভাঙড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক শওকত বলেছেন, ‘‘আজ প্রমাণিত, নওশাদ এক জন দুষ্কৃতী!’’
ভাঙড়ের সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, তৃণমূলের দুই নেতা আরাবুল এবং শওকতের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বার বার সামনে এসেছে। সে বিবাদ এখনও পুরোপুরি মেটেনি। কিন্তু তার মধ্যেও এখন নওশাদকে আটকাতে একজোট তাঁরা! প্রসঙ্গত, ভাঙড় হল গত বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একমাত্র আসন যেখানে বিরোধীপক্ষ জিতেছে। ভাঙড়ই রাজ্যের একমাত্র কেন্দ্র, যেখানে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি নয়, জিতেছে সদ্যোজাত (২০২১ সালের নির্বাচনের আগে জন্ম) ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীণ জনপদ ভাঙড়ের নাম বাংলার রাজনীতিতে বার বার উচ্চারিত হয়েছে। প্রথমে এর দখল ছিল কংগ্রেসের হাতে। তার পরে বামেদের দাপট। কংগ্রেসের হাত থেকে ১৯৭২ সালে ভাঙড় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা (ঘটনাচক্রে, যিনি এখন তৃণমূলে। যদিও অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয়)। এর পরে রেজ্জাককে আর ওই আসনে প্রার্থী করেনি সিপিএম। কিন্তু মাঝে এক বার (২০০৬ সাল) ছাড়া ২০১১ সাল পর্যন্ত সিপিএমের দাপট বজায় ছিল ভাঙড়ে। সেই এলাকা তৃণমূলের হাতে ফিরে আসে রেজ্জাকের হাত ধরেই। মাঝে ১৯৭৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সিপিএম প্রার্থী হিসাবে রেজ্জাক জিততেন ক্যানিং পূর্ব আসন থেকে।
‘পরিবর্তন’-এর পর ভাঙড় হয়ে ওঠে তৃণমূলের ‘সাম্রাজ্য’। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে যখন তৃণমূল প্রথম বিরোধী শক্তি হিসাবে হাজির হয়েছিল, তখন তারা দু’টি জেলা পরিষদ দখল করেছিল— নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেই থেকে এই জেলা কখনও তৃণমূলকে খালি হাতে ফেরায়নি। এই প্রথম সেখানে তৃণমূলকে ‘প্রতিরোধ’-এর মুখে পড়তে হচ্ছে। এই প্রথম তাদের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে। এই প্রথম শাসক তৃণমূলকে ভাঙড়ে দেখতে হচ্ছে, তাদের উচ্চ স্তরীয় নেতাদের দামি গাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে। সেই গাড়ির ড্যাশবোর্ড এবং মেঝেয় সুতলি বোমা পাওয়া যাচ্ছে এবং তৃণমূলকে বলতে হচ্ছে, ‘‘ওটা আইএসএফ রেখে গিয়েছে!’’
এর আগে ভাঙড়ের খামারাইট এলাকায় পাওয়ার গ্রিড তৈরি কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল নকশালপন্থী সংগঠন ‘রেড স্টার’-এর আন্দোলন। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছিল প্রশাসন। কিন্তু এখন ভাঙড় নওশাদ সিদ্দিকির ‘গড়’। অন্তত গত কয়েক দিনের ঘটনাক্রম তেমনই দাবি করছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ভাঙড়-২ ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজারে মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে। প্রাণ বাঁচাতে কয়েক জন তৃণমূল কর্মী বাজারসংলগ্ন খালে ঝাঁপ দিয়েছেন! তার পরে সাঁতরে আশ্রয় নিয়েছেন ভাঙড় থানায়। খালপাড়ের ঝোপেও লুকিয়ে থেকেছেন অনেকে। এ জিনিস ভাঙড়ে অভাবনীয়! যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁরা আইএসএফ কর্মীদের হাতে বেদম মার খেয়েছেন। আইএসএফ কর্মীদের তাড়ায় দিনভর পিছু হটছে তৃণমূল। বোমাবৃষ্টির চোটে বাজারের পাশে ফলপট্টিতে লুকিয়ে পড়েছে পুলিশও।
তবে প্রাথমিক হতভম্ব ভাব কাটিয়ে পাল্টা মেরেছে তৃণমূলও। বস্তুত, আইএসএফের অভিযোগ, তৃণমূলই আগে তাদের আক্রমণ করেছিল। তৃণমূলের ছোড়া গুলিতে জখম হন তাদের এক প্রার্থী। যার পাল্টা অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলেরও। বুধবারও সকাল থেকে উত্তপ্ত থেকেছে ভাঙড় ১ নম্বর ব্লক। বাসন্তী হাইওয়ের উপর বোমাবৃষ্টি, গুলির লড়াই। জটায়ু থাকলে সম্ভবত লিখতেন ‘ভাঙড় ভয়ঙ্কর’!
আদতে কি ‘ভয়ঙ্কর’ ভাঙড়? যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হলেও শহর থেকে খানিক দূরে চন্দনেশ্বর, নারায়ণপুর, রানিগাছি, ঘটকপুকুর, প্রাণগঞ্জের মতো একগুচ্ছ গ্রাম নিয়ে ভাঙড়। মূলত গরিবগুর্বো মানুষের বাস। এলাকার মানুষেরা মূলত কৃষিনির্ভর। বেশিটাই আমন ধানের জমি। কিছু কিছু মাঠে বোরো বা আউশের চাষও হয়। আর হয় পাট। সঙ্গে শাকসব্জিও। তবে চাষের জন্য সেচের জলের থেকে বর্ষার উপরেই বেশি ভরসা। সব গ্রামেই বড় বড় পুকুর, দিঘি রয়েছে।
কিন্তু তার সঙ্গেই রয়েছে রাজনৈতিক সংঘাত। ভাঙড়ের মাটিতে রাজনীতি বরাবরই একটু বেশি উচ্চ স্বরের। এ বার যেমন আইএসএফ, তেমনই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ‘পাওয়ার গ্রিড’ বিরোধীদের সঙ্গে। সেই সময়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে আদালতে গিয়েছিল ‘ভাঙড় জমিরক্ষা কমিটি’। তাদের ন’জন প্রার্থী হোয়াটস্অ্যাপে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন আদালতের নির্দেশে। জিতেওছিলেন পাঁচ জন।
ভাঙড় হিন্দু-মুসলিম মিশ্রিত এলাকা হলেও সংখ্যালঘুর বাসই বেশি। সেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম। তবে আপাতদৃষ্টিতে ধর্ম নিয়ে লড়াই নেই। ভাঙড়ের লড়াই বরাবরই ‘রাজনৈতিক’। সেই লড়াইয়েই নতুন ‘সৈনিক’ নওশাদ। তবে ভাঙড়ের যোদ্ধাদের ‘চেনা’ পথে নয়।
আরাবুল-শওকতেরা কেন নওশাদের সঙ্গে যুঝতে পারছেন না? একদা তৃণমূলের ‘দুর্গ’ ভাঙড়ের সঙ্গে এই তরুণ আইএসএফ বিধায়কের কী রসায়ন তৈরি হয়েছে?
অনেকে বলেন, এর পিছনে রয়েছে নওশাদের বংশপরিচয়। বয়স এখনও ৩০ হয়নি। কিন্তু তাঁর পরিবারের ভিত্তি অনেক পুরনো। বলা হয়, অজমের শরিফের পরেই মুসলিমদের জন্য ভারতে দ্বিতীয় ‘পবিত্রভূমি’ হল হুগলির ফুরফুরা শরিফ। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশিই ফুরফুরার অনুগামীরা ছড়িয়ে রয়েছেন অসম, ত্রিপুরা এমনকি, বাংলাদেশেও। বাংলার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিশেষত ভাঙড়, ক্যানিং এলাকায় ফুরফুরার অনুগামীর সংখ্যা প্রচুর। নওশাদ নিজেও ফুরফুরার পিরজাদা। তাঁর বাবা আলি আকবর সিদ্দিকিও ছিলেন পির। নওশাদের পিতামহ পির জুলফিকর আলিকে সকলে ‘ছোট হুজুর’ পরিচয়ে চেনেন। ফুরফুরা শরিফের সূচনা করেছিলেন তাঁর বাবা মহম্মদ আবু বকর সিদ্দিকি।
সেই কারণেই কি ভাঙড়ে তাঁর জয়?
আনন্দবাজার অনলাইনের এই প্রশ্নের জবাবে নওশাদ বলছেন, “ভাঙড়ের গরিব, সাদাসিধে মানুষ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। খুন, হাঙ্গামা, বোমাবাজি, মারপিট আর তারা চায় না। সেই কারণেই ভাঙড়ের শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছিলেন। আমি তাঁদের সমর্থন নিয়েই এগিয়েছি। আমার লড়াই ভাঙড়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠার লড়াই।’’ পারিবারিক পরিচয় নিয়ে যে তিনি রাজনীতি করছেন না, সেটা বুঝিয়ে নওশাদ আরও বলছেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ আমার পাশে ছিলেন, আছেন। আশা করি আগামী দিনেও তাঁরা পাশে থাকবেন। আর শান্তি ফেরানোর লড়াইয়ে ভাঙড়ের আমজনতাই আমার অনুপ্রেরণা। তাঁদের জন্যই আমি লড়াই করার শক্তি পাই।”
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করে রাজনীতিতে এসেছেন নওশাদ। তৃণমূলের অনেক নেতাও একান্ত আলোচনায় স্বীকার করে নিচ্ছেন, তাঁদের নওশাদকে ‘পছন্দ’। তাঁর ধীরস্থির, শান্ত গলায় শব্দচয়ন করে কথা বলা, কথায় কথায় উত্তেজিত না-হওয়ার ধারা শাসক শিবিরের একটা অংশের কাছেও প্রশংসিত। যে ভাবে ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে বুধবার দুপুরে তিনি সটান নবান্নে ‘রাজ্যের অভিভাবিকা’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চলে এসেছিলেন, তাকেও ‘পরিণত রাজনীতি’ হিসাবে দেখছে তৃণমূলের একাংশ।
আশ্চর্য নয় যে, নওশাদকে দলে নিয়ে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিল তৃণমূল। অন্তত নওশাদের তেমনই দাবি। তৃণমূল সূত্রে সে দাবির ‘আনুষ্ঠানিক সত্যতা’ না-মিললেও জনান্তিকে একাধিক নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন, নওশাদকে দলে পেলে তাঁরা নিতে দ্বিধা করবেন না।
ঘটনাচক্রে, নওশাদের দল আইএসএফের জন্মের সঙ্গেও ভাঙড়ের যোগ রয়েছে। ২০২১ সালের ভোটের অনেক আগে ভাঙড়ে গিয়েছিলেন ফুরফুরার পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। সেই সময়ে অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আব্বাস তার পরে একটি ভিডিয়ো বার্তা ছড়িয়ে দেন। তাতেই তিনি জানিয়েছিলেন, ওই ‘আক্রমণ’-এর জবাব তাঁর অনুগামীরাই।
নওশাদ সম্পর্কে আব্বাসের ভাই। পিরজাদা পরিবারের অনুগামীদের জোরেই কি ভাঙড়ে লড়াই নওশাদের? মানতে নারাজ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘বংশপরিচয় তো রয়েছেই। কিন্তু সেটাই সব নয়। একজন শিক্ষিত ছেলে পারিবারিক ধারার বাইরে গিয়ে, অর্থোপার্জনের কথা না ভেবে রাজনীতিতে এসেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে। দক্ষতা এবং নিষ্ঠা রয়েছে। দুর্নীতি বা লোভ নেই। মন্ত্রিত্ব দিতে চেয়েও তৃণমূল তাঁকে ভাঙাতে পারেনি। ভাঙড়ের মতো জায়গায় রুখে দাঁড়ানোর ক্ষমতা, সংগঠন গড়ার নিষ্ঠা, ধর্মীয় অনুগামীদের সংগঠিত করার দক্ষতা রয়েছে।’’
তবে এ সব কারণকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর দাবি, সবটাই চালাচ্ছে বিজেপি। শান্তুনু বলেন, ‘‘নওশাদ সিদ্দিকির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিজেপির টাকা ঢোকে। তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সিপিএম-কংগ্রেস হাত মিলিয়েছে। তৃণমূলের ভোট কেটে রাজনৈতিক অঙ্কে জিতেছেন নওশাদ।’’ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এক জন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তিনি প্রতিবাদ করছেন, প্রতিরোধ করছেন।’’ শান্তনুর বিজেপি সংক্রান্ত বক্তব্যের জবাবে শমীকের উত্তর, ‘‘তৃণমূল তো ফান্ডিং ছাড়া কিছুই বোঝে না। সব সময় ফান্ডিং নিয়ে ভাবার জন্যই ওঁরা সবেতে ফান্ডিং দেখতে পান!’’ তবে তৃণমূল শিবিরের একটা অংশ মনে করে, ভাঙড়ে সিপিএম-বিজেপি-জমিরক্ষা কমিটি জোটবদ্ধ হয়ে নওশাদের পিছনে সমর্থন হিসাবে রয়েছে।
নওশাদদের পরিবারেরই অন্য একটি শাখার প্রধান ত্বহা সিদ্দিকিও রাজনৈতিক কারণে ‘গুরুত্বপূর্ণ’। তৃণমূল বা কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা নিয়মিত ত্বহার কাছে যান। তৃণমূলের একটা অংশের দাবি, ত্বহার সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’-এর কারণেই নওশাদের সঙ্গে শাসক শিবিরের লড়াই আরও জোরদার হয়েছে। ত্বহার ‘গুরুত্ব’ কমিয়ে দিলে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে নওশাদের ‘ঝাঁজ’ও কমিয়ে ফেলা যাবে।
তবে এটা অনস্বীকার্য যে, ভাঙড়ে তৃণমূল-নওশাদ ধুন্ধুমার লড়াইয়ের পিছনে ফুরফুরা-রাজনীতির একটা ‘প্রভাব’ রয়েছে। অনেকে মনে করেন, নওশাদের টানা ৪২ দিন জেলে থাকার ঘটনা তৃণমূলের সঙ্গে ফুরফুরার সম্পর্কের ‘অবনতি’ ঘটিয়েছিল। সেই ঘটনার প্রভাব পড়েছিল সাগরদিঘি উপনির্বাচনেও। সে তত্ত্ব তর্কযোগ্য হতে পারে। কিন্তু সাগরদিঘির ফলাফলের পরেই ফুরফুরার সঙ্গে সম্পর্কের ‘ক্ষত’ মেরামতির কাজ শুরু করেছিল তৃণমূল। সেখানে গিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বিধায়ক তপন দাশগুপ্তেরা। গিয়েছিলেন বিধায়ক শওকতও। কিন্তু ‘চোর চোর’ ধ্বনি শুনে তাঁকে ফিরে আসতে হয়েছিল।
নওশাদ তখনই বলেছিলেন, “ফুরফুরা শরিফে যে কেউ যেতে পারেন। কিন্তু কেউ রাজনৈতিক জমি ফেরাতে যেতে চাইলে বলব, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি আগের মতো নেই। শাসকদলের প্রকৃত চেহারা মানুষের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy