আদালতে কেঁদে ফেললেন নির্যাতিতার বাবা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রায় ঘোষণা করে নিজের আসন ছেড়ে উঠেই যাচ্ছিলেন বিচারক। হঠাৎ কান্নার শব্দ! আদালতে কেঁদে ফেলেন নির্যাতিতার বাবা। হাতজোড় করে বিচারকের উদ্দেশে কিছু বলতেও চাইলেন। বিচারকও তাঁকে বলতে বলেন। কাঁদতে কাঁদতেই বিচারককে ধন্যবাদ জানালেন নির্যাতিতার বাবা। এ-ও জানালেন, আস্থার পূর্ণ মর্যাদা রেখেছেন বিচারক।
আরজি কর ধর্ষণ-খুনের মামলায় শনিবার ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। রায় ঘোষণার পরেই বিচারককে আদালতে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। রায়দানের পর বিচারক নিজের আসন ছেড়ে উঠে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর উদ্দেশে কাঁদতে কাঁদতে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আপনার উপর যে আস্থা রেখেছিলাম, তার পূর্ণ মর্যাদা রেখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’’ তা শুনে বিচারক নির্যাতিতার বাবাকে জানান, তাঁদের কথা তিনি সোমবার শুনবেন। সোমবার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।
পরে আদালতের বাইরে বেরিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘বিচারককে ধন্যবাদ জানানোর ক্ষমতা নেই। উনি যে ভাবে বিষয়টি দেখেছেন, তাতে কৃতজ্ঞ। রুদ্রাক্ষের বিষয়টি সঞ্জয় ওর সাক্ষ্যগ্রহণের দিনেও বলেছিল। আমার মেয়ে তো আর কোনও দিন ফিরে আসবে না। সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজা চাইছি। এতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। তাই মৃত্যুদণ্ডই চাইছি। আর যারা এই ঘটনায় যুক্ত, তাদেরও সাজা চাইছি।’’
নির্যাতিতার মা-ও সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, ‘‘বায়োলজিক্যাল তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারপর্বের সময়ে ওর নীরবতাও প্রমাণ করে, ও-ই দোষী। কিন্তু সঞ্জয় একা ছিল না। এখনও অনেকে গ্রেফতার হয়নি। ফলে বিচার এখনও পাইনি।মামলা এখনও শেষ হয়নি। বাকি জড়িতেরা ধরা পড়লে তবেই মামলা শেষ হবে। আমরা ওই দিনটির অপেক্ষায় রয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয়ের নাম করেছিল সিবিআই। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সঞ্জয়কে। আগামী সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাজা ঘোষণা করবে আদালত, জানালেন বিচারক অনির্বাণ দাস।
বিচারক দাস সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সিবিআই এবং সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে যা মনে হয়েছে তাতে দোষী সাব্যস্ত করব আপনাকে। আপনার সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।’’ সেটা শুনে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমি কিছু করিনি। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। আমার কথাটা এক বার শুনুন।’’ বিচারক বলেন, ‘‘সোমবার আপনার কথা শুনব।’’
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy