গবাদি পশু কেনা-বেচায় নিষেধা়জ্ঞা সংক্রান্ত কেন্দ্রের বিধিকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এ সংক্রান্ত মামলার যাবতীয় কাগজপত্র তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমতি দিলেই প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর সর্বোচ্চ আদালতে পরিবেশ মন্ত্রকের ওই বিধি বাতিলের দাবি জানাবে।
তবে এই লড়াই যতটা না আইনি, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এক কর্তা জানাচ্ছেন, দিল্লির কাছে ঘরোয়া ভাবে এই ‘দুর্বল’ বিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে তারা জানায়, প্রয়োজন হলে রাজ্য আদালতে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্য এর বিরোধিতাও করেছে। প্রাণীসম্পদ বিকাশের এক কর্তার কথায়, ‘‘আসলে দিল্লি বোধ হয় চাইছে, মামলার মাধ্যমে বিধিটি বাতিল হোক। তাতে সাপও মরবে, অথচ লাঠি ভাঙবে না।’’ আর সেটা হলে, অর্থাৎ আদালত ওই বিধি নাকচ করে দিলে কেন্দ্রের মুখরক্ষা হবে। পাশাপাশি তাদের গরু-রাজনীতিও অটুট থাকবে।
আরও একটি বিষয় আছে। মুখে বিরোধিতা করলেও কোনও রাজ্য সরকার সরাসরি দিল্লির এই বিধি বাতিলের দাবি জানিয়ে এখনও আদালতে যায়নি। এর পিছনেও ভোটের অঙ্কই রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ বারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে তৈরি। নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘‘কসাইখানার সঙ্গে বহু মানুষের জীবিকা জড়িত। হাটগুলি থেকেও অনেকের রোজগারের ব্যবস্থা হয়। সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ ওই কর্তার কথায়, ‘‘শুধু সংখ্যাগুরুর আবেগ নয়, সংখ্যালঘুদের স্বার্থও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দেখেন, তা এতেই প্রমাণিত। অন্য রাজ্যকে এ বার সেই পথেই হাঁটতে হবে।’’
সর্বোচ্চ আদালতে রাজ্যের আইনি যুক্তি কী হবে? এক মুখপাত্র জানান, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গবাদি পশুর বাজার রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। এ নিয়ে কেন্দ্র কোনও নির্দেশ জারি করতে পারে না। রাজ্যের বাজারে গরু, মোষ, ছাগল মাংসের প্রয়োজনে নাকি পশুপালনের জন্য কেনা-বেচা হবে, তা ঠিক করার সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র রাজ্যেরই। সে কারণেই রাজ্য মনে করে, কেন্দ্রের জারি করা বিধি অসাংবিধানিক।
নবান্নের আরও যুক্তি, রাজ্যের ক্ষমতায় ইচ্ছাকৃত হস্তক্ষেপের জন্য পরিবেশ রক্ষার ছুতোয় পশুদের উপর হিংসা (ক্রুয়েলটি টু দ্য অ্যানিম্যাল অ্যাক্ট) সংক্রান্ত একটি বিধির বদল করা হয়েছে। এই পরিবেশ বিষয়ক বিধিটি সংবিধানের যৌথ তালিকায় রয়েছে। ফলে এতে নতুন কিছু যুক্ত হলে রাজ্যগুলি তা মানতে বাধ্য। রাজ্যের প্রশ্ন, যদি যৌথ তালিকাভুক্ত কোনও বিষয়ে পরিবর্তন আনতেই হয়, তা হলে নতুন আইন করা উচিত। সে ক্ষেত্রে রাজ্য মতামত দেওয়ার সুযোগ পেত। সংসদে আলোচনা হতো। সে পথে না হেঁটে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক একতরফা বিধিটুকু বদলে দিয়েছে। তাতে সংসদেও যেতে হচ্ছে না। অথচ রাজ্যকে কসাইখানার জন্য গবাদি পশুর কেনা-বেচা বন্ধে একপ্রকার বাধ্য করা হচ্ছে। সে কারণেই বিধি বাতিল হওয়া দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy