Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
E K Palaniswami

জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আপত্তি রাজ্যের, খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন

শিক্ষামন্ত্রী জানান, কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পর্কে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য। রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রকেও।

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সরব শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়— ফাইল চিত্র।

নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সরব শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়— ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ১৭:৩০
Share: Save:

তামিলনাড়ুর পথে হেঁটে এবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সরব হল পশ্চিমবঙ্গ। সোমবার দুপুরে বেহালায় রাখিবন্ধন উৎসবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের আপত্তির কথা জানিয়ে এ বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি ছয় সদস্যের কমিটিও গঠন করার কথা জানান।

পার্থ বলেন, ‘‘নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। আমরা লিখিত আকারে জানিয়েছিলাম। শিক্ষানীতি চালু করতে গেলে আগে অনেক কিছু করতে হবে। পাঁচ বছরে এই শিক্ষানীতি চালু করা সম্ভব নয়। পড়াশোনার কোনও নিয়ম নীতি পরিবর্তন হল না, আলাপ-আলোচনা হল না। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে খরচ হবে, তা বহন করবে কারা? হঠাৎ করে এই ভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা যায় না। সব প্রশ্নের সহজ উত্তর চাই। তবেই সব কিছু করা সম্ভব।’’

গত মার্চে বিধানসভার অধিবেশনেও জাতীয় শিক্ষানীতি না মানার কথা ঘোষণা করেছিলেন পার্থ। আজ তিনি জানান, নয়া শিক্ষানীতি পর্যালোচনার জন্য সৌগত রায়, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী, অভীক মজুমদার, পবিত্র সরকার এবং সুরঞ্জন দাসকে নিয়ে কমিটি গড়েছে রাজ্য। ১৫ অগস্টের মধ্যে ছ’সদস্যের এই কমিটি শিক্ষক সংগঠনগুলির মতামত নেবে। জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পর্কে কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য। রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রকেও।

মোদী সরকারের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতায় এদিন সরব হয়েছে তামিলনাড়ুও। তবে দ্রাবিড়ভূমের মূল আপত্তি ‘হিন্দি আগ্রাসনে’র বিরুদ্ধে। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই কে পলানীস্বামী আজ সকালে জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে ‘তিন ভাষা ফর্মুলা’র কথা বলা হয়েছে, তা মেনে নেওয়ার প্রশ্নই নেই। তাঁর কথায়, ‘‘তিন ভাষার এই ফর্মুলা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। প্রয়াত আন্নাদুরাই, এম জি রামচন্দ্রন এবং জয়ললিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন জানাব।’’

ষাটের দশকে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের যখন হিন্দিকে বাধ্যতামূলক সরকারি ভাষার তকমা দিতে সক্রিয় হওয়ায় তামিলনাড়ু কী ভাবে প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল, সে প্রসঙ্গও তুলেছেন পলানীস্বামী। বস্তুত, মোদী সরকারের ‘বাধ্যতামূলক হিন্দি’র প্রতিবাদে গত বছরও অশান্ত হয়েছিল তামিলনাড়ু।

চাপের মুখে কেন্দ্র সে সেময় জানিয়েছিল, স্কুল শিক্ষায় ‘তিন ভাষা নীতি’ (ইংরেজি, হিন্দি এবং স্থানীয় একটি ভাষা) বলবৎ করা হবে না। কিন্তু নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে সেই প্রতিশ্রুতি মানা হয়নি বলে তামিলনাড়ুর শাসকদল এডিএমকে সোমবার অভিযোগ তুলেছে। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর দল বিজেপির অন্যতম জোটসঙ্গী।

আরও পড়ুন: বাঘবনে রাজত্ব নেড়ি কুকুরের, ভারসাম্য নিয়ে শঙ্কায় পরিবেশবিদেরা

তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল ডিএমকে-ও ‘হিন্দি আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে আজ সরব হয়েছে। দলের সভাপতি এম কে স্ট্যালিনের অভিযোগ, দ্রাবিড় সংস্কৃতিতে আঘাত হানার উদ্দেশ্যেই বিজেপি-সহ সঙ্ঘ পরিবার হিন্দি ও সংস্কৃত চাপানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘‘দাক্ষিণাত্যের কোনও রাজনৈতিক দল যদি এই হিন্দি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চায়, আমরা তার সঙ্গী হতে রাজি।’’

আরও পড়ুন: মৃত্যু নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা, এই বিখ্যাত ভিলেনকে প্রাপ্য সম্মানই দেয়নি বলিউড​

তামিলনাড়ুর শাসক ও বিরোধী শিবিরের একটাই দাবি— রাজ্যের স্কুলগুলিতে ইংরেজি ও তামিল ছাড়া অন্য কোনও ভাষা পড়ানো চলবে না। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক তামিলনাড়ুর প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি রাধাকৃষ্ণনের উদ্দেশে টুইট-বার্তায় বলেছেন, ‘‘আবার স্পষ্ট করে বলতে চাই, কোনও রাজ্যেই নির্দিষ্ট কোনও ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য কেন্দ্রের নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy